ঝালকাঠিতে বাস দূর্ঘটনায় নিহত পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার ৮ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহতদের এসব পরিবারে দেখা দিয়েছে ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবারের অন্য সদস্যরা। মর্মান্তিক এ সড়ক দূর্ঘটনার জন্য এসব পরিবার দায়ী করছে বাস চালকের খামখেয়ালীকে। দায়ী চালকের শাস্তির দাবীও জানিয়েছেন তারা। তবে ঘটনার পর থেকেই বাসের চালক পলাতক রয়েছে। রবিবার বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনায় কোন মামলাও হয়নি। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার ঝালকাঠিতে বাস দূর্ঘটনার নিহত ১৭ জনের মধ্যে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায় ৮ জনের বাড়ি।ভান্ডারিয়া উপজেলার নিহত ৮ জনের মধ্যে ২ জন আব্দুস সালাম মোল্লা ও শাহীন মোল্লা। সম্পর্কে পিতা পুত্র তারা। ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্য শনিবার সকালে ডান্ডারিয়া থেকে বাসার স্মৃতি বাসে করে বরিশাল যাওয়ার জন্য রওনা করে। কিন্তু ভান্ডারিয়া থেকেই বাসের চালক এবং সুপারভাইজার আসন সংখ্যার থেকে অধিক যাত্রী নিয়ে তাদের যাত্রা শুরু করে। এ নিয়ে ভান্ডারিয়া থেকেই বাসের যাত্রীদের সাথে বিবাদ শুরু হতে থাকে। কিন্তু বাস কতৃপক্ষ যাত্রীদের কোন কথাই কানে নেই নি। এক পর্যায়ে বাসের ড্রাইভার নিজেই যাত্রিদের সাথে তর্কে লিপ্ত হয়ে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে রাস্তার পাশে পুকুরে নামিয়ে দেয়। এতে মারা যায় ১৭ জন। মারা যায় বাসের মধ্যে থাকা পিতা সালাম মেল্লা ও পুত্র শাহীন মোল্লা। সালাম মোল্লার সাথে থাকা তার আরেক পুত্র শামীম মোল্লা আহত হলেও প্রানে বেঁচে যান। তাদের পরিবারের উপার্জনক্ষম দুই জনকে হারিয়ে ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার পরেছে পুরো পরিবার। তাদের দাবী বাস চালকের খামখেয়ালির কারনে এ দূর্ঘটনা। দায়ী বাস চালকের বিচার চায় তারা। আহত শামীম মোল্লা জানায়, বাস চালক ও হেলপারের খামখেয়ালির জন্য তাদের এ দূর্ঘটনা। বাস ছাড়ার পর থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে যাত্রী উঠায় তারা। বাসে বসার জায়গা না থাকায় যাত্রী উঠাতে নিষেধ করে বাসে থাকা লোকজন। এ নিয়ে তাদের সাথে ঝগড়া শুরু করে বাসের চালক। বাসের চালক পিছনের দিকে তাকিয়ে ঝগড়া করার এক পর্যায় বাস নামিয়ে দেয় রাস্তার বাইরে। তিনি কোন মতে জীবন বাঁচাতে পারলেও তার বাবা ও বড় ভাই মারা যায়। বাস চালকই তার বাবা ও ভাইকে হত্যা করেছে। নিহত সালাম মোল্লার মেয়ে শারমিন আক্তার জানান, তার যে ভাই মারা গেছে তার স্ত্রী সন্তান সম্ভাবা। এখন তার ভাবী ও তার অনাসন্তানের ভবিষ্যৎ কি হবে? তারা কারো সহায়তা চায় না। তারা বিচার চায়। ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম জানান, তারা যা হারিয়েছে তার কোন ক্ষতিপূরন টাকা বা অন্য কিছু দিয়ে মেটানো সম্ভব না। তবে এ সব পরিবারের পাশে তিনি থাকবেন এবং সাধ্য মতো সহায়তা করবেন। এছাড়া ভান্ডারিয়া উপজেলার নিহত ৮ জনের প্রত্যেককে তাৎক্ষণিক দাফনের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠিত মিরাজুল ইসলাম ফাউন্ডেসনের পক্ষ থেকে এ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে নিহতদের মৃতদেহ ঝালকাঠি থেকে ভান্ডারিয়া নিজ নিজ বাড়িতে পৌছে দেওয়া হয়েছে।