বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘মানুষকে খুন করলেও লাশ দেখে পরিবার কেঁদে মনটা হালকা করতে পারে, অন্তত কিছুটা স্বস্তি পায়। কিন্তু গুম এমন একটি জিনিস তার লাশটাও পাওয়া যায় না। এ যে কী নিদারুণ কষ্ট তা ভুক্তভোগীর পরিবার ছাড়া কেউ উপলব্ধি করতে পারে না। এর চেয়ে ঘৃণিত ও জঘন্যতম অপরাধ এই পৃথিবীতে আর কিছু নেই।’ আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসের প্রাক্কালে গতকাল মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর সূত্রাপুর ও বংশাল এলাকায় গুম হয়ে যাওয়া বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম এবং দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। মঈন খান বলেন, ‘আজকে আমরা গুম হওয়া পরিবারের কোমলমতি স্বজনদের সাথে দেখা করতে এসেছি। এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে কিছু অনুদান পৌঁছে দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘এ সরকারের আমলেই মানুষ গুম শব্দটি শুনেছে। এরা ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমের মতো জনপ্রিয় নেতাদের গুম করার মাধ্যমে এদেশে গুমের রাজনীতি শুরু করেছে। এ থেকে গণতন্ত্রকামী জনগণকে রক্ষা করতে হলে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। আর এরজন্য প্রয়োজন আন্দোলন। আজ সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এ স্বৈরাচারকে বিদায় করতে। এদেরকে বিতারিত করে জনগণকে গুম-খুনের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।’
আব্দুস সালাম বলেন, ‘আজ গুম হওয়া পরিবারের কান্না দেখলে মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হলেও এ সরকারের কিছুই আসে যায় না। কারণ, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই খুন ও গুম করতে এদের বুক কাঁপে না। আজ যদি জবাবদিহিতা থাকতো তাহলে এসব ঘৃণিত অপরাধ করার সাহস সরকার পেতো না। আর দেশে জবাবদিহিতা ফিরিয়ে আনার জন্যই বিএনপি সংগ্রাম করছে।’ ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, ‘এ সরকারের রোষানলে পড়ে যারাই খুন হয়েছেন, গুম হয়েছেন তারা গণতন্ত্রের সৈনিক। তাদের অপরাধ একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে রাজপথে নেমেছে। গুম-খুন করে সাময়িকভাবে জোর-জবরদস্তি করে ক্ষমতায় থাকা যায়, কিন্তু ইতিহাস বলে তাদের বিদায় শুভকর হয় না।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দল দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন, শ্রমিক দল দক্ষিণের আহ্বায়ক সুমন ভূইয়া, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনূস মৃধা, মোশাররফ হোসেন খোকন, আবদুস সাত্তারসহ বিএনপি ও অংগসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।