মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

পবিত্র ঈদুল আজহা আগামীকাল

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৮ জুন, ২০২৩

আগামীকাল বৃহস্পতিবার মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে মুসলিম সম্প্রদায় ঈদুল আজহা উদযাপন করবে। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদুল আজহার জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ অনুয়ায়ি পশু কোরবানি করবেন। নামাজ শেষে মুসল্লিদের অনেকেই যাবেন কবরস্থানে। তারা চিরবিদায় নেওয়া তাদের স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অশ্রুসজল চোখে এই আনন্দের দিনে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে আকুতি জানাবেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ বলেন, ‘হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত,‘রাসূলুল্লাহ স. যখন হিজরত করে মদীনায় এলেন তখন মদীনাবাসীর দুটি উৎসবের দিবস ছিল। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, এ দুটি দিবস কী? অর্থাৎ কী হিসেবে তোমরা এ দু’দিন উৎসব পালন কর? তারা বলল, ইসলামপূর্ব যুগে আমরা এ দিনদুটিতে উৎসব পালন করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ তোমাদেরকে এ দুটি দিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন- ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর।’ মূলত বিভিন্ন জাতি ও সম্প্রদায়ের উৎসবসমূহ প্রকৃতপক্ষে তাদের আকীদা-বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের মুখপত্র এবং তাদের জাতীয় চরিত্রের দর্পণ হয়ে থাকে। এ কারণে একথা স্পষ্ট যে, ইসলামের আগে জাহিলিয়া যুগে মদীনার লোকেরা যে দুটি উৎসব পালন করত এগুলো জাহিলী চরিত্র ও চিন্তা-চেতনা এবং জাহিলী ঐতিহ্যেরই দর্পণ ছিল। অর্থাৎ সে উৎসবে ছিলো অনৈতিকতা এবং নোংরামীর ছোঁয়াযুক্ত আনন্দ। সে আনন্দের মধ্যে শয়তানের চেতনা জাগ্রত ছিলো। ছিলো শিরকের পচা দুর্গন্ধ। স্বয়ং আল্লাহতাআলা এ প্রাচীন উৎসবগুলোকে বাতিল করে দিয়ে এগুলোর স্থলে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দুটি উৎসব এ উম্মতের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যা এ উম্মতের তাওহীদী চরিত্র ও জীবনধারার সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং বিশ্বাস ও চিন্তা-চেতনার আয়না স্বরূপ।
ঈদ আল্লাহর পক্ষ হতে নির্দেশিত এক নির্মল আনন্দের উৎসব। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. বলেছেন, আমাকে ‘ইয়াওমুল আজহা’র আদেশ করা হয়েছে অর্থাৎ, এ দিবসে কুরবানি করার আদেশ করা হয়েছে; এ দিবসকে আল্লাহতাআলা এই উম্মতের জন্য ঈদ বানিয়েছেন। (মুসনাদে আহমাদ, সুনানে আবু দাউদ, সুনানে নাসায়ী)। কুরবানি করা ঈদুল আজহার অন্যতম প্রধান বিষয়। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন নবীজী সা. মদীনার দশ বছরের প্রতি বছরই কুরবানি করেছেন। হযরত বারা ইবনে আযীব রা. বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশে খুতবা দিলেন। তাতে বললেন, আমাদের এই দিবসে প্রথম কাজ নামায আদায় করা, এরপর কুরবানি করা। সুতরাং যে এভাবে করবে তার কাজ আমাদের তরীকা মতো হবে। আর যে আগেই যবেহ করেছে তা পরিবারের জন্য গোশত খাওয়া মাত্র, আল্লাহর জন্য কুরবানি নয়।’ বৈধ বিনোদন আনন্দ, খেলাধুলাও ঈদের সংস্কৃতি। তবে এ ক্ষেত্রে শরীয়াহর সীমারেখা মাথায় রাখতে হবে। এ আনন্দ যেনো পাশবিকতা বা স্বার্থপরতায় পরিণত না হয়। নবীজী ঈদুল ফিতরের দিন কোনো কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যেতেন না। আর ঈদুল আজহার দিন নামায না পড়ে কিছু খেতেন না। ঈদুল আজহার দিন নামাযের পরে খাওয়ার কারণ সম্ভবত এ হবে যে, এ দিন যেন সবার আগে কুরবানির গোশতই মুখে ওঠে, যা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে এক ধরনের দাওয়াত ও আপ্যায়ন।
কুরবানিদাতা নিজ হাতে কুরবানির পশু জবেহ করা উত্তম। তবে প্রয়োজনে অন্য লোক দ্বারাও জবেহ করা যেতে পারে। আনাস ইবনে মালিক রা. বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ স. দুটি সাদা-কালো বর্ণের বড় শিং বিশিষ্ট পুং দুম্বা কুরবানি করেছেন। আমি দেখেছি, তিনি দুম্বা দুটির গর্দানে পা রেখে ‘বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবার’ বললেন। অতঃপর নিজ হাতে যবেহ করলেন।’ কুরবানির উট অন্তত পাঁচ বছর বয়সী হতে হবে। গরু, মহিষ দুই বছর এবং ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা এক বছর হতে হবে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, তোমরা মোটা-তাজা পশু দ্বারা কুরবানি কর। কেননা এ পশু পুলসিরাতে তোমাদের সওয়ারী হবে। হযরত বারা ইবনে আযিব রা. কুরবানির পশু সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, রাসূলুল্লাহ স. হাত দিয়ে ইশারা করেছেন। আমার হাত তো তাঁর হাত থেকে ছোট। তিনি বলেছেন, ‘চার ধরনের পশু দ্বারা কুরবানি করা যায় না। যে পশুর এক চোখের দৃষ্টিহীনতা স্পষ্ট, যে পশু অতি রুগ্ন, যে পশু সম্পূর্ণ খোড়া এবং যে পশু এতো শীর্ণ যে তার হাড়ে মগজ নেই।’ আলী ইবনে আবী তালিব রা. বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ স. আমাদের শিং-ভাঙ্গা বা কান-কাটা পশু দ্বারা কুরবানি করতে নিষেধ করেছেন।’ কুরবানি প্রকৃতপক্ষে বান্দার পক্ষ থেকে আল্লাহর দরবারে নজরানা নিবেদনের নাম। এ জন্য এটা জরুরি যে, নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী এর জন্য উত্তম ও ভালো পশু নির্বাচন করা।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com