জন্মদিন, বছরের একবারই আমাদের জীবনে আসে এই বিশেষ দিনটি। ছোট হোক অথবা নিজেদের সাধ্যমতো এই দিনটা উদযাপন করি আমরা। আর সেই উদযাপনের ক্ষেত্রে মোমবাতিতে ফুঁ দিয়ে কেক কাটা তো একেবারে অনিবার্য। কিন্তু কেক কাটার সময়ে মোমবাতিতে ফুঁ দেওয়া স্বাস্থ্যকর নাও হতে পারে। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যারোলিনার ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এমনই সতকর্তামূলক বার্তা উঠে আসে।
গবেষণায় পাওয়া যায়, জন্মদিনের কেকে জ্বালানো মোমবাতি ফুঁ দিয়ে নেভানোর সময় ১৪০০ শতাংশ বেশি ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়। গবেষকরা দেখেছেন, যখন একজন মানুষ মোমবাতিতে ফুঁ দেয় তখন তার মুখের লালা জন্মদিনের কেকের ওপর গিয়ে পড়ে এবং তা কেকের ওপর ১৪০০ শতাংশ ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি করে।
ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্যবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. পল ডসন এবং তার কয়েকজন ছাত্র এই গবেষণা পরিচালনা করেন। তারা একটি ক্ল্যাসিক বেসলাইন পদ্ধতি ব্যবহার করে ব্যাকটেরিয়া গণনা করেন।
গবেষণায় প্রচুর ব্যাকটেরিয়ার খোঁজ মিললেও সবচেয়ে আশ্চর্যজনক যে জিনিসটি তারা দেখতে পান, তা হচ্ছে, ফুঁ ভেদে ভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়। একটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এক ফুঁ তে ১২০ বারের বেশি ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি হয়েছে, যা থেকে বোঝা যায় যে, কিছু মানুষ অন্যের তুলনায় বেশি ব্যাকটেরিয়ার সৃষ্টি করে।
গবেষকদের মতে, এই তথ্য জন্মদিনের কেকে মোমবাতির আসল আনন্দ থেকে বি ত করার জন্য নয়। ড. পল ডসন বলেন, ‘আমার মনে হয় না এসব ব্যাকটেরিয়ার কারণে আপনি অসুস্থ হবেন। মানুষের মুখ ব্যাকটেরিয়া পূর্ণ এবং অধিকাংশই ক্ষতিকারক নয়।’ তবে কেউ অসুস্থ বা কোনো রকমের সংক্রমণের শিকার হয়ে থাকলে তাকে মোমবাতিতে ফুঁ দেওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন গবেষকরা। এর ফলে জন্মদিনের কেকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী রোগগুলোর বিস্তার ঘটতে পারে। ড. ডসন বলেন, তিনি জন্মদিনের কেক খাওয়া এড়াবেন যদি দেখেন যিনি ফুঁ দিচ্ছেন তাকে দেখতে স্পষ্টতই অসুস্থ মনে হচ্ছে।
একই কারণে জন্মদিনের কেক ভাগ করে খাওয়াটাও অনিরাপদ হতে পারে। একই কেকের টুকরায় একাধিক জনের কামড় বসানো থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি