মূল্যস্ফীতির কারণে কষ্টে আছে দেশের মানুষ। কতদিন পর এই কষ্ট দূর হবে কেউ জানে না। কারণ চাপে পড়া অর্থনীতি ধীরে ধীরে আরও জটিল হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ডলার সংকট ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে চাপের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। অর্থনীতি সম্পর্কিত একটি ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক উল্লেখ করেছে ‘বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতের চাপে পড়েছে। ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং পরিস্থিতি রাতারাতি সমাধান হবে না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং আর্থিক খাতের অস্থিতিশীলতার কারণে পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে, রয়েছে বহিরাগত প্রভাব। এসব কারণে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলো চাপের মধ্যে রয়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেড জোনে এসে দাঁড়িয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ বাঁচাতে আমদানি সংকুচিত করেছে। আমদানি সংকুচিত হওয়ায় বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে তৈরি পোশাক খাতে রফতানি ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এখনও আশা জাগিয়ে রেখেছে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ: অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকে স্বস্তি নেই এক বছরের বেশি সময় ধরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ৩০ জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪১ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ২০২৩ সালের ৩০ জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩১ বিলিয়ন ডলারে। এখন এটি ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। অর্থাৎ গত এক বছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলারের মতো।
এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন (বিপিএম-৬) ম্যানুয়াল অনুসারে দেশের গ্রস বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের (জিআইআর) পরিমাণ এখন ২ হাজার ৩৫৬ কোটি ৭৫ লাখ বা ২৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। অবশ্য নিট রিজার্ভের (এনআইআর) পরিমাণ ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। যদিও নিট রিজার্ভের তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশ করবে না বলে আগেই জানিয়েছেন গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।
এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বর্তমানে ২৩ বিলিয়ন ডলার দেখানো হলেও নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ ১৯ বা ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে না, যা দিয়ে মাত্র তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে এখন রিজার্ভ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। উদ্বেগের জায়গা হলো রিজার্ভের ক্ষয় চলছে। প্রতিদিন কমে যাচ্ছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি এখন একটি ‘রেড জোনে’ আছে। এটি আরও কমে গেলে সেটি উদ্বেগের। এখান থেকে যদি সরকার ধীরে ধীরে রিজার্ভ বাড়াতে পারে তাহলে, মানুষ আশার আলো পাবে, তা না হলে গভীরতর দুশ্চিন্তার বিষয়।
মূল্যস্ফীতি: অর্থনীতির এই সূচকটি ঊর্ধ্বমুখী থাকায় সীমিত আয়ের মানুষেরা যথেষ্ট কষ্ট পাচ্ছে। অর্থাৎ বছরজুড়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি ভোক্তাদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। প্রায় সব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সদ্যবিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে সীমিত আয়ের মানুষ ছিলেন চাপের মুখে। অবশ্য এখনও খেটেখাওয়া মানুষদের সেই চাপ সহ্য করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে মূল্যস্ফীতির এত চাপ মানুষকে সহ্য করতে হয়নি। মূল্যস্ফীতি আগের অর্থবছর, অর্থাৎ ২০২১-২২ সালেও বাড়তি ছিল। কিন্তু বিদায়ী অর্থবছরে (২০২২-২৩) মূল্যস্ফীতি ছিল গড়ে ৯ দশমিক ০২ শতাংশ—বছরওয়ারি হিসাবে যা গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আমদানি: অর্থনীতিবিদরা বলে থাকেন— পণ্য আমদানি বাড়লে সাধারণত অর্থনৈতিক কর্মকা- বাড়ে। বিশেষ করে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি বাড়লে শিল্পের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। আর উৎপাদনের ওপর ভর করে বাড়ে কর্মসংস্থান ও শিল্পের প্রবৃদ্ধি। এছাড়া রফতানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানি বাড়লে রফতানিও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু অর্থনীতির এই সূচকটি ছিল নি¤œমুখী। শুধু তাই নয়, সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের মতো ডলারের এতটা সংকট বাংলাদেশ এর আগে দেখেনি। ফলে বাধ্য হয়েই আমদানি সংকুচিত করতে হয়। ব্যবসায়ীরা আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় ডলার পাননি। একদিকে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি, অন্যদিকে সংকটের কারণে স্থানীয়ভাবে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি—এই দুইয়ে মিলে দেশে পণ্যমূল্য বেড়েছে। ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য কমে যাওয়ার কারণে সরকারের লেনদেনে রেকর্ড ঘাটতি দেখা দেয়, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে, ঋণ পরিশোধের খরচ বাড়ে। ডলার-সংকটের কারণে বাড়ে জ্বালানিসংকটও। ফলে শিল্পকারখানা ভুগেছে সেদিক থেকেও।
বিদায়ী অর্থবছরে (২০২২-২৩) পণ্য আমদানি হয়েছে ৭৯ বিলিয়ন ডলারের, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ কম। আর আমদানি হওয়া পণ্যের পরিমাণ কমেছে ৪ শতাংশের কাছাকাছি। যদিও আগের অর্থবছরে আমদানিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ৩৫ দশমিক ৯ শতাংশ। ডলার–সংকটে পণ্য আমদানি নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের। তাতে পণ্য আমদানির ঋণপত্র খুলতে হিমশিম খান আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। এতে শিল্পের কাঁচামাল ও বিলাস পণ্যের মতো কিছু পণ্য আমদানিও কমে গেছে।
কাস্টম হাউজ ও শুল্ক স্টেশনগুলোর আমদানির তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য আমদানি হয়েছে ১৩ কোটি ৩১ লাখ টন। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ১৩ কোটি ৮২ লাখ টন। এই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আমদানি পণ্যের পরিমাণ কমেছে ৫১ লাখ টন বা ৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। অবশ্য খরচের হিসাবে আমদানি কমেছে ১০ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৭ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ৮ হাজার ৭৬৪ কোটি ডলারের। শুল্কায়ন মূল্য ধরে এই হিসাব করা হয়েছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য— গম, চিনি, সয়াবিন তেল ও সয়াবিন তৈরির কাঁচামাল সয়াবিন বীজের আমদানিও কমে গেছে গত অর্থবছরে। কমেছে শিল্পের জন্য যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানিও। ২০২২-২৩ অর্থবছরে যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানি হয়েছে ১ হাজার ১৯৮ কোটি ডলারের। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ১ হাজার ৩১৩ কোটি ডলার। সেই হিসাবে যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানি প্রায় ৯ শতাংশ কমেছে। এছাড়া বস্ত্রশিল্পের কাঁচামাল তুলা আমদানিও কমেছে গত অর্থবছরে।
রফতানি আয়: বিদায়ী অর্থবছরে তুলনামূলক ভালো ছিল অর্থনীতির এই সূচকটি। বিদায়ী অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পণ্য রফতানি বেড়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবির তথ্যমতে, ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বিশ্ববাজারে ৫ হাজার ৫৫৫ কোটি ৮৭ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। এর আগের অর্থবছর ২০২১-২২ সালে রফতানি আয় হয়েছিল ৫ হাজার ২২৮ কোটি ২৬ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের তুলনায় রফতানি আয় বেড়েছে ৩৪৭ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ রফতানি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর পোশাক রফতানি বেড়েছে ১০ দশমিক ২৭। প্রথম ছয় মাসে ভালো আয়ের ফলে বিদায়ী অর্থবছরে গড়ে রফতানি বেশি হয়েছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের চেয়ে তৈরি পোশাকের রফতানি বেশি হয়েছে ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও তা কিছুটা বেশি। এই খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় বাড়লেও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পরের বড় পাঁচ খাতের রফতানির চিত্র। অবশ্য সুখবর হলো— অপ্রচলিত বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকজাত পণ্যের রফতানি বাড়ছে। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে অপ্রচলিত বাজারে দেশের পোশাক রফতানি বেড়েছে ৩১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। শুধু তাই নয়, প্রধান অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতে রফতানি এক বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। মোট পোশাক রফতানিতে অপ্রচলিত বাজারের অংশ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৭ দশমিক ৮২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
প্রবাসী আয়: অর্থনীতির ভালো সূচকগুলোর মধ্যে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় অন্যতম। বিদায়ী অর্থবছর শেষে বৈধ পথে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলার। তার আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩ শতাংশ। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী আয় কমেছিল ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। বিদায়ী অর্থবছরের শেষ মাস জুনে ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। গত বছরের একই মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৮৩ কোটি ৭২ লাখ ডলার। এর আগে, ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ রেমিট্যান্স এসেছিল।
বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ: বলা হয়ে থাকে, বেসরকারি ক্ষেত্রে ঋণ প্রবাহ বাড়লে বিনিয়োগ বাড়ে। আর বিনিয়োগ বাড়লে দেশে শিল্পায়ন হয়। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। কিন্তু অর্থনীতির অন্যতম সূচক বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়েনি। সদ্যবিদায়ী এই অর্থবছরে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। তবে তারল্যসহ ব্যাংকিং খাতের নানা সংকটের কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরের কোনও মাসেই বেসরকারি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি ব্যাংক খাত। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ গত মে মাসে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ১১ দশমিক ১০ শতাংশে নেমেছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলার সংকটে আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করায় চলতি অর্থবছরে দেশে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে, যা নতুন কর্মসংস্থান তৈরি ও ব্যবসা সম্প্রসারণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এ ছাড়া সার্বিকভাবে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ পরিবেশ না থাকায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমেছে।
রাজস্ব আয়: অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলোর মধ্যে রাজস্ব আদায়ে গত এক দশকের মধ্যে সদ্যবিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরেই সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৮ দশমিক ১২ শতাংশ, যা এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। এনবিআরের তথ্যানুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে পরের পাঁচ বছর শুল্ক-কর আদায়ে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশের বেশি ছিল। সদ্যবিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৩ লাখ ২৫ হাজার ২৭২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে এনবিআর (এটি সাময়িক হিসাব)। গত অর্থবছরে এনবিআরকে শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরের হিসাবে আয়কর ও ভ্রমণ থেকে আদায় হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। এ খাতে প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। শুল্ক খাতে আদায় হয়েছে ৯১ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। এতে প্রবৃদ্ধি মাত্র ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর ভ্যাট খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ২৭ শতাংশ। ভ্যাট আদায় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, আইএমএফ রাজস্ব আদায়ের জন্য ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকার একটি লক্ষ্য দিয়েছিল; সেটিও অর্জিত হয়নি। এর মধ্যে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নিয়মিত প্রবৃদ্ধির সঙ্গে জিডিপির প্রায় আধা শতাংশের সমান বাড়তি শুল্ক-কর আদায়ের শর্ত আরোপ করেছে আইএমএফ।-বাংলাট্রিবিউন