আর এক বছর পরই ভারতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে দেশটিতে নতুন করে গম ও অন্যান্য প্রধান খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধি হোক, তা চাইছে না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার। এ জন্য সরকার গম পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখা এবং মজুতের সীমা বেঁধে দেওয়াসহ সব ধরনের বিকল্প খতিয়ে দেখছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার ভারতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে গমের খুচরা দাম বাড়ে ২৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সেই হার মার্চ মাসে কমে প্রায় ২০ শতাংশ হয়। গমের মূল্যস্ফীতি ২০২২ সালের জুন মাস থেকে দুই অঙ্কের ঘরে রয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের গুদাম থেকে গম বাজারে ছাড়ে। পাশাপাশি বাজারেও নতুন ফসল আসে। এই দুই কারণে বাজারে গমের দাম খানিকটা কমেছে। দেশটির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘বাজারে দাম যাতে স্থিতিশীল থাকে, সেটি আমরা নিশ্চিত করব। এ ছাড়া চলতি মৌসুমে গম সংগ্রহ অভিযান শেষ হওয়ার পরও এই শস্য রপ্তানিতে থাকা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার কোনো সুযোগ নেই।’
খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে ভারত গত বছরের মে মাসে গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। শুধু সরকারি থেকে সরকার ভিত্তিতে কিছু গত রপ্তানির অনুমতি রয়েছে। সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় খাদ্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী পিয়ুশ গয়াল বলেছেন, ‘ভারতীয় বাজারের জন্য সবার আগে পর্যাপ্ত গম সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। গম সংগ্রহ অভিযান শেষ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং গম রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখা গুরুত্বপূর্ণ।’ ভারতের খাদ্য করপোরেশন (এফসিআই) ও অন্যান্য সরকারি সংস্থা ন্যূনতম মূল্য সহায়তা কর্মসূচির (এমএসপি) আওতায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২৪০ লাখ টন গম সংগ্রহ করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার চলতি মৌসুমে গমের সংগ্রহ ৩০০ লাখ টন পর্যন্ত নিতে পারবে বলে আশা করছে। এটি বাস্তবায়ন করা গেলে গমের পর্যাপ্ত মজুত রাখা ছাড়াও খোলাবাজারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিক্রি করা সম্ভব হবে। ১ মে পর্যন্ত ভারতের খাদ্য করপোরেশনের কাছে ২৮৫ লাখ টন গমের মজুত রয়েছে। সরকারের জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্প খাতে বছরে ১৮৪ লাখ টন গম প্রয়োজন হয়। ভোক্তাদের জন্য বাজারে খাদ্যশস্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে ভারতের খাদ্য মন্ত্রণালয় মজুত থেকে উদ্বৃত্ত গম বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী জুলাই মাস থেকে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে ‘খোলাবাজারে বিক্রয় প্রকল্পের’ মাধ্যমে এ গম সরবরাহ করা হবে।