ইদুর মারার বিষাক্ত ট্যাবলেট খাইয়ে নিজ শিশুকন্যাকে হত্যার অপরাধে অভিযুক্ত মা আছমা আক্তারকে ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদন্ডের সাজা দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালত। আজ দুপুরে উক্ত আদালতের বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামীর উপস্থিতিতে উক্ত রায় ঘোষণা করেন। প্রদত্ত রায়ে মৃত্যুদন্ডের সাজার পাশাপাশি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর পিপি অ্যাডভোকেট এম এ আফজাল রায় ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের পূর্বচরপাড়া গ্রামে পারিবারিক কলহের জের ধরে আছমা আক্তার তৃতীয় শ্রেণীতে পড়–য়া নিজ কন্যা সন্তান শিউলি আক্তার মায়াকে জোর পূর্বক ইদুর মারার বিষাক্ত ট্যাবলেট খাইয়ে ও গলায় ইয়ারফেনের তাঁর পেচিয়ে হত্যা করে। মামলার বিবরণে জানা যায়, সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের পূর্বচরপাড়া গ্রামের সুরুজ মিয়ার কন্যা আছমা আক্তারের প্রথম স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান ছিল। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে গাজীপুর জেলার এক যুবকের সাথে আছমা আক্তারের দ্বিতীয় বিবাহ হয়। কিন্তু দ্বিতীয় স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় সে কিশোরগঞ্জে পিতৃলয়ে বসবাস করে আসছিল। ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারী আছমা আক্তার তার পিতা-মাতাসহ বাড়িতে থাকা অন্যান্য স্বজনদের সাথে কলহে লিপ্ত হয়। কলহের এক পর্যায়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া নিজ কন্যা সন্তান শিউলি আক্তার মায়াকে জোর পূর্বক ১টি ইদুর মারার বিষাক্ত ট্যাবলেট খেতে বাধ্য করে। অপর আরেকটি বিষাক্ত ট্যাবলেট খাওয়ানোর সময় স্বজনরা বাধা দিলে সে বাধা উপক্ষো করে শিউলির গলায় ইয়ার ফোনের তাঁর পেচিয়ে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করলে গুরুতর আহত হয়। আশংকাজনক অবস্থায় শিউলিকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত শিউলি আক্তার মায়ার নানা সুরুজ মিয়া বাদী হয়ে আছমা আক্তারকে একমাত্র আসামী করে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট আছমাকে একমাত্র আসামি হিসেবে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।