ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনো শক্তিই ভাঙতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গত মঙ্গলবার (৯ মে) পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল সীমান্তে অনুষ্ঠিত ল্যান্ড পোর্ট অথোরিটি অব ইন্ডিয়া ও বিএসএফের একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অমিত শাহ বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। যুগ যুগ ধরে আমরা দুই দেশ একই সংস্কৃতি বহন করে চলেছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা ইতিহাসের এক সোনালি অধ্যায়। আমাদের সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিল্পকলা, আমাদের ভাষা এবং আমাদের পরম্পরার ক্ষেত্রে এক সাদৃশ্য রয়েছে। তাই বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক কেউ ছিন্ন করতে পারবে না।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিএসএফের অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিএসএফের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো। এ কারণে দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং উষ্ণতার সম্পর্ক আজও বিরাজমান। আজকের এই স্থান থেকে সেই সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরো নতুন গতি আসবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্তে পেট্রাপোল এমন একটা স্থলবন্দর, যেখানে শুধু ব্যবসায়ীক গতি এসেছে তা নয়। এর সঙ্গে সঙ্গে দুই দেশের মৈত্রীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই স্থলবন্দর। এখান থেকে ৬০০ থেকে ৭০০ ট্রাক প্রতিদিন ব্যবসায়িকভাবে দুই দেশে যাতায়াত করে। এখানের বড় সমস্যা ছিল শ্লথ গতিতে কাজ হওয়া। তবে এখন দ্বিতীয় কার্গো গেট তৈরি হলে এই সমস্যা খুব শিগগিরই সমাধান হবে।
তার অভিমত, ২০১৬-১৭ সালে এই বন্দর দিয়ে ১৮ হাজার কোটি রুপির ব্যবসা করে ভারত। আজ তা ৩০ হাজার কোটি রুপি পার করে গেছে। এতে প্রমাণ হয়, ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে স্থলবন্দর অথোরিটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।
অমিত শাহ এসময় তথ্য দিয়ে বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই স্থলবন্দর দিয়ে ২০ লাখ যাত্রী আসা-যাওয়া করেছেন। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে পেট্রাপোল স্থলবন্দরে প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল উদ্বোধনের ফলে এখান দিয়েই প্রতিদিন ১১ হাজার যাত্রী আসা-যাওয়ার সুবিধা হয়েছে। যা এক স্মরণীয় অধ্যায়।
তিনি বলেন, আমাদের সীমান্ত সুরক্ষানীতি অত্যন্ত স্পষ্ট। সীমান্তবর্তী এলাকায় মজবুত পরিকাঠামো চাই আমরা। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে দেশের অন্যান্য গ্রামের মতোই উন্নয়নমূলক ব্যবস্থা থাকুক, যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠুক। ১৫ হাজার কিলোমিটার ভারতের ভূমির সীমার মধ্যে লাগোয়া ৭টা প্রতিবেশি দেশ। প্রত্যেক দেশের সঙ্গে আমাদের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক এবং ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরো মজবুত হোক। এজন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শাসনে আমরা নতুন নীতি বানিয়েছি। এই নীতির সার-সংক্ষেপ করে যদি বলি, তা হলো- বর্ডার ইনফ্রাস্ট্রাকচারের উন্নতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা, আন্তর্জাতিক ব্যবসার মান বৃদ্ধি করা, পিপল টু পিপল কানেক্টিভিটি। এর সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলোর উন্নয়ন।