হেঁটে ঢুকছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা
গতকাল বুধবার রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। চেকপোস্টে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করা হয়েছে। রাজধানীর গাবতলীতে বিএনপি নেতাকর্মীর মুঠোফোন গেঁটে কয়েকজনকে আটকের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া আমিনবাজার ও বাবুবাজার ব্রিজ এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের তল্লাশি করতে দেখা গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলরত যাত্রীরা। উপায় না পেয়ে হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটেই ঢাকায় প্রবেশ করছেন। এর মধ্যে নয়াপল্টনে বিএনপি সমাবেশে যোগ দিতে যাবেন এমন নেতাকর্মীর সংখ্যাই বেশি।
ওদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশিচৌকিতে যানবাহনে তল্লাশি করছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতভর নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১০ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। তবে বিএনপির এক নেতার দাবি, জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাঁদের ৩০ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
আমিনবাজারে পুলিশের চেকপোস্টে গিয়ে দেখা যায়, মূলত মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এ সময় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন যানবাহনে থাকা যাত্রীদের তল্লাশির পাশাপাশি যানবাহনের কাগজপত্রও চেক করছেন।
আমিনবাজারে আশরাফ নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ ঢাকায় গাড়ি ঢুকতে দিচ্ছে। এজন্য পায়ে হেঁটেই যাচ্ছি। কোনো ঘোষণা ছাড়া গাড়ি ঢুকতে না দেয়ায় বহু মানুষ সমস্যার মধ্যে পড়েছে। রফিক নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, আমরা মানিকগঞ্জ থেকে এসেছি বিএনপির সমাবেশে যাব। কিন্তু মানিকগঞ্জের কথা শুনলেই পুলিশ বাস থেকে নামিয়ে দিচ্ছে। হেঁটেই এই পর্যন্ত এসেছি।
চেকপোস্টে উপস্থিত ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিদুল ইসলাম বলেন, এটি আমাদের নিয়মিত চেকপোস্ট কার্যক্রম। এ সময় দীর্ঘ যানজট ও যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, ঢাকার সমাবেশে যেতে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্টে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। সকাল থেকেই রাজধানীর প্রবেশ মুখে বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুর প্রবেশ মুখে হাসনাবাদে, দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুর প্রবেশ মুখে কদমতলিতে, বছিলা সেতুর প্রবেশ মুখে ঘাটারচরে সকাল থেকেই পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান করেন। এ সময় দক্ষিণবঙ্গ, মুন্সিগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দোহার ও কেরানীগঞ্জ থেকে আসা বিএনপি নেতাকর্মীরা গাড়িতে ও পায়ে হেঁটে রাজধানীতে প্রবেশের বাধা প্রদান করা হয়। এ সময় পুলিশ অনেক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে বিএনপি নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন । পুলিশ প্রতিটি গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। এসময় অনেক নেতাকর্মী বিএনপি’র পরিচয় না দিয়ে সাধারণ জনগণ সেজে রাজধানীতে প্রবেশ করেন। এ সময় বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা ছবি ও ভিডিও করতে গেলে পুলিশ বাধা প্রদান করেন।
এদিকে কোন্ডা ইউনিয়নের পানগাও ঘাট থেকে শাক্তা ইউনিয়নের ঘাটারচর ঘাটসহ অর্ধশতাধিক খেয়াঘাট সকাল থেকেই বন্ধ থাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাধা পেয়ে অনেক বিএপি নেতাকর্মীরা বুড়িগঙ্গা নদী পার হয়ে রাজধানীতে প্রবেশের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। কদমতলীতে বুড়িগঙ্গা সেতুর প্রবেশ মুখে রহিম মুন্সিগঞ্জ থেকে আসা আব্দুর রহিম জানান, তারুণ্যের সমাবেশে যেতে পুলিশ আমাদের বাধা দিচ্ছে। সমাবেশে যাওয়া আমাদের একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। আমরা পুলিশের এই বাধার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। প্রথম সেতুর প্রবেশ মুখে হাসনাবাদে আহমেদ নামে এক বিএনপি কর্মী জানান, সকাল থেকেই পুলিশ আমাদেরকে সমাবেশে যেতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বাধা দিচ্ছে। আমাদের অনেককে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আমরা পুলিশের এই বাধার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।