জেলায় বাণিজ্যিক ভাবে সবজি আবাদ করেছেন কৃষকরা। পতিত জমিতে লাউ, ঢেড়শ, বরবটি, টমেটো, শশা, বেগুন, পেপে, করলা, কচুশাক, পাটশাক, পুইশাক, কলমি শাকসহ নানা প্রকার সবজি চাষ করছেন তারা। বর্তমানে বাজারে চলছে নানা প্রজাতির সবজি বিক্রি। তবে এখানকার সবজির গুনগতমান ভালো হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলাসহ যাচ্ছে সারা দেশে। সেই সঙ্গে সবজি বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, বর্তমানে তারা পাইকারিতে প্রতি কেজি বেগুন ৭০-৭৫, শসা ৪০-৪৫- করলা ৫৫-৬০ টাকা, বরবটি ৬০-৬৫ পেঁপে ২৫-৩০, গাজর ৪০-৪৫ মূলা ৩০-৩৫, কাঁচা মরিচ ৬০-৬৫ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। তাছাড়া লাল শাক ১২, পাট শাক ১০, প্রতি হালি লেবু ৪৫-৫০ বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গার পাইকার এসে তাদের কাছ থেকে ক্রয় করছেন। তাছাড়া বাজারে ও তারা বিক্রি করছেন। অনুকূল আবহাওয়া আর যথাযথ পরিচর্যার কারণেই সবজিতে এ সাফল্য এসেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
সরেজমিনে জেলার নাসিরনগর, বিজয়নগর, কসবা ও আখাউড়া গিয়ে দেখা যায় সবজি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এসব এলাকার বেশি ভাগ কৃষক বার মাসই সবজি নানা প্রকারের সবজি আবাদ করছেন। কেউ নিজেদের পতিত জমিতে, কেউ বাড়ির আঙিনায় আবার কেউ করছেন বাড়ির ছাদে। ফলন বৃদ্ধিতে কৃষি অফিসের পরামর্শে নিচ্ছেন তারা।
কৃষক মোরাদ মিয়া জানান, বাড়ি সংলগ্ন প্রায় ৩৫ শতক পতিত জমিতে শসা ও বেগুন টমেটো চাষ করেন। এ চাষে জমি, মাচা তৈরি চারাসহ অন্যান্য খরচ হয় তার প্রায় ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে শসা ৩০ টাকা, টমেটো ২৫ ও বেগুন ৭০-৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এই পর্যন্ত শসা ৩৫ হাজার টাকার ওপর বিক্রি করেছেন তিনি। এক দিন পর পর দেড় মণের ওপর করে বেগুন বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি। কৃষক আলাল উদ্দিন জানান, ৩০ শতক জায়গায় বেগুন ও কাঁচা মরিচ আবাদ করেন। গত ২ সপ্তাহ ধরে চলছে তার বিক্রি। বাজারের যে অবস্থা এভাবে বিক্রি করতে পারলে তিনি দ্বিগুন লাভবান হবেন।
লিটন মিয়া জানান, প্রায় ৪০ শতক জায়গায় করলা, লাল শাক, শসা, বেগুনসহ নানা প্রকার সবজি চাষ করেন। এ চাষে জমি, মাচা তৈরি চারাসহ অন্যান্য খরচ হয় তার প্রায় ২৫ হাজার টাকা। বর্তমানে সবজি বিক্রি শুরু হয়েছে। শসা ৩০ টাকা ও করলা ৬০-৬৫ টাকা কেজি বিক্রি করছেন।
কৃষক মো.আবু হানিফ মিয়া জানান, কোনো প্রকার কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে দেশীয় পদ্ধতিতে লাউ, করলা, বেগুন, টমেটো শসা ও লাল শাক চাষ করেছেন। জমি তৈরি করে বীজ লাগানোর এক সপ্তাহের মধ্যেই চারা গঁজিয়ে উঠে। এরপর পরিচর্যা, পানি, সার ও মাচা তৈরিসহ অন্যান্য কাজ করা হয়। গত প্রায় ২৫ দিন বিক্রি শুরু হলে ও গত সপ্তাহ থেকে ভালো দর পাচ্ছেন। দেশীয় পদ্ধতিতে চাষ করায় নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে ভালো টাকা আয় হবে বলে তিনি আশা করছেন।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুশান্ত সাহা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জুড়ে বার মাসই নানা প্রকার সবজি আবাদ হচ্ছে। ফলন বৃদ্ধিতে সব সময় স্থানীয় কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়। স্থানীয় বাজারে দাম ভালো থাকায় সবজি চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে বভিন্নি ধরনের সবজি চাষ।