মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন বলে মানবজমিনকে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান। আল্লামা সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদীও এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত রোববার গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে আল্লামা সাঈদী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। শারীরিক জটিলতা বিবেচনা করে সাঈদীকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। পরে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করে।
২০১০ সালের ২রা জুন রাজধানীর শহীদবাগের নিজ বাসা থেকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার মামলায় গ্রেপ্তার হন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। এরপর তাকে যুদ্ধাপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে আপিলে তার আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়।
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুরের ইন্দুরকানী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করেন তার বাবার প্রতিষ্ঠিত স্থানীয় একটি মাদরাসায়। তিনি ১৯৬২ সালে ছারছিনা আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হন ও পরে খুলনা আলিয়া মাদরাসায় স্থানান্তরিত হন। বাংলা, উর্দু, আরবি ও পাঞ্জাবি ভাষায় দক্ষ এবং ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায়ও তার দক্ষতা রয়েছে। ১৯৮০’র দশকের প্রথমদিকে মাওলানা সাঈদী দেশব্যাপী ইসলামী ওয়াজ-মাহফিল ও তাফসির করা শুরু করেন এবং তার সুন্দর বক্তব্যদানের জন্য দেশব্যাপী জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এ সময়ই তিনি রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম নেতা নির্বাচিত হন।
১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল নির্বাচনী জোট গঠন করে এবং তিনি এই নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।