চিকিৎসা-বিজ্ঞানে অবদান রাখায় চলতি বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন হাঙ্গেরিয়ান-মার্কিন বিজ্ঞানী ক্যাটালিন কারিকো এবং মার্কিন বিজ্ঞানী ড্রিউ উইসম্যান। কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে কার্যকর এমআরএনএ টিকার বিকাশে সহায়ক নিউক্লিওসাইড বেস পরিবর্তনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের জন্য এই পুরস্কার পেলেন তারা। গতকাল সোমবার (২ অক্টোবর) সুইডেনের নোবেল অ্যাসেম্বলি চিকিৎসায় চলতি বছরের নোবেল-জয়ী হিসেবে তাদের নাম ঘোষণা করেছে।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে এমআরএনএ টিকার বিকাশে সহায়ক নিউক্লিওসাইড বেস পরিবর্তনে আবিষ্কারে এই পুরস্কার পেলেন তারা। তারা যে প্রযুক্তিটি আবিষ্কার করেছেন করোনা মহামারীর আগে তা পরীক্ষামূলক ছিল। এখন তা ব্যবহার করে বহু মানুষকে প্রাণঘাতী করোনার প্রতিষেধক ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও মডার্নার করোনা টিকা এমআরএনএ প্রযুক্তির। একই প্রযুক্তি ক্যানসারের পাশাপাশি অন্য গবেষণা কাজেও ব্যবহার হচ্ছে।
নোবেল পুরস্কার কমিটি ঘোষণা বলেছে, ‘আধুনিক সময়ে মানব স্বাস্থ্যে সবচেয়ে বড় হুমকির মধ্যে ভ্যাকসিন উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকায় অবদান রেখেছেন বিজয়ীরা।’ প্রতিবছরের অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার থেকে পরবর্তী পাঁচ দিনে (ছয় দিন) মোট ছয়টি বিভাগে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা হয় নরওয়ে থেকে। সাহিত্য ও অর্থনীতির মতো অন্য পুরস্কারগুলো সুইডেন থেকে ঘোষণা করা হয়। নোবেল কমিটির ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) পদার্থে, আর বুধবার (৪ অক্টোবর) রসায়নে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। এরপর বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সাহিত্যে, আর শুক্রবার (৬ অক্টোবর) শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম জানা যাবে। দু’দিন বিরতি দিয়ে ৯ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে অর্থনীতির নোবেল।
উল্লেখ্য, ১৮৯৫ সালের নভেম্বর মাসে আলফ্রেড নোবেল তার মোট উপার্জনের ৯৪ শতাংশ (৩ কোটি সুইডিশ ক্রোনার) দিয়ে তার উইলের মাধ্যমে নোবেল পুরষ্কার প্রবর্তন করেন। এই বিপুল অর্থ দিয়েই শুরু হয় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান। ১৯৬৮-তে তালিকায় যুক্ত হয় অর্থনীতি। পুরস্কার ঘোষণার আগেই মৃত্যুবরণ করেছিলেন আলফ্রেড নোবেল। তার মৃত্যুর পাঁচ বছর পর ১৯০১ সাল থেকে এ পুরস্কার দেয়া শুরু হয়। পরে আইনসভার অনুমোদন শেষে তার উইল অনুযায়ী নোবেল ফাউন্ডেশন গঠিত হয়। তাদের ওপর দায়িত্ব বর্তায় আলফ্রেড নোবেলের রেখে যাওয়া অর্থের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ন করা এবং নোবেল পুরষ্কারের সার্বিক ব্যবস্থাপনা করা। আর বিজয়ী নির্বাচনের দায়িত্ব সুইডিশ একাডেমি আর নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটিকে ভাগ করে দেয়া হয়।