সীতাকুেন্ড পাহাড়ের কোল ঘেঁষে আবাদি ফসলের সবুজ বিপ্লব আর গাছ-গাছালির অপরুপ দৃশ্যের শান্তিপ্রিয় এলাকাটি এয়াকুবনগর। পূর্বাংশে অগনিত পাহাড়ের বুক ছিঁড়ে আসা ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়ি ছড়ার মিলন মোহনায় ঝর্ণা প্রবাহ হতে সৃষ্ট জলধারা ছড়াটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। নয়নাভিরাম ছড়াটির উৎপত্তি ভাঁজে ভাঁজে অগনিত পাহাড়ের বিশাল গভীরতায় আর সমাপ্তি ঘটেছে নুনাছড়া খালে। ছড়ার স্বচ্ছ পানি ও পাহাড়ের গা গেঁষে নেমে আসা ঝর্ণাধারা যেন প্রকৃতির মায়াবি কণ্যা। বার মাস প্রবাহিত প্রকৃতির মায়াবি ছড়া ও ঝর্ণা‘কে ঘিরেই দেখা দিয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা, সেচ প্রকল্প ও মৎস্য চাষ সহ সুপেয় খাবার পানির সু-ব্যবস্থা। অসংখ্য চেনা-অচেনা পাখির কলকাকলিতে মুখরিত পাহাড়ি ঝর্ণাসহ ছড়ার সৌন্দর্যে ভ্রমণপ্রেমীদের দীর্ঘ হেঁটে আসার ক্লান্তি যেন মহুর্তেই দুর হয়ে যায়। উপরের টিলায় উঠলে দেখা যাবে দু‘দিকে পাহাড়ঘেরা বিশাল জলধারা সহ ঝর্ণা। মূলত প্রবাহমান ছড়ার পানি আটকে প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্টি হয়েছে এ বিশাল হৃদ ও ঝর্ণা। ঝর্ণার শীতল পানিতে নিজেকে ভিজিয়ে নেয়ার পাশাপাশি অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করেন আগত দর্শনার্থীরা। সম্ভাবনাময় ছড়াটি গত ২৭ মে শনিবার পরিদর্শনে যান চট্টগ্রাম-০৪ (সীতাকুন্ড) আসনের সাংসদ আলহাজ্ব দিদারুল আলম। গতকাল ২৯ মে পরিদর্শন করেন এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ার সহ একটি প্রতিনিধি দল। সীতাকুন্ড পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া জানান, সুবিধাজনক স্থানে মীরসরাই এর মহামায়া কিংবা ২নং বারৈয়াঢালার সহস্রধারা প্রকল্পের মতো ছড়ায় বাঁধ দিয়ে পানি সংরক্ষণ করা হলে শুষ্কমৌসুমে প্রায় ২ হাজার কৃষক এ পানি কৃষি কাজে ব্যবহার করতে পারবে। ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ দিলদার হোসেন, কাজী ছালাউদ্দীন এবং কাদের ভূঁইয়া পাড়ার চাষী নূরুল হুদা ও শাহজাহান ভূঁইয়া জানান, দু‘পাশে বসবাসকারী পরিবার ও কৃষকদের দীর্ঘদিনের দাবী সরকারী অর্থায়নে ছড়ার যে কোন সুবিধাজনক স্থানে বাঁধের মাধ্যমে পানি সংরক্ষণ করা হলে এলাকায় সুপেয় খাবার পানির চাহিদা পূরণ হবে। তাছাড়া মৎস্য প্রকল্প ও পর্যটন সহ হাজারো একর অনাবাদী কৃষি জমি ফসলি ভূমির আওতায় আসবে। এলাকায় দেখা দিবে কৃষি বিল্পব। ২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আলহাজ্ব মাইমুন উদ্দিন মামুন জানান, ঝর্ণা সহ ছড়াটি এতই সুন্দর যে, স্ব-চোখে না দেখে বাহির থেকে কেউ কল্পনাও করতে পারে না। চারপাশে পাহাড়ের সবুজ-শ্যামল পরিবেশ ছড়ার জমাট বাঁধা জলাধার ও ঝর্ণা‘কে করেছে নয়নাভিরাম। তিনি আরো জানান, পর্যটন শিল্প ছাড়াও বাঁধ দিয়ে ছড়ার পানি সংরক্ষণ করে সুষম বন্টনের মাধ্যমে পৌরসভার ৫টি ওয়ার্ডের হাজার হাজার কৃষক শুষ্কমৌসুমে এ পানি কৃষি কাজে ব্যবহার করতে পারবে। তাতে ছড়ার দু‘পাশের বিশাল এলাকায় দেখা দিবে উৎপাদিত ফসলের সবুজ বিপ্লব। উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বন বিভাগের আওতাধিন এলাকায় অবস্থিত ছড়াটি কয়েক দফা পরিদর্শন ও জরিপ শেষে স্কেচ ম্যাপ সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে প্রেরণ করেছেন তারা। প্রকল্পটি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়েছেন বলে জানান উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।