রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আজ ৮৯তম জন্মবার্ষিকী নগরকান্দায় দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ওসি, সাংবাদিকসহ আহত- ৩০ কালীগঞ্জে নানা সংকটে গ্রাম আদালত সুফল পেতে প্রয়োজন কার্যকরী উদ্যোগ কটিয়াদীতে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন, ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ মুন্সীগঞ্জে লুন্ঠিত মালামালসহ ৭ ডাকাত গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে বর্ণিল পিঠা উৎসব ছয় মাসেও উদ্ধার হয়নি নিখোঁজ অন্তঃস্বত্তা গৃহবধূ স্বপ্না হিলির রেললাইনের ধারে খেজুর রস নামাতে ব্যস্ত গাছিরা মোহাম্মদিয়া ইসলামী যুব সংঘের উদ্যোগে তাফসীরুল কোরআন মাহফিল সম্পন্ন গাইবান্ধায় ছোটবোন ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে নির্যাতিত গৃহবধূর সংবাদ সম্মেলন

‘সম্বল ছিল একটা ঘর, তাও ভাঙলো তুফানে’

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ২০ মে, ২০২৩

ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। ভাঙা ঘরে অস্থায়ী আশ্রয় নেওয়া এসব মানুষদের বৃহস্পতিবারের (১৮ মে) বৃষ্টিতে দুর্দশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্পে হাজারো রোহিঙ্গারা বিপাকে পড়েছেন। এখন মাথা গোঁজার ঠাঁই চান তারা। সত্তরোর্ধ্ব খতিজা বেগম। থাকেন সমুদ্রের পাড়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ মাঝার পাড়ায়। ভাঙা ঘরের সামনে কাঁদছিলেন। কেন কাঁদছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একমাত্র সহায়-সম্বল ছিল একটি ঝুপড়ি ঘর। সেই ঘরও তুফানে ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। সেখানে কাপড় টাঙিয়ে এক রাত পার করছিলাম। কিন্তু আবার ঝড়বৃষ্টিতে সেটিও ভেঙে গেছে। এখন কী হবে, কই যাব? কোথায় থাকব জানি না। সব শেষ হয়ে গেছে। এখনো কোনও সহায়তা পাইনি।’ নাফনদের উত্তর পাড়া গ্রামের দিলু আলম। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। তিনি বলেন, ‘চার দিন পার হয়ে গেছে এখনো কোনও সহায়তা পাইনি। তার ওপর গতকালের বৃষ্টি আমাদের আরও কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে। ভাঙা ঘর বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত হয়ে গেছে। এখন থাকার জায়গা ও খাবারের কিছু নেই।’
সেন্টমার্টিনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় দ্বীপের ঘরহারা মানুষদের দুর্দশা বেড়েছে। এ ছাড়া দ্বীপে এসব মানুষের নেই খাবার, থাকার ঘর ও বিদ্যুৎ।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা রুমা আক্তার। ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি হারিয়ে পাশে আজিজ উল্লাহর বাড়িতে আশ্রয় নেন। রুমা জানান, বৃষ্টির কারণে পাশের ঘরে কাদা হয়ে গেছে। সেখানে তার আর থাকা হচ্ছে না। চার দিন হয়ে গেলেও কেউ তার খোঁজ নিতে আসেনি। পায়নি কোনও ত্রাণ সহায়তাও। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে গাছচাপায় তছনছ হয়ে যায় তার ঘর। এখনও সেভাবেই রয়েছে।
সেন্টমার্টিনে অবস্থান করছি উল্লেখ করে টেকনাফের উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা ডাল, চিনিসহ দুই হাজার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছি। পাশাপাশি গৃহহীন ২০০ মানুষকে ঢেউটিন ও নগদ ৬ হাজার টাকা দেওয়া হবে।’
এদিকে ক্যাম্পের কাঁচা রাস্তা কর্দমাক্ত হওয়ায় চলাচলে সমস্যা হচ্ছে ক্যাম্পে বসবাসকারী ঘূর্ণিঝড়ে ঘরহারা রোহিঙ্গাদের। টেকনাফের লেদার জাদিমুড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অন্য একটি তাঁবুতে রান্নার জন্য মাটির চুলায় আগুন জ্বালাতে ব্যস্ত হাসিনা বেগম। তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে ঘরের চাল উড়ে গেছে। তাই বৃষ্টির জন্য কিছুই রান্না করা যাচ্ছে না। চুলার নিচে পানি জমে থাকায় সকাল থেকে অনেকবার চেষ্টা করেও আগুন জ্বালাতে পারিনি। ছেলেমেয়েরা না খেয়ে বসে আছে। কিছু বিস্কুট ছিল, তা দিয়েছি। দুপুরেও খাওয়া হয়নি। রান্না করতে না পারলে রাতে কী খাওয়াবো জানি না।’
টেকনাফে লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভেঙে যাওয়া তাঁবু ঠিক করতে ব্যস্ত এক পরিবারের চারজন। ত্রাণ সামগ্রী পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে মোহাম্মদ আমিন বলেন, ‘চাল-ডাল ছাড়া আর কিছু পাইনি। তাছাড়া বৃষ্টিতে তাঁবু তছনছ হয়ে গেছে। রান্না করার কোনও ব্যবস্থা না থাকায় ছেলেমেয়েদের খাবার দিতে পারছি না।’ টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান বজলু রহমান বলেন, ‘আমার ক্যাম্পে চল্লিশ হাজার মানুষের বসতি। ঘূর্ণিঝড়ে অধিকাংশ মানুষের ঝুপড়ি ঘরগুলো ভেঙে গেছে। তবে এনজিওর পক্ষ থেকে কিছু পরিবারকে বাঁশ আর রশি দেওয়া হচ্ছে। যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে সেন্টমার্টিন-টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমরা ঘরহারা মানুষদের ঢেউ টিন ও নগদ অর্থ প্রদান করছি দ্বীপে।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com