চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে টানা দীর্ঘদিন তীব্র খরার পর কাঙ্খিত বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে চা উৎপাদনে সুফল বয়ে এনেছে এ বৃষ্টি। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শ্রীমঙ্গলে দেখা মিললো স্বস্তির বৃষ্টির। পরিমাণে এ বৃষ্টিপাত অল্প হলেও জনমনে কিছুটা হলে স্বস্তি এনেছে। এরপর শুক্রবার ভোর থেকে টানা কয়েক ঘন্টা এবং শনিবার দিনব্যাপী ছিল বৃষ্টি। গতকাল রবিবার চায়ের রাজধানীতে বৃষ্টিপাত হয়েছে। রবিবার (১০ জুন) শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন চা বাগানে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ খরার পর কাঙ্খিত বৃষ্টিপাতের ফলে প্রাকৃতিক রুক্ষতা দূর হয়ে গাছ-গাছালিতে কিছুটা সবুজ প্রাণ ফিরে এসেছে, বিশেষ করে শ্রীমঙ্গল উপজেলার চা বাগানগুলোতে। এই প্রাকৃতিক বৃষ্টিপাত চা বাগানের জন্য অনেক উপকারি বলে জানিয়েছেন চা বাগান সংশ্লিষ্টরা। চা বাগানের মালিকরা বলেন, দীর্ঘ খরার পর এই বৃষ্টি যেন ‘আশীর্বাদ’ হিসেবেই এসেছে। তারা জানান, কয়েক মাসে তীব্র খরা এবং নানা রোগের কারণে চা উৎপাদন মারাত্মক হ্রাস পেয়েছিলো। মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে লাল মাকড়সার আক্রমণসহ পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। সব মিলিয়ে মৌসুমের শুরুতে অর্ধেকের কম উৎপাদন হচ্ছে চা বাগানে। বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট এর পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় ও অধিক তাপমাত্রার কারণে বাগানে নতুন পাতা না আসায় উৎপাদন কমে গিয়েছিল। নতুন কুঁড়ি না আসা, পানির সংকট, লাল মাকড়সার আক্রমণ এখন প্রায় সব চা বাগানেই বিদ্যমান ছিল। তীব্র খরার কারণে চা বাগান কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন চা বাগানের ইরিগেশন (সেচ) দিয়েও চা গাছগুলোকে শতভাগ রক্ষা করতে পারছিলেন না। প্রচন্ড দাবদাহের পর টানা বৃষ্টি চা শিল্পের জন্য সুফল বয়ে এনেছে। এই বৃষ্টিপাতের ফলে চা গাছগুলো তার আপন সজিবতা ফিরে পাাচ্ছে। আশাবাদি এখন চা গাছে দ্রুত নতুন কুঁড়ি আসবে। প্লাকিং শুরু হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার ওপরে চা উৎপাদন হবে। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী শ্রীমঙ্গল উপজেলায় গত মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর চলতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক বিভলু চন্দ্র দাস বলেন, শ্রীমঙ্গলসহ চা শিল্পাঞ্চলে গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) ২ মিলিমিটার, শুক্রবার (৯ জুন) ৫৭.২ মিলিমিটার এবং গত শনিবার (১০ জুন) বিকেল ৬টায় ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।