বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

জনপ্রতিনিধিদের সংবাদ সম্মেলন

বামনা (বরগুনা) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০২৩

বরগুনার বামনায় ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় কর্তৃক বরাদ্দ দেওয়া গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন (টিআর) প্রকল্পের ৯০ লাখ টাকা ও গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা/কাবিটা)এর ৩শত টন চাল ও জিআর এর বিভিন্ন ভৌতিক প্রকল্প তৈরী করে চাল ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার সকালে বামনা প্রেসক্লাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে এসব প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন বামনা সদর ইউপি চেয়ারম্যান চৌধূরী কামরুজ্জামান সগির, এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন হাওলাদার, রুমী খানম, বুকাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজ, ডৌয়াতলা ইউটি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানসহ ৪ ইউনিয়নের অন্যান্য জনপ্রতিরিধিরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, বরগুনা জেলার বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব অন্তরা হালদার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কর্মচারী মো. মাফুজুর রহমান এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতিবৃন্দ এসব ভৌতিক প্রকল্প বানিয়ে কোন কাজ না করে সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বুকাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সবুজ বলেন, টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের উপজেলা কমিটির সভাপতি হলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। কাজেই উপজেলা চেয়ারম্যানকে না জানিয়ে এসব লুটপাট হয়েছে এটা আমরা মনে করিনা। অনুসন্ধানে জানাগেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় (ত্রাণ কর্মসূচি-২ অধিশাখা) কর্তৃক ২৯ মে ২০২৩ খ্রিঃ তরিখের ৫১.০০.০০০০.৪২২.১৪.০০১.২৩(অংশ-১৫).৭৬ নং স্মারকে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার(কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় বামনা উপজেলায় বরাদ্দকৃত ৩০০ মে.টন চাল তিনটি প্রকল্পের অনুকূলে ৩০ জুন ২০২৩খ্রিঃ তারিখের মধ্যে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। ১০০ মে. টন করে বরাদ্দ দেওয়া ওই প্রকল্প গুলো হলো রতনশীলের বাসা থেকে আজিজ ডাঃ বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার দুপাশ মাটি দ্বারা ভরাট মোট বরাদ্দ, এলজিইডির রাস্তা থেকে শুরু করে হিন্দুপাড়া হয়ে দফাদার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মাটি দ্বারা সংস্কার ও খলিল মুন্সী বাড়ি থেকে রিয়াজ মুন্সী বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মাটি দ্বারা নির্মাণ। এই প্রকল্পগুলোর কোন ঠিকানা নেই। কোন এলাকায় তাও জানা যায়নি। শুধু মাত্র নাম দেখে ওই প্রকল্প অনুসন্ধানের গিয়েও কোথাও কোন অস্তিত্ব মেলেনি। এদিকে এ প্রকল্প তিনটির সভাপতি তিনজন হলেন, বামনা সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, ডৌয়াতলা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জাহানারা বেগম ও উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন হাওলাদার। এব্যপারে আলতাফ হোসেন হাওলাদার ও জাহানারা বেগম জানান, তাদেরকে উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ও ওই অফিসের কর্মচারী একটি কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন। তারা সরল বিশ^াসে স্বাক্ষর করেন। তারা জানতেন না তাদেরকে ব্যবহার করে এই লুটপাট করেছেন। অভিযোগে আরো জানাগেছে, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় কর্তৃক বরাদ্দ দেওয়া গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন(টিআর) প্রকল্পে ৪০টি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ২লাখ ২৫ হাজার টাকা করে মোট ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ এসব প্রকল্পগুলো সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কোন কাজই হয়নি। এমনকি কেউ জানেও না তাদের প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন(টিআর) এর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় একই নামের প্রতিষ্ঠানে ৪টি প্রকল্পে ৯লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ তারা একটির ও টাকা পায়নি। সরকারি টাকা লুটপাটের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে স্থানীয় জনগনের মধ্যে এ নিয়ে ব্যপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে বামনা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, বরাদ্দটা আমরা পেয়েছি জুনের ১৯ তারিখ তাই বরাদ্দ যাতে ফেরত না যায় এজন্য আমরা স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বরাদ্দকৃত অর্থ পে অর্ডার করে রেখেছি। আমরা কেউ এই অর্থ আত্মসাৎ করিনি। ভৌতিক প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব প্রকল্প মন্ত্রনালয় থেকে পাশ হয়েছে। এই প্রকল্পগুলো উপজেলার কোথায় তা আমরা জানিনা। তবে এসব বিশেষ বরাদ্দে উপজেলার যে কাউকেই প্রকল্প কমিটির সভাপতি করা যায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্তরা হালদার বলেন, জুনের শেষ সময়ে বরাদ্দটা পেয়েছি। ২৫ তারিখ জুন ক্লোজিং থাকায় টাকাটা উত্তোলন করে রেখে দেওয়া হয়েছে। পরে কাজ হলে টাকাটা পরিশোধ করে দেওয়া হবে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু সাংবাদিকদের বলেন, বিশেষ বরাদ্দ আসছে আমি চেয়ারম্যান হিসাবে কিছুই জানিনা। বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন বলেন, আমি বরাদ্দের খবর পাওয়ার পরে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে সকল কাগজ পত্র সংগ্রহ করি। যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা বামনা উপজেলায় খরচ করার জায়গা নেই। ভুয়া প্রকল্প তৈরী করে এই টাকা গুলো তুলে আত্মসাৎ করেছেন। ইউএনও এবং পিআইও কাকে এবং কিভাবে এই টাকাগুলো দিলো আমার বোধগম্য নয়। এই প্রকল্পগুলো আনা হয়েছে লটুপাটের জন্য। এর পিছনে কারা আছে তা বেড় করা হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com