আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী হেলালিয়া হাটের অভ্যন্তরীণ দুই’শ মিটার রাস্তা দীর্ঘ্যদিন থেকে সংষ্কার না হওয়ার কারণে হাটে আসা মানুষজন ও পার্র্শবর্তী শিমুলিয়া, চন্ডিপুর, চুনাহাড়ী, গাংজোয়ার, ইলশাবাড়ি, পিরোজপুর, খিজিরপুর, বাহাদুরপুর, ত্রি-মোহনী, বলিঘাটসহ ২২ গ্রামের জনসাধারণ চরম ভোগান্তি শিকার হচ্ছে। দ্রুত রাস্তাটি নিমার্ন কাজ সম্পন্ন করার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সান্তাহার –নাটোর বাইপাস সড়কের পার্শে হেলালিয়া হাটের অবস্থান। বাইপাস সড়কের পাশে হাটের ভিতর দিয়ে দুই’শ মিটারের একটি প্রধান রাস্তা রয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে পার্শবর্তী গ্রামের লোকজন সান্তাহারসহ বিভিন্ন স্থানে দৈনন্দিন যাতায়াত করে। এছাড়া সপ্তাহের রবিবার ও বৃহস্পতিবার এখানে হাট বসে। হাটটি সারাদেশে মাদুর শিল্পের জন্য বিখ্যাত। এই হাটে দুর-দুরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে হাতে ও মেশিনে তৈরি মাদুর কিনে নিয়ে যায়। প্রতি বছর এই হাট ইজারা দিয়ে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা আদায় হয়। অথচ বিগত ১৭ বছর থেকে এই হাটের রাস্তাটি উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষ কোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ‘হেলালিয়া হাট হতে ছাতনী পশ্চিমপাড়া পর্যন্ত রাস্তা কার্পেটিং ও এইচবিবি দ্বারা উন্নয়ন’ কাজের অংশ হিসাবে এই হাটের ভিতর দিয়ে যাওয়া এক’শ নব্বই মিটার রাস্তা এইচবিবি দ্বারা উন্নয়নের কাজ যুক্ত করে দেয়। রাস্তাটির সঙ্গে ওই এক’শ নব্বই মিটার রাস্তার দুই ধারে গাইড ওয়াল নির্মাণ ও রাস্তাটি স্থানভেদে ২০/২৫ ফুট চওড়া করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। রাস্তাটি চওড়া হলে হাটে আসা মানুষ ওপথচারীরা সুবিধা ভোগ করবে। কিন্তু রাস্তাটি দরপত্রের মোতাবেক চওড়া করতে জটিলতা সৃষ্টি হয়। স্থানীয় একটি মহল দরপত্র মোতাবেক রাস্তা তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানায়, স্থানীয় জেদাজেদির কারণে নির্মান কাজ বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সান্তাহার ইউপি চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি জানান, বিগত ১৭ বছরেও কেউ এই হেলালিয়া হাট উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। হাটের এই রাস্তাটি নির্মাণ না হওয়ায় স্থানীয় জনগণের দাবীর প্রেক্ষিতে আমার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু করার পর দরপত্র মোতাবেক রাস্তাটি চওড়া করতে গিয়ে ২/৩ টি অবৈধ ও ভাসমান দোকান সরিয়ে দেয়া হয়। সরিয়ে দেয়া দোকান অন্যত্র জায়গা দেয়ার আশ্বাস দেয়ার পরেও একটি পক্ষ নির্মাণ কাজে বিঘœ সৃষ্টি করে। কিন্তু সব সমস্যা সমাধান করে রাস্তার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে। স্থানীয় ইউপি সদস্য সমাজ খান জানান, রাস্তাটির নিমার্ন কাজ বন্ধ হবার ফলে পার্শবর্তী গ্রামের জনসাধারণ ও হাটে আগতদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিনি অনতিবিলম্বে রাস্তাটির নিমার্ণ কাজ শুরুর দাবী জানান। উক্ত কাজটির মনোনীত ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদ জানান, জটিলতা কেটে গেছে, কাজটি অতি দ্রুতই শেষ করা হবে। জানতে চাইলে এলজিইডি’ র নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোরশেদ ও আদমদীঘি উপজেলা প্রকৌশলী রিপন কুমান সাহা উভয়ই বলেন, এখন আর স্থানীয় কোনো সমস্যা নেই। অনতিবিলম্বে কাজটি শেষ করার জন্য ঠিকাদার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।