হুট করেই বাজারে বেড়েছে কাঁচা শাক-সবজির দাম। কাঁচাবাজারের পাশাপাশি, ডিম, চিনি, বিভিন্ন রকম মসলা ও তেলের দামেও যেন আগুন লেগেছে। বাজারের অবস্থা এমন হয়ে দাড়িয়েছে দিনে রাতে পরিবর্তন হচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম। এর প্রভাব পড়ছে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের উপর। নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীন বৃদ্ধির কারণে মধ্যবিত্ত ও নি¤œ আয়ের মানুষের উপর মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে। বাজার করতে আসা দিনমজুর সালাম বলেন, সারা দিনে কাজ করে পাই ৫০০ টাকা। বাড়িতে সদস্য ৬ জন, এই টাকা দিয়ে চাল কেনার পর কাঁচাবাজার কিনব না, তেল কিনব না, লবন কিনব বুঝতে পারছি না। সকালে বাজারে এসে যে দামে বাজার নিয়ে যায় সন্ধ্যায় আসলে দেখি আবার দাম বেড়ে গেছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ব্যবসায়ীরা দাম চাইলে পাই, মরণতো আমাদের মত মানুষের। গোদাগাড়ী উপজেলা বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন সবজির প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। কাঁচা পণ্যের আমদানী না থাকায় প্রতিনিয়ত দাম বাড়ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি পেঁয়াজের মূল্য ছিলো ৫০ টাকা, চলতি সপ্তাহে প্রতিকেজি ৭০ টাকা, গত সপ্তাহে প্রতিকেজি বেগুনের মূল্য ছিলো ৫০ টাকা , চলতি সপ্তাহে ৮০টাকা। গত সপ্তাহে শশার মূল্য ছিলো ৪০ টাকা , চলতি সপ্তাহে ৭০ টাকা, গত সপ্তাহে আদার মূল্য ছিলো প্রতিকেজি ১০০ টাকা, চলতি সপ্তাহে ২০০ টাকা, গত সপ্তাহে রসুনের মূল্য ছিলো প্রতিকেজি ১৬০টাকা, চলতি সপ্তাহে ২০০ টাকা, গত সপ্তাহে টমেটো ছিলো ৩০ টাকা, চলতি সপ্তাহে ৬০ টাকা, গত সপ্তাহে পুইশাক ছিল ১৫ টাকা চলতি সপ্তাহে ৩০ টাকা,পটল ছিলো ৩৫টাকা, চলতি সপ্তাহে ৭০ টাকা, গত সপ্তাহে পেঁেপ ছিলো ৩০ টাকা, চলতি সপ্তাহে ৫০টাকা, গত সপ্তাহে কলা ছিলো ২০টাকা হালি, চলতি সপ্তাহে ৩০টাকা হালি, আলু গত সপ্তাহে প্রতিকেজি ছিলো ৩৫ টাকা, চলতি সপ্তাহে ৫০টাকা, গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচ ছিলো ১০০ টাকা, চলতি সপ্তাহে ১৫০ টাকা। চালকুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, করলা প্রতি কেজী ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, আকারভেদে লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা। এদিকে চিনি গত সপ্তাহে ছিলো ১২০ টাকা, চলতি সপ্তাহে ১৩৫ টাকা, পামওয়েল তেল ছিলো প্রতি লিটার ১৩৮ টাকা, বর্তমানে ১৫০টাকা, সিটি তেল প্রতিলিটার ছিলো ১৫০ টাকা, বর্তমানে ১৭০ টাকা, প্রতি লিটারে বোতল ছিলো ১৮৭ টাকা, বর্তমানে ২০৫ টাকা, জিরা প্রতিকেজি ছিলো ৮০০ টাকা, চলতি সপ্তাহে ১০০০ টাকা।এভাবেই তরতর করে দাম বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রাদির। তবে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখে গেছে এক বাজারের সাথে আরেক বাজার বা এক দোকানের সাথে আরেক দোকানের একই জিনিসের দামের মিল পাওয়া যায়নি। দেখা গেছে কেজী প্রতি ২ টাকা থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত কম বেশী দামে বিক্রি হচ্ছে। মুদি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চাল, ডাল, আটা-ময়দা, সয়াবিনের মতো নিত্যপণ্যের দাম কমেনি। উচ্চ মূল্য স্থিতিশীল আছে। তবে চিনির বাজার নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছে না। বাজারে চিনির সরবরাহ কম, বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকায়। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে থেকে ৩০০ টাকায়। মুরগির মতো বেড়েছে ডিমের দামও। বাজারভেদে ফার্মের লাল রঙের ডিমের ডজন ১২৮ থেকে ১৩২ টাকা এবং সাদা রঙের ডিম ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এই দুই পদের ডিমে ডজনে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। মুরগি ও ডিমের মতো বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। অন্যদিকে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০ টাকায়। কাচাঁবাজার খুঁচরা বিক্রেতা হাকিম বলেন, কৃষকের খেতে সবজি শেষ হয়ে গেছে। ফলে সবজির সংকট দেখা দিয়েছে শহর থেকে বেশী দামে আমাদের সবজি কিনতে হচ্ছে। নতুন সবজি না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই। । বাজারে তার প্রভাব পড়েছে। রাজশাহী জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোঃ মনোয়ার হোসেন বলেন, পরিবহন খরচের জন্য বিভিন্ন বাজারে সবজির দাম ভিন্ন। এখন সবজির দাম বেশী। শীতকালিন সবজি শেষ হয়ে গেছে। এখন বাজারে গ্রীষ্মকালিন সবজি। গ্রীষ্মকালিন সবজির এখন ভরা মৌসুম না। চাহিদার তুলনায় সবজি কম। তাই বাজারে সবজির দাম বেশী। গ্রীষ্মকালিন সবজির ভরা মৌসুম জুলাই মাসে। জুন মাসের শেষের দিকে সবজির দাম কমবে।