গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের প্রথম নলেজ পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ৪ একর জমিতে ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই নলেজ পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে । ভারত সরকারের আর্থিক সহয়াতায় বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অধীনে ‘জেলা পর্যায়ে আইটি/হাই-টেক পার্ক স্থাপন (১২টি জেলায়)’ প্রকল্প গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নলেজ পার্ক বাস্তবায়ন করছে।
প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ, কে, এ, এম, ফজলুল হক জানান, প্রায় ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ৪ একর জমিতে দেশের প্রথম ‘নলেজ পার্ক’ স্থাপনের কাজ আরম্ভ হয়েছে। এটি সমাপ্ত হলে এখানে প্রায় ৩ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার লোককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ দেশের প্রথম নলেজ পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে এই পার্কের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উম্মোচন করেছেন গোপালগঞ্জ সদর আসনের এমপি শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও আইসটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বর্তমানে সারা দেশে সরাকারি উদ্যোগে ৯২টি হাই-টেক পার্ক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক/আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ১১টি পার্ক স্থাপনের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। যেখানে ব্যবসায়িক কার্যক্রম রু হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে গঠিত হয়েছে আরো ১৭টি পার্ক। ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটির উচ্চপ্রযুক্তির ৩৩টি বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হচ্ছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ কিউ এম মাহবুব বলেন, এই পার্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা প্রদান করবে।বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইটি শিল্পের মধ্যে কার্যকর সংযোগ স্থাপন করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ও শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবনী কার্যক্রমের সুযোগ সৃষ্টি হবে।ভৌত অবকাঠামো ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি সৃষ্টির উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই পার্ক থেকে আমার শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এই পার্ক স্থাপন করা হলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে এখানকার শিক্ষার্থী ও গোপালগঞ্জবাসী। এখানে থাকছে স্টার্ট-আপ ফ্লোর ফ্যাসিলিটি। যেখানে প্লাগ এন্ড প্লে সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। ছাত্র-শিক্ষদের জন্য উন্নত গবেষণার সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। থাকবে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশেষায়িত ল্যাব।
মন্ত্রী আরো বলেন, একাডেমিক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল গবেষণার জন্য পৃথকভাবে ইনক্লুসিভ রিসার্চ ফ্যাসিলিটি স্থাপনের মাধ্যমে এখানে এমন একটি ইনোভেশন কালচার সৃষ্টি করা হবে। যেখানে সরকার এবং একাডেমিয়ার সাথে ইন্ডাস্ট্রির ইন্টিগ্রেশনের মাধ্যমে লাইফ-লং লার্নিং শিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। ন্যাশনাল ও গ্লোবাল স্টেকহোল্ডার সাথে এই নলেজ পার্কের স্টার্ট-আপ এবং স্টেক হোল্ডারদের কোলাবোরেশন সৃষ্টি করা হবে। ইন্ডাস্ট্রির সাথে কোলাবোরেশন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা হবে। যা এই এলাকার ইকোনোমির পুরো ইকোসিস্টেম পরিবর্তনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
গোপালগঞ্জ সদর আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, গোপালগঞ্জে ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘নলেজ পার্ক’ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এই নলেজ পার্ক গোপালগঞ্জের তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের ঠিকানা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, গোপালগঞ্জবাসীর উন্নয়নে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এই নলেজ পার্কের মাধ্যমে এখানকার তরুণ-তরুণীদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১ হাজার তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এখানে ৩ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে গোপালগঞ্জের আর্থ-সামাজিক অবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে।