চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পাঞ্চলের বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (বেজা) অধিগ্রহণকৃত জমিতে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে দীঘি খননের অভিযোগ উঠেছে একশ্রেণির প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। এসব দীঘি খননের ফলে উপকূলীয় বন উজাড় হয়ে যাচ্ছে। ফলে সংরক্ষিত বন পুরোপুরি বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরির পাশাপাশি মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে ওই এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিল্প নগরের জিরো পয়েন্ট থেকে উত্তরে শত শত একর বন নিশ্চিহ্ন করে খনন করা হয়েছে অনেক দীঘি। উপজেলার টেকেরহাট থেকে শুরু করে বঙ্গোপসাগরের তীরের উপকূলীয় অঞ্চলে বিগত কয়েক বছর ধরে একটি প্রভাবশালী মহল দীঘি খনন ও ক্রয় বিক্রয় করে আসছে। ঐসব স্থানের বন প্রায় শেষ। মাঝে মাঝে প্রশাসনের অভিযান চললেও কোন এক অজানা কারণে পুনরায় চলে এই বন ধ্বংসের কর্মযঙ্গ। উপকূলীয় এই বনভূমি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল এর জন্য অধিগ্রহণ করা হলেও সেটি এখনো অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।স্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে বনের গাছপালা উপড়ে ফেলে খালি করা হচ্ছে। তারপর সময়-সুযোগ বুঝে নিশ্চিত করা হচ্ছে দখল। স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, এখানে ফসলি জমিসহ কেওড়া বাগান কেটে দীর্ঘসময় ধরে একশ্রেণির প্রভাবশালীরা রাতের আঁধারে এই দীঘি খনন করে আসছে। তারা আরও জানায়, ১৯৭৬ সালের ২৪শে জানুয়ারি ‘চরনিলক্ষী সোনালী সমবায় কৃষি খামার সমিতি লিমিটেড’ সদস্যদের মাঝে সরকার ৫৫৬ একর জায়গা বন্দোবস্তি দেয়। ওই জায়গার কয়েকশত একর বনভূমি চলে গেছে দিঘীর আওতায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের অগ্রযাত্রার জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল করার উদ্দেশ্যে আমাদের এই জায়গাগুলো অধিগ্রহণ করে। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন হলো এই- আমরা যে জায়গা বেজা কর্তৃপক্ষকে ছেড়ে দিলাম সে জায়গায় এখন কিছু প্রভাবশালী চক্র জবরদখল করে মাছ চাষের আওতায় আনছে। প্রশাসন ও বেজা কর্তৃপক্ষের নীরবতায় আমরা খুবই হতাশ। বিষয়ে উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা গফুর মোল্লা বলেন, যেখানে মৎস্য প্রকল্প করা হচ্ছে, সেটি এখন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল করার জন্য বেজা কর্তৃপক্ষকে দিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বেজা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে পারেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, বন কেটে দিঘী খনন করা হচ্ছে ফলে পশুপাখি হারা”্ছে তাদের আবাসস্থল। অর্থনৈতীক অঞ্চলের উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে এসব কর্মকান্ড। উন্নয়নের পাশাপাশি বনভুুমি রক্ষা করতে হবে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। বেজা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক শিল্পাঞ্চল কর্তৃপক্ষের জণসংযোগ কর্মকর্তা কাদের বলেন, এর আগেও আমরা বন ধ্বংস করে দিঘী খননের বিষয়ে শুনছি। আমাদের স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। মূলত বন রক্ষা করা বনবিভাগের কাজ। স্থানীয় থানার কর্মকর্তা ও সহকারী পুলিশ সুপারকে এ বিষয়ে অবগত করেছি উনারা সরজমিনে গিয়ে তদন্ত করবে। এছাড়্ অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ র্ক হবে।