কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার গুনানন্দী গ্রামের একটি বাড়ি। যে বাড়িটিকে স্থানীয়রা উদ্ভিদ জাদুঘর বলে চেনে। যেখানে রয়েছে বনজ, ফলদ, ওষুধি ও ক্যাকটাস জাতীয় হাজারের বেশি গাছ। বাড়ির ছাদ, বারান্দা, আঙ্গিনা, ড্রয়িংরুম, ডাইনিং টেবিল সবখানেই বিচিত্র ও দুর্লভ সব গাছ। এ উদ্ভিদ জাদুঘরটির প্রতিষ্ঠাতা ডা. মোহাম্মদ আবু নাঈম।
সরেজমিনে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দুর্লভ হলুদবরণ পদ্মফুল, ছোট ড্রাম ও সিমেন্টের পাত্রে রয়েছে বিভিন্ন রঙের শাপলা, শালুক ও পদ্ম। এসব গাছের চাষাবাদ সম্পর্কে জানা যায়, পদ্ম কষ্টসহিষ্ণু গাছ। অল্প মাটিতে এ গাছ ছোট আকারের হয়। বড় স্থান পেলে তা বিশালতায় মানুষকেও ছাড়িয়ে যায়। পদ্ম চাষ করতে ছিদ্রবিহীন পাত্র যথেষ্ট। পচা গোবর আর এঁটেল মাটির মিশ্রণ পানিতে ডুবিয়ে তাতে কন্দ পুঁতে রাখলেই পদ্ম বেড়ে ওঠে। বীজ থেকে চারা করা একটু সময়সাপেক্ষ আর ফুল পেতেও বিলম্ব হয়। পদ্ম বহুবর্ষজীবী কন্দ জাতীয় উদ্ভিদ। বীজ অথবা কন্দ থেকে পদ্মের বংশবিস্তার। পাতা পুরু, গোলাকার, সবুজ। আমাদের দেশের খাল, বিল, ডোবায় এখনো দেখা মেলে পদ্মের, যা শরৎ থেকে হেমন্তে মোহিনী রূপে ধরা দেয়। পদ্মের রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার। আদিকালে এর পাতায় মুড়িয়ে বাজারের উপকরণ দেওয়া হতো। এখনো অনেক দেশে পদ্মপাতায় আহার পরিবেশন হয়। পদ্মের কন্দ, ফুল রান্না উপযোগী। বীজও অনেক দেশে ভেজে খাওয়া হয়। এর রয়েছে নানাবিধ ওষুধি গুণ।
এ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ডা. মোহাম্মদ আবু নাঈম বাসসকে বলেন, গাছ সংগ্রহ ও বিনামূল্যে বিতরণ করা আমার নেশা। হলুদ পদ্মের প্রজাতিটি আমেরিকান। নাম অটাম ইন মোলিং। দেশের অনেক সংগ্রাহকের কাছেই অটাম ইন মোলিং, লাভ বার্ড, থাউজ্যান্ড পেটাল নানা নামে ও প্রকরণের হলুদ পদ্ম আছে। পরিবেশ নির্মল রাখতে ডা. মোহাম্মদ আবু নাঈম কাজ করছেন। এ কাজ আরও ছড়িয়ে দিতে হবে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, কুমিল্লার উপপরিচালক মো. আইউব মাহমুদ বাসসকে বলেন, পদ্ম প্রায় হারাতে বসেছে। দুর্লভ অনেক উদ্ভিদ ডা. মোহাম্মদ আবু নাঈম সংগ্রহ করছেন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় উদ্ভিদ সংগ্রহ ও বিতরণ প্রশংসার দাবি রাখে।