সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ অপরাহ্ন

ঈদে ২৭ লাখ ল যাত্রীর চাপ পড়বে সদরঘাটে

সাদেক মাহমুদ পাভেল:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩

পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় নৌপথে বৃহত্তর বরিশালমুখী যাত্রীসংখ্যা কমলেও আসন্ন ঈদযাত্রায় সদরঘাট ল টার্মিনালে এবারও অস্বাভাবিক চাপ পড়বে। ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোর প্রায় ৩০ লাখ মানুষ নৌপথে উপকূলীয় এলাকায় যাবে। এর মধ্যে দৈনিক গড়ে ৩ লাখ করে ৯ দিনে অন্তত ২৭ লাখ মানুষ সদরঘাট হয়ে যাবে। নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির ঈদ-পূর্ব পর্যবেক্ষণ ও জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সংগঠনের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতি ঈদুল ফিতরে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে যায়। তাদের মধ্যে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার (২৫ শতাংশ) যায় নৌপথে। এর প্রায় শতভাগই উপকূলীয় জেলা বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, চাঁদপুর, শরিয়তপুর ও মাদারীপুরের যাত্রী।
কমিটি জানায়, গত জুনে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর চাঁদপুর ছাড়া অন্য জেলাগুলোর নৌযাত্রীর হার প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে, যা মোট ঈদযাত্রীর ৫ শতাংশ। এ হিসাবে এবার ঈদে নৌপথে যাবে ৩০ লাখ (মোট যাত্রীর ২০ শতাংশ) মানুষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯ এপ্রিল থেকে সরকারি ছুটি শুরু হবে। তবে ঘরমুখো জনস্রোত কার্যত শুরু হবে এর আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস ১৩ এপ্রিল থেকে। ১৩ থেকে ২১ এপ্রিল (ঈদের আগের দিন) পর্যন্ত ৯ দিনে ৩০ লাখ মানুষ নৌপথে বাড়ি যাবে। এর মধ্যে সদরঘাট হয়ে যাবে অন্তত ২৭ লাখ মানুষ। এ হিসাবে প্রতিদিন ৩ লাখ যাত্রী সদরঘাট টার্মিনাল হয়ে গন্তব্যে যাবে। বাকি ৩ লাখ মানুষ যাবে নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর হয়ে।
নৌযান স্বল্পতার কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, কাগজে-কলমে ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের নৌপথ ৪১টি। তবে তীব্র নাব্যসংকট ও যাত্রী স্বল্পতার কারণে বড় আয়তনের ও বিলাসবহুল ল চলাচল না করায় অন্তত ১৫টি নৌপথ দৃশ্যত এরই মধ্যে পরিত্যক্ত। বাকি ২৬টি নৌপথে প্রায় ৭০টি ল নিয়মিত আসা-যাওয়া করে। ঈদের আগে লে র সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১৮০ হবে। এর মধ্যে প্রতিদিন ৯০টি নৌযান সদরঘাট থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে এবং ৯০টি বিভিন্ন স্থান থেকে সদরঘাটে আসবে। নাগরিক সংগঠনটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রতিদিন ৯০ লে ৩ লাখ যাত্রী বহন করা হলে একটি লে গড়ে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার (৩,৩৩৩.৩৩ জন) যাত্রী উঠবে। কিন্তু কোনো লে রই ২ হাজারের বেশি যাত্রীধারণক্ষমতা নেই। অনেক লে র ধারণক্ষমতা এক হাজারেরও নিচে। এছাড়া ঈদের আগের তিনদিন ঘরমুখো জনস্রোত দেড়গুণ বেড়ে যাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চাপ সামাল দিতে অনেক লে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ যাত্রী বহন করা হয়ে থাকে। ফলে ডেকে অতিরিক্ত যাত্রীর পাশাপাশি ছাদেও যাত্রী তোলা হবে। এছাড়া এবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে কালবৈশাখী মৌসুমে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সাগরে লঘুচাপের আশঙ্কার কথাও বলা হয়েছে। সবমিলিয়ে নৌযাত্রায় বিশৃঙ্খলা ও জনদুর্ভোগের পাশাপাশি অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে। জাতীয় কমিটির প্রতিবেদনে বিড়ম্বনামুক্ত নিরাপদ ঈদযাত্রার স্বার্থে সরকারি উদ্যোগে বিকল্প ব্যবস্থায় নৌযানের সংখ্যা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া টার্মিনালসহ নৌপথে সর্বোচ্চ নজরদারি ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com