শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ছাতকের বিভিন্ন কোয়ারি থেকে লিজ ছাড়াই বালু উত্তোলন ও বিক্রির অভিযোগ নড়াইলের কালিয়ার কৃষক কায়কোবাদ সিকদার শীতকালীন উচ্চ ফলনশীল টমেটো চাষে লাভের আশাবাদী কুনিয়া বড়বাড়ির হাজী আবুল হাসেম সরকার একাডেমীর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা তারাকান্দায় তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ ধনবাড়ীতে জনপ্রিয় হচ্ছে রঙিন ফুলকপি চাষ মৃৎশিল্পীদের জীবনসংগ্রাম: গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বিলুপ্তির পথে গঙ্গাচড়ায় ধামুর পূর্বপাড়া বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ বিনা চাষে সরিষা আবাদ রিলে পদ্ধতিতে নতুন সম্ভাবনা, আগামীতে বাড়বে আরো উৎপাদন রায়গঞ্জে দেড়াগাঁতী রুদ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫৪তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দৌলতখান সরকারি আবু আব্দুল্লাহ কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ: জি এম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী এবং বিরোধী দলীয় উপনেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘তিনটি পণ্যের মূল্য বেধে দিয়ে কোনো লাভ হবে না, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পুর্নভাবে ব্যর্থ। বিশ্ববাজার এমনকি শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের চেয়েও আমাদের দেশে পণ্যমূল্য কয়েকগুন বেশি।’
গতকাল শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ১টায় রংপুর মহানগরীর পল্লী নিবাসে সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত শেষে তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘আমার মনে হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার সম্পূর্ণভাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। আমি যখন বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলাম, দ্রব্যমূল্য রিজেনবেল পর্যায়ে রাখার আমি ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। যখন বেড়েছে, তখন জনগণ জানত যে বেড়েছে। যখন কমেছে বা কমা উচিত ছিল তখন তা জনগণ জেনেছে। তখন মানুষের আস্থা ছিল। এখন নানান অজুহাত দিয়ে দাম একেবারেই নিয়ন্ত্রণহীন করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এখন বিশ্ববাজারের চেয়ে আমাদের দেশে পণ্যের দাম অনেক অনেক বেশি। এমনকি শ্রীলঙ্কা- যেটাকে আমরা ব্যর্থ রাষ্ট্র বলেছিলাম, যারা ঘোষণা দিয়ে দেউলিয়া হয়ে গেছে। আর পাকিস্তান যেটাও ব্যর্থ রাষ্ট্রের মতো ঘোষণা হয়ে গেছে। যাকে আমরা খারাপের উদাহরণ হিসেবে সব সময়ে বলে থাকি। তারাও আমাদের চেয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অনেকে অনেক ভালো অবস্থানে আছে। তাদের দেশে নিত্যপণের মূল্য আমাদের চেয়ে অনেক কম। বিশ্ববাজারের তুলনায় এখন আমাদের দেশের পণ্য মূল্য অনেক অনেক বেশি।’
সরকারিভাবে তিন পণ্যের দাম বেধে দেয়া প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘দাম যেটা বেধে দেয়া হয়েছে, আমি মনে করি এটা কখনোই সফল হওয়া সম্ভব নয়। দাম বেধে দেয়ার একটা নিয়ম ছিল, কতটুকু দাম রিজেনবেল হতে পারে। হিসাব-নিকাশ করে সেটা জানানো হয়। রিজেনবলের বাইরে কেউ নিলে একটা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হয়। রিজেনবেল যেটাকে বলা হবে তা যুক্তিসঙ্গত দাম। সেটার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়, যথেষ্ট ঘাটঘাটি করতে হয়, ডাটা নিতে হয়, ইভেন ডিমান্ড অ্যান্ড সাপ্লাইয়ের ওপর তা নির্ধারণ হয়। যদি সেটা ঠিক না থাকে, তাহলে আমি যতই চাপাচাপি করি এটা স্বাভাবিকভাবে ঠিক হবে না।’
যাছাই-বাছাই না করেই তিন পন্যের দাম বেধে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘ওনারা এসব যাচাই-বাছাই করেছেন কি-না আমি জানি না। আমার সন্দেহ, এটা ওনারা করেননি। সঠিকভাবে না বুঝেই কিছু একটা দাম নির্ধারণ করেছেন। প্রয়োজন সাপ্লাই ঠিক রাখা। রিজেনবেল প্রাইজ দাও। প্রাইজ ততটুকু নিচে নামাও ঠিক নয়, যাতে ব্যবসায়ীরা লোকসান করবে। আবার বেশি হওয়ায় ঠিক নয়, তাতে ব্যবাসীয়ারা অধিক মুনাফা করবে এবং জনগণ সাফার করবে। এটা দেখার যাদের দায়িত্ব তারা সঠিকভাবে করছেন বলে আমার মনে হচ্ছে না। এ কারণে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না। যে দাম বেধে দেয়া হচ্ছে, তা কোনোটাই মানা হচ্ছে না এবং বাজারে এসবের কোনো রিফলেক্সশন নেই। আমার সময়ে এটা রিফলেকশন হতো। কিন্তু এখন তারা জিনিসটাকে সঠিকভাবে হ্যান্ডেল করতে পারছে না।’
সিন্ডিকেট সরকারকে কোনো পাত্তা দিচ্ছে না উল্লেখ জি এম কাদের বলেন, ‘যেখানে সরকারের ইনন্টারফেয়ার করার কথা, সরকারের কিছু দায়িত্ব থাকে। ওই সব জায়গায় তারা সঠিকভাবে কিছু করছে, এ ধরনের কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি। এ কারণে দ্রব্যমূল্য সরকার যাই বেধে দিয়ে থাকুক, বাজারে এর চেয়ে মূল্য বেশি। কৃষকরা অনেক সময় কম দামে দিচ্ছে শহরে তা অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এবং সেটা করা হচ্ছে অযৌক্তিকভাবে। তা নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো রকম কোনো বন্দোবস্ত বা পদক্ষেপ জনগণের চোখে পড়ছে না। দ্রব্যমূল্যের চাপে মানুষ অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় আছে। এটা একটা দুর্বিসহ অবস্থা।’
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত চিন্তা করছি ৩০০ আসনে করব। ভবিষ্যতে কী করব, ভবিষ্যতের অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা হবে। যেহেতু এখনো রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক অস্থিতিশীল, অনিশ্চিত, অস্বচ্ছ। সবকিছু জেনে বিবেচনায় নিতে হবে। সবাই আমার মনে হয় এই অনিশ্চয়তার দিকে তাকিয়ে আছে। সরকার এক ধরনের নির্বাচন করতে চাচ্ছে, সরকারের বিপক্ষ আরেক ধরনের নির্বাচন করতে চাইছে। কোন পদ্ধতিতে আসলে নির্বাচন হবে, সেটাই আমরা জানি না। নির্বাচন সঠিক পথে সঠিক সময়ে হবে কি-না, এটা নিয়ে জনগণের মধ্যে অনেক কানাঘুষা আছে সন্দেহ আছে, আশঙ্কা আছে। সব মিলিয়ে আমরা এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না সঠিকভাবে। শেষ পর্যন্ত কে লড়বেন আর কে থাকবেন সেটাও অনিশ্চিত। রংপুর-৩ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত নিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
সম্প্রতি রওশন এরশাদ ৩০০ আসনে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, ‘উনি (রওশন এরশাদ) যে কেন বলেছেন তা আমি জানি না। ওনার এ ধরনের সিদ্ধান্তের কথা বলার কোনো অথরিটি নেই, কর্তৃত্ব নেই। সেই ক্ষমতাও নেই। একজন সম্মানি ব্যক্তি হিসেবে আমরা ওনাকে পৃষ্ঠপোষক করে রেখেছি। ওনার কোনো ডিসিশন মেকিংয়ের ক্ষমতা নেই। ওনি মাঝে মাঝে আমাদের বলতে পারেন, ওনার কথাগুলো আমরা গ্রহণ করতেও পারি, নাও করতে পারি। এ ধরনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আমাদের দলের কোনো সিদ্ধান্ত হলে সেটা প্রেসিডিয়ামের সিদ্ধান্তের আলোকেই হবে। প্রেসিডিয়ামের সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, যে কোনো সিদ্ধান্ত চেয়ারম্যান অথবা মহাসচিব জানাবেন। অন্য কেউ যদি কোনো কিছু বলেন সেটা তার ব্যক্তিগত মতামত।’
এ সময় তার সাথে ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি শেরিফা কাদের এমপি, অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান আদেলুর রহমান আদেল এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা সদস্য সচিব সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাফিউল ইসলাম সাফি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লোকমান হোসেন, জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল মামুন প্রমুখ।
এর আগে সকালে ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুরে পৌঁছান জি এম কাদের। সেখানে তাকে জাতীয় পার্টির রংপুর বিভাগের নেতাকর্মীরা ফুলেল শুভেচ্ছায় অভ্যর্থনা জানান। দুপুর সাড়ে ১২ টায় তিনি পল্লী নিবাসে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম হুসেইন মহুম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত করেন। সূরা ফাতেহা পাঠা ছাড়াও তার রুহের মাগফেরাত কামনায় মোনাজাতে অংশ নেন।
গতকাল শুক্রবার নিজস্ব বাসভবন স্কাইভিউতে রাত যাপন করে শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) লালমানিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন তিনি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com