জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সকল আসামীকে দ্রুত গ্রেফতার,শাস্তি নিশ্চিত করণ,নাদিমের পরিবারকে সরকারি কোষাগার থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান পরিবারের নিরাপত্তা,ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’র কাছে স্বারকলিপি দিয়েছেন বকশীগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকরা।
এর আগে বকশীগঞ্জ থানার সামনে দোষীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা। মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম শাহীন আল আমীন, জামালপুর প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ কাফী পারভেজ,সাংবাদিক আলহাজ¦ সরকার আবদুর রাজ্জাক,আশরাফুল হায়দার ও জিএম ফাতিউল হাফিজ বাবু প্রমূখ। মানববন্ধন শেষে বকশীগঞ্জ থানার ওসি’র মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে সাংবাদিক সরওয়ার জামান রতন,আবদুল লতিফ লায়ন,জিএম সাফিনুর ইসলাম মেজর, মাসুদ উল হাসান,এমদাদুল হক লালন,মতিন রহমান,এম এ ছালাম মাহমুদ,একেএম নুর আলম নয়ন,রাজ্জাক মাহমুদ,রাশেদুজ্জামান রনি,মনিরুজ্জামান লিমন,আসাদ.রতন ও লিয়াকত হোসেন বাবুলসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুন বুধবার পেশাগত দায়িত্বপালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে পৌর শহরের কলেজ মোড়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে রাতেই তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে মারা যায় নাদিম।
এই ঘটনায় নিহত সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে সাধুরপাড়া ইউপি’র বরখাস্তৃকৃত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ২৫ জনকে আসামি করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ১৩ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামী মাত্র পাচঁ জন গ্রেফতার হয়েছে। এজাহারভুক্ত প্রধান আসামীর ছেলে ফাহিম ফয়সাল রিফাত ও রাকিব বিল্লাহসহ ১৭ জন আসামী এখনো ধরাছোয়ার বাইরে।
গ্রেফতারকৃত সকল আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুুলিশ। এদের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদে মামলার প্রধান আসামী মাহমুদুল আলম বাবু,রেজাউল করিম ও মনিরুজ্জামান মনির হত্যাকান্ডের দ্বায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সাংবাদিক সরকার আবদুর রাজ্জাক বলেন,দুইদিন পর ঈদ। কিন্তু আমরা সহকর্মী হারিয়ে শোকাহত,তাই আমাদের কোন ঈদ নেই। নাদিমের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেধনা ও শোকের জন্য ঈদের দিন কোন সাংবাদিক নতুন পোশাক পড়বে না। আমাদের আন্দোলন চলছে,চলবে। নাদিম হত্যার বিচার চাই।
জামালপুর প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ সাংবাদিক কাফী পারভেজ বলেন, নৃশংস হতাকান্ডের শিকার হয়েছেন সহকর্মী নাদিম। সকল অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। যতদিন নাদিম হত্যার বিচার না হবে ততদিন আমাদের ঘরে ফেরার সূযোগ নেই। নাদিম হত্যার বিচার শেষ করেই ঘরে ফিরতে চাই।
বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম শাহীন আল আমীন বলেন,আমরা ভালো একজন সাংবাদিক ও সহকর্মীকে হারিয়ে শোকাহত। এখনো মামলার এজাহারভুক্ত ১৭ জন আসামী পলাতক রয়েছে। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সাংবাদিক নাদিম হত্যার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত সকল সাংবাদিক মাঠে থাকবে।
স্মারকলিপিটি দ্রুত পাঠিয়ে দেয়া হবে জানিয়ে বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সোহেল রানা বলেন, মামলাটি তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ। জামালপুরের পুলিশ সুপার মহোদয় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছেন। আপানারা আমাদের সহযোগীতা করবেন। অপরাধীরা কেউ ছাড় পাবে না।