ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কুকুর-বিড়ালের উপদ্রবে মানুষ অতিষ্ঠ। পৌর এলাকার বিভিন্ন অলিগলিতে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ায় কুকুর। অনেক সময় পথচারী সাধারণ মানুষের উপর কুকুর বিড়াল আক্রমন করে কামড় দিচ্ছে। কিন্তু কুকুর-বিড়ালের কামড় ও আঁচড় খেয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা সরকারি হাসপাতালে যেয়ে ভুক্তভোগীরা প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) পাচ্ছেন না। হাসপাতালে প্রতিষেধকের সংকটে একদিকে রোগীরা চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না অপরদিকে তারা ভোগান্তির শিকারও হচ্ছেন। হাসপাতাল থেকে আক্রান্ত রোগীদের বলা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে যেয়ে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য। ৭ মাস আগে একদিনে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে কালিগঞ্জ শহরে এক পাগলা কুকুর প্রায় ৫০ জনকে কামড় দিয়ে আহত করে। আহতরা কালিগঞ্জ থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে সে সময়ও মেলেনি কুকুরে কামড়ানো ভ্যাকসিন। কুকুর-বিড়ালের উপদ্রবের কথা স্বীকার করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে কুকুর নিধন করা যাচ্ছে না। কালীগঞ্জ থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মাসুদ রানা জানান, ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে থেকে ১১৬ টি এবং ২৮ নভেম্বর মহাখালী ঢাকা থেকে সরকারি ৩ শত পিস কুকুরে কামড়ানো ভ্যাকসিন (র?্যাবিক্স ভিসি)কালীগঞ্জ হাসপাতালে আসে। ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারী থেকে কালিগঞ্জ হাসপাতালের সব কুকুরে কামড়ানো ভ্যাকসিন শেষ হয়ে যায়। তবে কুকুরে কামড়ানো রোগীর গভীর ক্ষতের জন্য ৫০টি র্যাবিক্স আই জি ভ্যাকসিনের মধ্যে এখনো স্টকে রয়েছে ৪৬ টি ভ্যাকসিন।অপরদিকে সাপে কাটা রোগীর জন্য এন্টিভেনম নামক ২০ ফাইল ভ্যাকসিন হাসপাতালে রয়েছে যা মেয়াদোত্তীর্ণ। এক কথায় কালীগঞ্জ উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসা সরকারি এই হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিন ধরে কুকুর, বিড়াল ও সাপে কাটা রোগীদের জন্য নেই কোন ভ্যাকসিন। কালীগঞ্জ শহরের আড়পাড়া,বনানীপাড়া, মধুগঞ্জবাজার, ঢাকালে পাড়া,কলেজ পাড়া, হেলাই, ফয়লা, নিশ্চিন্তপুর, চাপালি, নিমতলা ঘুরে বিভিন্ন সময়ে দেখা যায়, কুকুর দল বেঁধে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে বা ঘোরাঘুরি করছে। ওই পথ দিয়ে চলাচলকারীরা সাবধানে যাচ্ছেন। বলিদাপাড়ার বাসিন্দা ইয়াহিয়া খান বলেন, কুকুরের উৎপাতে রাস্তা দিয়ে চলাচল দুষ্কর হয়ে পড়েছে। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠালে কুকুরের ভয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। প্রতিদিন শোনা যায় কাউকে না কাউকে কুকুর কামড় দিয়েছে। আর কুকুরে কামড় দিলেই ভ্যাকসিন দিতে হয়। কিন্তু হাসপাতালে গেলে শুনতে হয় ভ্যাকসিন নেই। চাপালি গ্রামের সোলেমান হোসেন জানান,কয়েকদিন আগে আমার হাতে বিড়াল আঁচড় দিয়েছিল। আমি ভ্যাকসিনের জন্য কালীগঞ্জ হাসপাতালে যাই, কিন্তু হাসপাতাল থেকে জানাল তাদের কাছে নাকি কুকুর বিড়ালে কামড়ানো প্রতিষেধক নেই। কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলমগীর হোসেন বলেন, আজ উপজেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে কিছু ভ্যাকসিন আমাদেরকে দেবো জানিয়েছি।ইতিমধ্যে কয়েকজন সেগুলো আনতে গিয়েছে। আজ থেকেই কুকুর-বিড়ালে কামড়ানো ভ্যাকসিন কালিগঞ্জ হাসপাতালে পাওয়া যাবে।