সারাদেশের মতো রংপুরেও মুরগির বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে ডিমের দামও। এতে বিপাকে পড়েছেন নি¤œআয়ের লোকজন। গতকাল মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রংপুর নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে গত সপ্তাহের চেয়ে পাকিস্তানি মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৩৫০-৩৬০ টাকা, দেশি ৫৪০-৫৫০ টাকা এবং ব্রয়লার ২৫০-২৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, গরুর মাংস গত সপ্তাহের মতোই ৬৭০-৭০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস ৯০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পোলট্রি মুরগির ডিমের হালি ৪০-৪২ টাকা থেকে বেড়ে ৪৪-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুলাটোল আমতলা বাজারের মুরগি বিক্রেতা আমির হোসেন বলেন, সাধারণ মানুষ গরু ও ছাগলের মাংস কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। এ কারণে মুরগির ওপর চাপ বেড়েছে। মুরগির খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী খামারিরা মুরগি সরবরাহ করতে পারছেন না। ফলে মুরগির বাজারও অস্থির হয়ে উঠছে। সিটি বাজারে মুরগি কিনতে আসা ফরহাদ হোসেন বলেন, দুইদিন পরেই রমজান শুরু। সেহরিতে মাংসের স্বাদ বলতে আমাদের মতো নি¤œ ও মধ্যবিত্তদের মুরগিতেই ভরসা। কিন্তু যে হারে দাম বেড়েছে তাতে একটা ব্রয়লার বা পাকিস্তানি মুরগি কিনতেই চার থেকে পাঁচশ টাকা চলে যাচ্ছে।
সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি টমেটো গত সপ্তাহের মতো ২৫-৩০ টাকা, গাজর ২৫-৩০ টাকা, চালকুমড়া ৩০-৩৫ টাকা, শসা ২৫-৩০ টাকা, চিকন বেগুন ২০-২৫ টাকা, গোল বেগুন ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫-৪০ টাকা, পেঁপে ১৫-২০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫-৩০ টাকা, করলা ৪৫-৫০ টাকা, লেবু প্রতিহালি ২০-২৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৭০-৮০ টাকা, শুকনা মরিচ আগের মতোই ৪৫০-৫০০ টাকা, প্রতিপিস লাউ আকারভেদে দাম ৩০-৪০ টাকা, ধনেপাতা ৭০-৮০ টাকা থেকে কমে ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচকলা হালি ২৫-৩০ টাকা, প্রতিকেজি মিষ্টিকুমড়া ৩০-৩৫ টাকা, শিম ২৫-৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫-৪০ টাকা, পটল ৫৫-৬০ টাকা, বাঁধাকপি ১৫ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। আদা আগের মতোই ১৩০-১৪০ টাকা এবং রসুন ১১০-১২০ টাকা থেকে কমে ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সবধরনের শাকের আঁটি পাওয়া যাচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। সজনে ডাঁটা ১৫০-১৬০ টাকা থেকে কমে ১৩০-১৪০ টাকা, মিষ্টি আলু আগের মতোই ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারে কার্ডিনাল আলু গত সপ্তাহের মতোই ১৫-১৬ টাকা, শিল ও ঝাউ আলু ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লালবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দামে তেমন একটা হেরফের হয়নি। ২০০ টাকার সজনে এখন ১৩০-১৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে রমজান উপলক্ষে গোল বেগুন ও শসার দাম আরও বাড়তে পারে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৮৭ টাকা এবং দুই লিটার ৩৭৪ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৬০-১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, খুচরা বাজারে স্বর্ণা চাল গত সপ্তাহের মতোই ৫০-৫২ টাকা, পাইজাম ৫৪-৫৫ টাকা, বিআর২৮ ৬০-৬৫ টাকা, মিনিকেট ৭৫-৭৮ টাকা ও নাজিরশাইল ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে খোলা চিনি গত সপ্তাহের মতোই ১১৫-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্যাকেট আটা ৬৫ টাকা ও খোলা আটা ৫৮-৬০ টাকা, ছোলা বুটের দাম ৫-১০ টাকা কমে ৯০-৯৫ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৭৮-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আগের মতোই মাঝারি মসুর ডাল ১১০-১২০ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১৩০-১৪০ টাকা, মুগডাল ১৪০-১৫০ টাকা এবং বুটের ডাল ৯৫-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে রুই মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, মৃগেল ২২০-২৫০ টাকা, পাঙাশ ১৫০-১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৬০, কাতলা ৪০০-৪৫০ টাকা, বাটা ১৬০-১৮০ টাকা, শিং ৩০০-৪০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৫০-২৫০ টাকা এবং গছিমাছ ৬০০-৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।