রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আজ ৮৯তম জন্মবার্ষিকী নগরকান্দায় দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ওসি, সাংবাদিকসহ আহত- ৩০ কালীগঞ্জে নানা সংকটে গ্রাম আদালত সুফল পেতে প্রয়োজন কার্যকরী উদ্যোগ কটিয়াদীতে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন, ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ মুন্সীগঞ্জে লুন্ঠিত মালামালসহ ৭ ডাকাত গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে বর্ণিল পিঠা উৎসব ছয় মাসেও উদ্ধার হয়নি নিখোঁজ অন্তঃস্বত্তা গৃহবধূ স্বপ্না হিলির রেললাইনের ধারে খেজুর রস নামাতে ব্যস্ত গাছিরা মোহাম্মদিয়া ইসলামী যুব সংঘের উদ্যোগে তাফসীরুল কোরআন মাহফিল সম্পন্ন গাইবান্ধায় ছোটবোন ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে নির্যাতিত গৃহবধূর সংবাদ সম্মেলন

চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয় বিজ্ঞান ক্লাস নেন কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর ও অফিস সহকারী

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যায়লটিতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ সকল বিষয়ের ১৫ জন শিক্ষকের বিপরীতে ১৪ জন শিক্ষক রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক বাদ দিলে ১২ জন সহকারী শিক্ষক রয়েছে। আর একটি মাত্র পদ শূণ্য (ইসলাম শিক্ষা) রয়েছে। বিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেণির দুইজন (কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর ও অফিস সহকারী) এবং ৪র্থ শ্রেণির ৫ জন কর্মচারী রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও এখানে প্রায়ই ক্লাস করান কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর ও অফিস সহকারী। বিষয়টি অনেক দিন ধরে চলতে থাকলেও গেল বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) নজরে আসে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আজিজুর রহমানের। জানা যায়, চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি গরুর হাটের গরু ওই স্কুলের মাঠে গরু বোঝাই গাড়ী লোড-আনলোড করা হয় এমন খররের ভিত্তিতে গত ২১ সেপ্টেম্বর ইউএনও পরিদর্শনে যান। এ সময় ঘটনার সত্যতাও পান তিনি। পরে বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলতে যান অফিস কক্ষে। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেদিন অনুপস্থিত ছিলেন। পরে সহকারী প্রধান শিক্ষককে খোঁজ করলে তাকেও পাওয়া যায়নি বিদ্যালয়ে। পুরো বিষয়টি ইউএনও’র কাছে অসংগতি মনে হলে তিনি বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ক শাখার ক্লাস রুমে যান এবং সেখানে গিয়ে দেখেন স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর রায়হান মিয়া বিজ্ঞানের ক্লাস নিচ্ছেন। এ সময় তার আচরণ ও ক্লাস নেওয়ার ধরণ শিক্ষক সুলভ না হওয়ায় ইউএনও তাঁর পরিচয় জানতে চান। পরে তিনি তার পরিচয় দেন এবং জানান এই বিষয়ের শিক্ষক প্রশিক্ষণে আছেন, তাই তিনি পক্সি দিচ্ছেন। এ সময় ইউএনও ক্লাসের শিক্ষার্থীদের (ছাত্র ও ছাত্রী) সাথে কথা বলে জানতে পারেন এই স্যার (কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর) প্রায়ই তাদের ক্লাস নেন। ইউএনও ওই ক্লাস রুম থেকে পাশের ৬ষ্ঠ শ্রেণির খ শাখার ক্লাস রুমে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন সামাজিক বিজ্ঞানের ক্লাস নিচ্ছেন মো. মনিরুজ্জামান নামে একজন। এখানে তার পরিচয় জানতে চাওয়া হলে তিনি ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী বলে জানান। তখন তিনিও বলেন এই বিষয়ের শিক্ষক প্রশিক্ষণে তাই তিনি পক্সি দিচ্ছেন। তবে এখানেও ক্লাসের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায় এই স্যার (অফিস সহকারী) প্রায়ই ক্লাস করান। এরই মধ্যে ইউএনও আসার খবর শুনে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নিখিল দেবনাথ বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন এবং ইউএনও’র সাথে কথা বলেন। তিনি জানান বিদ্যালয়ের একটি কাজে বাহিরে গিয়ে ছিলেন। পরে ইউএনও বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে হাজিরা খাতা দেখে অসন্তুস্টি প্রকাশ করেন এবং পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর না করে সহকারী প্রধান শিক্ষককে বলে যান পরিদর্শন বই নিয়ে ইউএনও অফিসে যাওয়ার কথা বলে তিনি বিদায় নেন। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, এটি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলেও এখানে মানা হয়না কোন নিয়মনীতি। যে কারণে এখানে প্রতিবছর ফলাফলও প্রত্যাশিতভাবে সাফল্য আসে না। এ ব্যাপারে চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার দেবনাথ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ৫৬৪ জন। এখানে শিক্ষার্থী বেশী থাকায় ষষ্ঠ, সপ্তম ও নবম শ্রেণিতে দুটি করে শাখা করা হয়েছে। কিন্তু শাখার অনুমোদন না থাকায় সরকারিভাবে আমরা শিক্ষক পাচ্ছি না। শিক্ষকের সংকট রয়েছে বিধায় মাঝে মধ্যে তাদের দিয়ে ক্লাস করানো হয়। তবে তাদের মধ্যে একজন অনার্স এবং অন্যজন বিএ পাশ করা বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর-ই-জান্নাত বলেন, উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়েই ২/১ জন করে শিক্ষক পদ শূণ্য রয়েছে। তবে যেহেতু এনটিআরসি এখন নিয়োগ দিচ্ছে পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়গুলোর শূন্যপদ পূরণ হয়ে যাবে। তবে আমার জানা মতে চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয়ে ইসলাম শিক্ষার একজন শিক্ষক ছাড়া আর কোন পদ শূন্য নেই। তবে তারা কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর ও অফিস সহকারী দিয়ে ক্লাস করিয়ে থাকলে বিষয়টি আমার জানা নেই। এটা স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজস্ব রুটিনে করে থাকতে পারে। তবে আমার প্রতিটি বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর শিক্ষকদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আজিজুর রহমান বলেন, আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে আসতে বলেছি। উনারা আসলে কথা বলে প্রয়োজনীয় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com