বর্ষায় মশার প্রাদুর্ভাব অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেড়ে যায়। এ মৌসুমে মশাবাহিত রোগেরও ঝুঁকি বাড়ে। মশা কমবেশি সবাইকেই কামড়ায়। তবে অনেকের ধারণা যে, মশা তাদেরকেই বেশি কামড়ায়! বিষয়টি কি সত্যিই নাকি পুরোটাই ভিত্তিহীন? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মশা বেশি কামড়ানো কিংবা কম কামড়ানোর মধ্যে বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি আছে। সত্যিই মশা কাউকে বেশি কামড়ায় আর কাউকে কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মূল কারণ হলো রক্তের গ্রুপ ও পোশাকের রং। আসলে মশারও পছন্দের রক্তের গ্রুপ আছে। আর এ কারণেই ওই রক্ত আছে যাদের শরীরে তাদেরকেই বেশি কামড়ায় মশা। পাশাপাশি কোন রঙের পোশাক পরে আছেন তার উপরও অনেকটা নির্ভর করে মশা বেশি নাকি কম কামড়াবে। গবেষকদের মতে, কালো বা গাঢ় রঙের পোশাক পরে থাকা ব্যক্তিদের মশা বেশি কামড়ায়।
আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ইউসি ডেভিস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জানাচ্ছেন, কিছু কিছু মানুষের শরীরে মশার প্রিয় রাসায়নিক বেশি থাকে। তাই মশা সেসব মানুষের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়। ইউসি ডেভিস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লার্ক কফির মতে, মানুষের শরীরের গন্ধ এবং নিঃশ্বাসের সঙ্গে নির্গত কার্বন ডাই-অক্সাইডে আকৃষ্ট হয় মশা। কারো কারো শরীরের গন্ধ মশার কাছে বেশি প্রিয়।
তার মতে, আমাদের ত্বক থেকে নিঃসৃত কিছু রাসায়নিক (যেমন, ল্যাকটিক এসিড) মশাকে বেশি আকর্ষণ করে। যাদের শরীর থেকে ল্যাকটিক অ্যাসিড বেশি নির্গত হয়, তাদের প্রতি মশা বেশি আকৃষ্ট হয়।
এমনকি গবেষকদের দাবি, গর্ভবতী নারী, যাদের শরীর অতিরিক্ত মেদযুক্ত, শরীরচর্চার পর বা মদ্যপানের পর মানুষকে মশা বেশি কামড়ায়। ২০ আগস্ট, বিশ্ব মশা দিবস। ১৮৯৭ সালের এই দিনে চিকিৎসক রোনাল্ড রস অ্যানোফিলিস মশাবাহিত ম্যালেরিয়া রোগের কারণ আবিষ্কার করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি এই আবিষ্কারের জন্য ‘নোবেল’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। মশাবাহিত রোগের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালন করা হয়।