প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে। সবার সমান সুযোগ থাকবে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। কোনও পক্ষপাতমূলক নির্বাচন হবে না।’ গতকাল মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুরে খুলনা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘আমরা ইভিএমে ভোট করছি। ইভিএমের ফলাফল পরিবর্তনের ন্যূনতম সুযোগ নেই। ইভিএম জাদুর বাক্স বা ইভিএমে ভানুমতির খেলা হয় কি না তা আপনাদের খোঁজ নিতে হবে। এই সন্দেহ দূর করতে হবে। এই মেশিন দিয়ে কোনও রকম কারচুপির সুযোগ নেই। আমরা অনেকগুলো নির্বাচনে করেছি। এ ধরনের কোনও প্রমাণ পাইনি। সর্বশেষ গাজীপুর নির্বাচনেও এটা প্রমাণ হয়েছে। আপনারা প্রার্থীরা খোঁজ নিতে পারেন। কোনও ভোটারকে বাধা দেওয়া যাবে না। কোনভাবে ভোটারদের অধিকার খর্ব করা যাবে না। সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অনেক প্রার্থী। সবাই জিতবে না। যারা পরাজিত হবেন তাদের হাসিমুখে বিজয়ীকে মেনে নিতে হবে। সবাইকে এ পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’ নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাইকে নির্বাচনী আচরণবিধি পালন করতে হবে। ভঙ্গ হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নির্বাচন ভোটারের অধিকার। তার অধিকারকে বিঘিœত করবেন না। তাকে ভোটকেন্দ্রে যেতে দিতে হবে। ভোটারের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে কি না তা কঠোরভাবে দেখা হবে। ভোটার বাধাগ্রস্ত হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপনাদের দেখতে হবে বুথের মধ্যে ভোটার ছাড়া দ্বিতীয় কেউ প্রবেশ করে কিনা।’
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.) ও নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম। সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী। বক্তৃতা করেন জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঁঞা, খুলনা রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি মো. মইনুল হক, খুলনার পুলিশ সুপার মো. মাহবুব হাসানসহ ১০ জন সরকারি রিটার্নিং অফিসার।
মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক, জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু, ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মো. আব্দুল আউয়াল, জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী এস এম সাব্বির আহম্মেদ ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান। সভায় মহানগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের ১৩৪ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও ৩৯ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর বেশিরভাগই উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আহসান হাবিব খান (অব.) বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম হবো। ইভিএম নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। জুজুর ভয় শুনে লাভ নেই। খোঁজ নেন। সন্দেহ দূর করেন। ভোটার উপস্থিতি বাড়ান।’ নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব পর্যায়ের ৭ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। শৃঙ্খলা নিয়ে সংশয়ের সুযোগ নেই।’ খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘প্রার্থীর টাকার জোর, পেশিশক্তির প্রভাব থাকতে পারে। কিন্তু সেটা প্রচার না করে যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে। জনপ্রিয়তা দিয়ে জিততে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে। যিনি যোগ্য তিনিই বিজয়ী হবেন।’