কুড়িগ্রামে প্রাচীন ঐতিহ্যে বাহি ইন্দারা/কুয়া গুলো এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।একটা সময় ছিল মানুষের সুপেয় পানি পান ও ব্যবহারের জন্য একমাত্র উৎস ছিল এই ইন্দারা/কুয়া। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাধারন মানুয় জন বালতি ও কলসি কাকে নিয়ে ইন্দারা/কুয়ার পানি তুলে ঘরে নিয়ে যেত। গ্রামের মানুষজন হাল গৃহস্ত কাজ শেষ করে এসে একসঙ্গে কুয়ার পানি দিয়ে গোসল করত।এখন সেই দৃশ্য আর চোখে পড়েনা। এখন সময়ের সাথে সাথে সেই দৃশ্যপট আমাদের কাছে অতিত।প্রায় ৮০ থেকে ১শ বছর পূর্বে গ্রামে-গঞ্জে সুপেয় পানি পান করার জন্য এই ইন্দারা/কুয়া তৈরি করা হয়েছিল।যা দিয়ে মানুষের পানির চাহিদা পুরন করা হতো। এখন সংস্কারের অভাবে প্রচীন আমলের ঐতিহ্যের ইন্দারা/কুয়া গুলো এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে কুড়িগ্রামের পাড়া মহল্লায় এখনও কালের স্বাক্ষী হয়ে দারিয়ে আছে ঐতিহ্যের এই ইন্দারা/কুয়া গুলো। আঞ্চলিক ভাষায় এই কুয়া গুলোকে বলা হয় ইন্দারা। এর প্রকৃত নাম হলো ইন্দ্রাগার। সংস্কৃত শব্দটি ইন্দ্র ও আগার থেকে এসেছে।ইন্দ্র অর্থ বৃহৎ আগার অর্থ কূপ, অর্থাৎ ইন্দ্রাগার শব্দের অর্থ হলো বৃহৎ কূপ। আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন হারিয়ে যাচ্ছে এই ঐতিহ্যের কুয়া বা ইন্দারা। ডিজিটাল যুগে মানুষ শিক্ষিত ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে নলকুপ বা মেশিন বসিয়ে মাটির গভীর থেকে পানি উত্তোলন করে এখন চাহিদা মেটাচ্ছেন। সরজমিন ঘুরে কুড়িগ্রাম সদরের কয়েকটি এলাকা ঘুরে কয়েকটি ইন্দারার বা কুয়ার সন্ধান পাওযা গেছে। তার মধ্যে কুড়িগ্রাম মাঝি পাড়ায় ২টি, হোসেন খাঁ পারা ফকরিয়া মসজিদ সংলগ্ন ১টি, খাঁন পাড়ায় ১টি, হরিকেশ কানি পাড়ায় ১টি, হরিকেশ মধ্যপাড়ায় ২টি, সবুজ পাড়ায় ১টি, পুরাতন রেল ষ্টেশনের পূর্বদিকে ১টি ও জাহাজ ঘর মোরে একটি চোখে পড়ে। এরমধ্যে শুধু সবুজ পাড়া এলাকার কুয়াটি ভালো আছে এবং এখনও পানি খাওয়া সহ বাড়ির সকল কাজে ব্যবহার হচ্ছে। গুয়াতি পাড়ার প্রবীণ মোঃ আব্দুস সামাদ জানান, হোসেন খাঁ পাড়ার এই ইন্দ্রারাটির বয়স প্রায় ১০০ বছর। ইন্দারাটি ১৯২৪ সালে নির্মাণ করা হয়েছে। সংস্কারের অভাবে এটি নষ্ট হয়েছে। আগে এই ইন্দারার পানি গ্রামের সবাই ব্যবহার করত। এরকম অনেক ইন্দারা কুড়িগ্রামে অনেক জায়গায় নষ্ট হয়ে মাটির সাথে বিলীন হয়েছে। পুরাতন পোষ্ট অফিস পাড়ার তপন কবিরাজ ও সুলতান আহমেদ বলেন,জাহাজঘর মোড়ের ইন্দারাটি অনেক পুরাতন। বর্তমানে কুয়াটি উপরিভাগ ভালো আছে। ভিতরটা একটু সংস্কার করলেই পুনরায় ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া এই কুয়ায় পানি থাকলে মানুষের ব্যবহারের পাশাপাশি যেকোন দুর্ঘটনা জনিত আগুন নেভানো কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে।