আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যত খুশি নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক পাঠালে তাতে নির্বাচন কমিশনের কোনো আপত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রসঙ্গে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদনগুলো আসলে ভালো হয়। আরো কিছু ফর্মালিটিস আছে। সেক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স দরকার হবে। সেক্ষেত্রে তারা যদি নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক পাঠায় যত খুশি তত কোনো আপত্তি নেই নির্বাচন কমিশনের।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইলেকশন অবজার্ভার মিশনের সাথে কমিশনের বৈঠক হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, তারা বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। আমাদের ভোটার, ভোটকেন্দ্র, পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয় ও সিসি ক্যামেরার বিষয়ে তারা জানতে চেয়েছেন। তাদের একটা টেকনিক্যাল টিম আমাদের সাথে ১৮ অথবা ১৯ তারিখ বৈঠক করবেন। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করবেন। তাদের যে জিজ্ঞাসা ছিল কমিশন তাদের সন্তুষ্ট করেছে।
ইইউ প্রতিনিধি দল কোন শর্ত দেয় নাই জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আমাদের পরিস্থতি দেখেছে।
আমাদের প্রস্তুতি দেখেছে। যত খুশি পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারবে তাতে কোনো লিমিটেশন নাই।
অশোক কুমার দেবনাথ জানান, নির্বাচন কমিশন বলেছে ৯১১টা নির্বাচন করেছে সেক্ষেত্রে তারা সন্তুষ্ট। পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্ট। তারা আরো বিস্তারিত আলোচনা করবে।
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোনো কথা হয় নাই জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে আনা নিয়ে তারা আমাদের কাছে কিছু জানতে চায় নাই। তারা জানতে চেয়েছে ভোটার সংখ্যা কত।
কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে সন্তুষ্টি বা অসন্তুষ্টি কিছুই প্রকাশ করেন নাই বলে জানান অশোক কুমার। তিনি বলেন, আমাদের দ্বাদশ ভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। কমিশন ফেয়ারলি নির্বাচন করতে সক্ষম কি না তা জানতে চেয়েছেন। তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন। এদিকে বাংলাদেশে সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক নির্বাচনী প্রতিনিধি দলের প্রধান চেলেরি রিকার্ডো বলেছেন, প্রাক নির্বাচনী পরিস্থিতি মূল্যায়নের পর তারা সিদ্ধান্ত নেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি-না।
বৈঠক শেষে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে দুই সপ্তাহের সফরে এসেছি। আমরা প্রাক-নির্বাচনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠাবো। তার ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি পাঠাবে না সেই সিদ্ধান্ত হবে। তাদের এই সফর গণমাধ্যমে গুরুত্ব পাওয়ার মতো না হলেও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।
চেলারি রিকার্ডো এসময় সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন না নেয়ার কথা বলেন। বৈঠকের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, মিস্টার রিকার্ডো যেটা বলেছেন ওটাই আমার বক্তব্য। বৈঠকে ইইউ-এর প্রতিনিধি দলের ৫ সদস্যসহ , সিইসি’র সঙ্গে অন্য নির্বাচন কমিশনার এবং ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।