ঈদের ছুটিতে ঢাকায় ফাঁকা বাসায় টাকা-স্বর্ণালঙ্কার না রেখে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
তিনি বলেছেন, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার সময় ঢাকায় ফাঁকা বাসায় অনেকে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকাপয়সা রেখে যান। দেখা যায়, এসব বিষয়ে কাজের লোকসহ অনেকে জানে। এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। বাড়ি একেবারে ফাঁকা রেখে না যাওয়াই উচিত। যদি যান তাহলে গয়না ও টাকাপয়সা নিকট আত্মীয়স্বজন যারা ঢাকায় থাকবেন, তাদের কাছে রেখে যান অথবা সঙ্গে নিয়ে যান। এই লম্বা ছুটিতে এসব মূল্যবান সামগ্রী নিজের ফাঁকা বাসায় রেখে যাবে না।’ গতকাল বুধবার দুপুরে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ঘরে ফেরা মানুষের ঈদযাত্রা পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ অনুরোধ জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ঢাকা ফাঁকা হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন হবে, সেটার জন্য নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। রাতের বেলা ও দিনের বেলায় নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। ঢাকা ছাড়াও বড় বড় শহরেও আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। আমরা দেখেছি ফাঁকা ঢাকায় অনেকে বাসা-বাড়ি পরিবর্তন ও ফার্নিচার পরিবর্তন করেন। এমন পরিবর্তন কেউ করতে গেলে নিরাপত্তা প্রহরীরা যেন তাদের প্রশ্ন করেন। পুলিশসহ আমরা সবাই সচেতন থাকলে ফাঁকা ঢাকাকে আমরা নিরাপত্তার চাঁদরে ডেকে দিতে পারব।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, প্রতিবছর আমরা ঈদের সময় নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে থাকি। রমজানের সময় সারা মাসজুড়ে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকে। তার পাশাপাশি মার্কেটগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করি। এখন মানুষ আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে যাবেন, তাদের নিরাপত্তা, ট্রাফিক ব্যবস্থাসহ পর্যটন স্থানগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থার কথা বিবেচনা করে আমরা নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রণয়ন করেছি। পুলিশের সব ইউনিট দায়িত্ব পালনে এ সময় নিয়োজিত থাকবে। আমাদের স্পেশাল টিমসহ পুলিশের সব ইউনিট ঈদে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়োজিত থাকবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় সাব-কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাব-কন্ট্রোল রুম করে আমরা নিরাপত্তা জোরদার করেছি। যাত্রীসাধারণ যেন দ্রুত নিরাপদে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারেন, আমরা আমাদের সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। অন্যান্য বছর সারা দিন যাত্রীদের রাস্তায় বসে থাকতে হয়েছে। সরকারের উদ্যোগে পদ্মা সেতু চালু হয়েছি। আমরা জানি উত্তরবঙ্গের রাস্তারও অনেক উন্নতি হয়েছে। আগে চন্দ্রার মোড়ে ৮-১০-২০ ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। কিন্তু রাস্তার উন্নয়ন হওয়ায় যাতায়াত এখন অনেক সহজ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা পরিবহন কাউন্টারগুলোতে কথা বলেছি, এখনো তেমন যাত্রীর চাপ পড়েনি। সেহরির পর যাত্রীর চাপ বাড়বে। যাত্রীরা যেন নিরাপদের ভ্রমণ করে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারেন, সে জন্য গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একসঙ্গে কাজ করছে। ঈদের জামাতের মাঠের নিরাপত্তাব্যবস্থা রেখেছি।
এ সময় যাত্রীদের অনুরোধ জানিয়ে আইজিপি বলেন, আপনারা ভ্রমণকালে অপরিচিত কোনো মানুষের দেয়া কিছু খাবেন না। এগুলো খেলেই অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা আছে। আমরা আশা করছি, সাধারণ মানুষ কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়া ঈদযাত্রা করতে পারবেন।
সম্প্রতি মার্কেটে আগুন লাগার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। প্রতিটি ঘটনা আমরা নিবিড়ভাবে তদন্ত করছি। এর মধ্যে নাশকতার কোনো গন্ধ আছে কিনা, থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঢাকা ও ঢাকার বাহিরের মার্কেটগুলোর কমিটির সঙ্গে পুলিশ আলোচনা করেছে। তাদের বিভিন্নমুখী নিরাপত্তাব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অপর আরেক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি জেলা পুলিশসহ অন্যান্য পুলিশের ইউনিট কাজ করছে। গাড়ি বেপরোয়া চালালে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবেন তারাও ব্যবস্থা নেবেন। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।