ছোট্ট মেয়ে পবিত্র কোরআন হিফজ সম্পন্ন করেছে। এতে যতটা উচ্ছ্বসিত হয়েছেন এর আগে কখনোই এমনটি ঘটেনি। পেশায় চিকিৎসক ফিলিস্তিনি মা বাসমাহ আল-আগা আরবি সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা মুবাশিরকে বিষয়টি জানালেন। গত শনিবার কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সম্প্রতি বাসমাহ আল-আগা তার মেয়ে সারা আল-আগার স্বল্প বয়সে হিফজ সম্পন্নের বিষয়ে কথা বলতে আলজাজিরার মুখোমুখি হয়েছিলেন। সেখানে মেয়ের এমন অর্জনকে নিজের সৌভাগ্য আখ্যা দিয়েছেন তিনি। বাসমাহ জানান, তিনি ও তার স্বামী গাজা অ লের হাসপাতালে শিশুদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত অ ল হওয়ায় সেখানে তাদের কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এই পরিস্থিতির পরও সবসময় তারা মেয়ের তত্ত্বাবধান করতেন।
সারা মাত্র দুই বছরে তার মায়ের কাছে পবিত্র কোরআন হিফজ করেছে। ছয় বছর বয়সে হিফজের পাঠ শুরু করে সে। সারার বাবা-মা ঘরোয়া কাজের সময় মেয়ের কোরআন পাঠ শুনতেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতেন। এ প্রসঙ্গে তার মা বাসমাহ আল-আগা বলেন, মেয়েকে উৎসাহ দিতে আমিও তার সাথে কোরআন মুখস্ত করা শুরু করি। কিন্তু সে আমার চেয়ে অনেক এগিয়ে যায়। বিষয়টি আমাকে অনেক বেশি আনন্দ দেয় ও অনুপ্রেরণা জোগায়।
মাদরাসায় যাওয়ার আগে সারাহ প্রথমে নুরানি কায়দা পড়া শুরু করে। এরপর কোরআন মুখস্ত শুরু করে। প্রতিদিন সে আধা পৃষ্ঠা বা এক পৃষ্ঠা মুখস্ত করত। এরপর ধীরে ধীরে তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। একপর্যায়ে সে এক দিনে ১০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত মুখস্ত করে। কোরআন মুখস্ত সম্পন্ন হওয়ায় আনন্দের কথা জানায় সারাহ। অনেক কষ্ট ও ক্লান্তির পর বাবা-মাকে সম্মানের মুকুট পরিয়ে দিতে পেরে সে পুলকিত। সে বলে, ‘সব সময় সে তার মাকে বলত, একদিন তাদের সব কষ্ট ও ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। তখন তারা অনেক আনন্দ অনুভব করবে। আল্লাহ তার মায়ের কোনো প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে দেবেন না।’
সারাহর বাবা জামিল আল-আগা জানান, কোরআন হিফজ প্রকল্পের শুরু হয়েছিল আরো অনেক আগ থেকে। যখন তিনি জীবনসঙ্গী হিসেবে একজন উত্তম নারীকে বেছে নিয়েছিলেন। মূলত তার স্ত্রী সন্তানদের কোরআন শিক্ষার পুরো বিষয়টি গুরুত্বের সাথে পালন করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এখানে ক্ষান্ত হব না। সারাহর ছোট বোনরাও কোরআন হিফজ শুরু করেছে। আমার আশা, আমার সব মেয়েই কোরআনের হাফেজ হবে। যেন কিয়ামতের দিন রাসূল সা: তাদের নিয়ে গর্ব করতে পারেন।’ সূত্র : আলজাজিরা মুবাশির