আর মাত্র তিন দিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই অন্য সময়ের চেয়ে বাড়তি রোজগারের আশায় ক্লান্তি ভুলে এখন ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের। হাতুড়ি আর লোহার টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে বরিশালের কামারপট্টিতে। দিন ও রাত সমান ব্যস্ততায় সময় পার করছেন তারা। তবে লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় দা, চাকু, ছুরি ও বঁটির দাম এবার বেড়েছে বলে জানান কামাররা। সরেজমিনে দেখাগেছে, কালের বির্বতনে কামাররাও এখন স্মার্ট হয়েছেন। অর্থাৎ কামারশালের টুং-টাং আওয়াজের সঙ্গে বেশিরভাগ কামারপট্টিতে হাপরের জায়গায় যুক্ত হয়েছে মোটর দিয়ে তৈরি করা একটি বিশেষ মেশিন। কামাররা এর নাম দিয়েছেন ‘বুলার’। একটি মোটা পাইপের মধ্যে দিয়ে বিরামহীনভাবে বাতাস ঢুকছে কয়লার অগ্নিকু-ে। আর সেখানে পুড়িয়ে লাল করা হচ্ছে মোটা মোটা লোহার পাত। সেখান থেকে টিনের চিমনি বেয়ে কালো ধোঁয়া বেরিয়ে যাচ্ছে বাইরে। লোহা পুড়ে লাল হতেই সাঁড়াশি দিয়ে ধরে তোলা হচ্ছে রেললাইনের কাটা খ-ের ওপর। এর পরপরই হাতুড়ির বাড়ি আর হাতের জাদুতে আগুনে পোড়া লালাভ কাঁচা লৌহখ- ছুরি-চাকু, চাপাতি, বটিসহ বিভিন্ন আকার দিয়ে কোরবানির পশু কাটার জন্য ধারালো সামগ্রী তৈরি হচ্ছে। বরিশাল জেলার ১০ টি উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দা, বঁটি, ছুরি, চাকু, চাপাতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করছেন কামাররা। নগরীর কামারপট্টির হারুদাস কামার জানান, শেষ সময়ে ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় আছে। তার সহকারী হিসেবে পাঁচজন কাজ করছেন। তাদের কেউ ব্যস্ত নতুন দা-বঁটি তৈরিতে, আবার কেউ ব্যস্ত পুরোনো দা-বঁটিতে শান দিতে। তবে প্রতিবারের তুলনায় এ বছর কাজের চাপ অনেকটা কম বলে জানান তিনি। কয়েকটি কামারপট্টি ঘুরে দেখা গেছে, কামারপট্টিতে কামারদের এখন কাজের চাপ কিছুটা বেশি। একের পর এক ক্রেতা এসে দোকানে ভিড় করছেন। সকাল ও দুপুরের খাবার দোকানে বসেই সেরে নিচ্ছেন কামাররা। পুরোনো দুটি চাপাতি, একটি চাকু, একটি বঁটি ও ছুরিতে শান দেওয়ার জন্য নিচ্ছেন ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। অন্য সময় মজুরি ছিল ২০০ টাকা। এছাড়াও নতুন তৈরি সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে কেজিদরে।