রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:০৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
দেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণে বিএনপির নেতা কর্মীদের কাজ করতে হবে বনশ্রী আফতাব নগর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি বাবলু পন্ডিত, সম্পাদক জহুরুল ইসলাম ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের ১৫তম সভা মহানগরী জোন আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মাইলস্টোন কলেজের কৃতিত্ব স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আজ ৮৯তম জন্মবার্ষিকী নগরকান্দায় দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ওসি, সাংবাদিকসহ আহত- ৩০ কালীগঞ্জে নানা সংকটে গ্রাম আদালত সুফল পেতে প্রয়োজন কার্যকরী উদ্যোগ কটিয়াদীতে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন, ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ মুন্সীগঞ্জে লুন্ঠিত মালামালসহ ৭ ডাকাত গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে বর্ণিল পিঠা উৎসব

মানবিক ‘কালু কসাই’ মাংস বিক্রি করছেন ৫৮০ টাকায়

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩

ফজরের পরই বেরিয়ে পড়েন নজরুল ইসলাম। এলাকায় ‘কালু কসাই’ বলেই বেশি পরিচিত। বাড়ির পাশেই তিন রাস্তার মোড়। সেখানেই তার মাংসের দোকান। স্থানীয় বাজার থেকে গরু কিনে এখানে জবাই করে মাংস বিক্রি করেন তিনি। দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতির কাছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ তাল মেলাতে পারছে না। কোরবানির ঈদ ছাড়া অনেকেই মাংস কিনে খেতে পরেন না একদিনও। এমন মানুষদের জন্য কালু কসাই হৃদয়বান হয়ে হাজির হয়েছেন। বাজারে গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও তিনি বিক্রি করছেন ৫৮০ টাকাতে। রোজার শুরুতে তিনি ৫৫০ টাকায় মাংস বিক্রি করলেও স্থানীয় একটি বাজার কমিটির চাপে ৩০ টাকা দাম বৃদ্ধি করতে বাধ্য হন।
কালু কসাই বলেন, বাজারে একটি গরু জবাই করে বিক্রি করলে খাজনা দিতে হয় ৪ হাজার টাকা। দিনে ৪টা গরু জবাই করলে ১৬ হাজার টাকা কমিটিকে দিতে হয়। এই খাজনার পরিমাণ অতিরঞ্জিত। ফলে আমি বাজার থেকে বের হয়ে বাড়ির পাশে ৩ রাস্তার মোড়ে মাংস বিক্রি করা শুরু করেছি। বাজার কমিটিকে যে টাকা দিতে হতো সেই টাকা সাধারণ মানুষের কাছে বেশি দামে মাংস বিক্রি করে তুলতে হতো। এখন সেই টাকা দিতে হয় না। ফলে আমি কমদামে গরিব মানুষদের কাছে মাংস দিতে পারছি। শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে গাবতলী উপজেলার কদমতলী ৩ রাস্তার মোড়। সেখানেই কালু কসাইয়ের মাংসের দোকান। সকালে সরজমিন তার দোকানে হাজির হলে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। ইউটিউব ফেসবুক দুনিয়ায় কালু কসাইয়ের কমদামে মাংস বিক্রির খবর ছড়িয়ে পড়ায় বেশ দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ মাংস কিনতে আসছেন তার কাছে। সকাল ৬টা থেকে মাংস বিক্রি শুরু করেন তিনি। চলে দুপুরের পর পর্যন্ত।
শুক্রবার ১০টির বেশি এবং অন্য দিনগুলোতে ৫-৬টি করে গরু জবাই হয় তার দোকানে। লোকজন অপেক্ষা করছেন ব্যাগ হাতে। সিরিয়াল অনুযায়ী একের পর এক মাংস পাচ্ছেন। ভিড় বেশি থাকার কারণে বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। অপেক্ষার পর মাংস হাতে পেয়ে খুশির অনুভূতি ব্যক্ত করেন ক্রেতারা। কথা হয় বগুড়া সদরের সাবগ্রাম এলাকার শাহালম হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, এখানে বাজারের চেয়ে কেজিতে ১২০ টাকা কমে মাংস কিনলাম। বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতির বিপরীতে কালু কসাই দাম কমিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তিনি বেশি দামে বিক্রি করতে পারতেন কিন্তু নিম্ন আয়ের মানুষদের দিকে তাকিয়ে দাম কমিয়েছেন। মাংস বিক্রির জন্য কালু কসাইয়ের দোকানে ৫ জন কর্মচারী কাজ করছেন। বড় ছেলে হোসাইন আল মাহমুদও বাবার দোকানে সময় দিচ্ছেন। মাহমুদ কাহালু সরকারি কলেজে অনার্স পড়ছেন। তিনি মানবজমিনকে জানান, অনেক মানুষ আছে যারা দাম বেশি হওয়ায় গরুর মাংস কিনতে পারেন না। আবার অল্প মাংস বিক্রিও করেন না বিক্রেতারা। সেখানে আমরা একশ’ গ্রাম থেকে শুরু করে চাহিদা অনুয়ায়ী মাংস বিক্রি করে থাকি। আমাদের দোকানে এমনি মানুষ আসেন যারা টাকার অভাবে এক কেজি মাংস কিনতে পারেন না। আড়াইশ’ গ্রাম মাংস কিনে নিয়ে যায়। আমাদের দোকানের বেশির ভাগ গ্রাহক নিম্ন আয়ের মানুষ। আমরা নির্দ্বিধায় সবার কাছে যেকোনো পরিমাণ মাংস বিক্রি করি। মাহমুদ আরও জানান, বাজারে গরুর দাম অনুযায়ী ৬০০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি করলেও লাভ হবে। বেশি মুনাফা লাভের আশায় মাংস ব্যবসায়ীরা ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com