টানা ২০ দিন বন্ধ থাকার পর আজ রোববার (২৫ জুন) ভোর ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট আবারও উৎপাদন শুরু করবে। আর সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোল স্টোরে কয়লা মজুত করা হচ্ছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ জুন) রাতে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ৪১ হাজার ২০৭ টন কয়লা আনা হয়। বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কয়লা না থাকায় গত ২৫ মে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট এবং ৫ জুন কেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিটও বন্ধ হয়ে যায়। পায়রার দুটি ইউনিট পুরোপুরি চালু রাখতে প্রতিদিন প্রায় ১২ হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হয়ে থাকে।
সবথেকে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পটুয়াখালীর কলাপাড়ার পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে চীন ও বাংলাদেশের যৌথ মালিকানায় নির্মিত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। কেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। তবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদনের সক্ষমতা থাকার পরও পারিপার্শ্বিক নানা কারণে প্রায়ই একে সংকটের মুখে পড়তে হয়।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ না হওয়ায় শুরুর দিকে দীর্ঘদিন প্লান্টের একটি ইউনিটকে অলস বসিয়ে রাখতে হয়। তবে ঋণের টাকায় তৈরি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বসিয়ে রাখলেও নিয়মিত এর ক্যাপাসিটি চার্জ ও ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। তবে এবারই প্রথমবারের মতো পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট পুরোপুরি ২০ দিন বন্ধ ছিল। গত বৃহস্পতিবার রাতে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি এথেনা ৪১ হাজার ২০৭ টন কয়লা নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার বালিকপাপান কোল টার্মিনাল থেকে পায়রা বন্দরের ইনার অ্যাঙ্করে অবস্থান করে। পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটি সংলগ্ন এলাকায় পর্যাপ্ত গভীরতা না থাকায় বেশ কিছু কয়লা লাইটারেজের মাধ্যমে খালাস করে। শুক্রবার রাতে কয়লঅ পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে নিয়ে আসা হয়। আর এখন চলছে কয়লা খালাসের কাজ। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। তবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদনে যাওয়ার পর এবারই প্রথমবারের মতো কয়লা সংকটের কারণে ২০ দিন পুরোপুরি বন্ধ ছিল।