আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কেউ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চালালে দেশের মানুষ তা প্রতিহত করবে। একইভাবে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার প্রক্রিয়া কখনো বিদেশীরাও সমর্থন করে না।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে একুশে পত্রিকা’র সম্পাদক আজাদ তালুকদারের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব বলেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করবে না, এতেই প্রমাণিত হয় তারা নির্বাচনকে ভয় পাচ্ছে। কারণ তাদের কর্মসূচি ও সমাবেশগুলোতে মানুষ হচ্ছে না। ফলে তারা বুঝতে পেরেছে নির্বাচনে জয়লাভের সম্ভাবনা নাই। এ জন্য নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার পথে তারা হাঁটছে। কিন্তু সেটি এই দেশের মানুষ হতে দেবে না।’ চট্টগ্রামে রোডমার্চ শেষে বিএনপি সরকারকে ১৮ তারিখের মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছে, এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ রকম আল্টিমেটাম তো বিএনপি গত ১৩-১৪ বছরে বহুবার দিয়েছে। গত ডিসেম্বরেও তাদের আল্টিমেটাম ছিল, তারপর খালেদা জিয়াকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিদেশ পাঠানোর আল্টিমেটামও ছিল। এখন ১৮ তারিখ আবার আল্টিমেটাম দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই আল্টিমেটাম কি এ বছরের ১৮ তারিখ নাকি আগামী বছরের ১৮ তারিখ, নাকি তারও পরের বছরের ১৮ তারিখ সেটিও অনেকে প্রশ্ন রেখেছে। বিএনপির আল্টিমেটাম ফাঁকা বুলি ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব চট্টগ্রামে রোডমার্চ শেষে বক্তব্য রাখার সময়ে সেখানে যে সংখ্যক মানুষ হয়েছে, চট্টগ্রামের লালদিঘির পাড়ে অনেক সময় যখন পাগল নাচে তখনো এর কাছাকাছি মানুষই হয়। সুতরাং কর্মসূচিতে লোক সমাগম সেভাবে না হওয়ায় তারা প্রচ- হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।’ বিএনপি আশা করেছিল, বিদেশীরা তাদেরকে কোলে করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে, সেই আশাও বুমেরাং হয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সফর এবং জি-২০ সম্মেলনে জো বাইডেনসহ অন্যান্য বিশ্বনেতাদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর যে শুভেচ্ছা বিনিময় ও বৈঠক হয়েছে, এতেও বিএনপি হতাশ হয়ে পড়েছে।’ এর আগে শোকসভায় প্রয়াত একুশে পত্রিকা সম্পাদক আজাদ তালুকদারের রুহের শান্তি কামনা করে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি যেমন অকুতোভয় সাংবাদিক ছিলেন, একই সাথে তিনি একজন লড়াকু মানুষ ছিলেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার পর তিনি জানতেন, ধীরে ধীরে তার জীবন প্রদীপ নিভে যাচ্ছে। তিনি কিন্তু ক্ষান্ত হননি, দমে যাননি, অবিরত লড়াই করেছেন।
একজন মেধাবী সাংবাদিক অল্প বয়সে চলে যাওয়া অত্যন্ত বেদনার উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজাদ তালুকদারের মৃত্যুর ক’দিন আগে আমি যখন হাসপাতালে তাকে দেখতে যাই, তখন তিনি যেভাবে মৃত্যুর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং মৃত্যুর পর কী করতে হবে দু’একটি কথাও আমাকে বলেছেন, মৃত্যুপথযাত্রীর সেই চারিত্রিক দৃঢ়তা আমি তার মধ্যে দেখেছি।
একুশে পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নজরুল কবির দীপু’র সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজির ভিসি অধ্যাপক ড. ওবায়দুল করিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মো: সেকান্দর চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, বিএফইউজে’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কাজী মহসিন, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুবেল খান, সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ ও ক্রীড়া সম্পাদক সোহেল সরওয়ার। সূত্র : বাসস