ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের উদ্যোগে সড়ক,রেলপথ অবরোধ
দেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ সরকারের একতরফা নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার ষড়যন্ত্র কোন ভাবেই মেনে নেবে না এবং শেখ হাসিনার দলীয় সরকারের অধীনে দেশে কোন নির্বাচনও হতে দেবে না বলে সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরায় নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে এবং জামায়াত সহ বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে বাধাদান, উপর্যুপরি হামলা, গুলীবর্ষণ ও হত্যাকা-ের প্রতিবাদ ১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ৩ দিনের সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত উত্তরায় রেলপথ অবরোধকালে এসব কথা বলেন। অবরোধ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জামাল উদ্দীন, জামায়াত নেতা মাহবুবুল আলম, মাজহারুল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান প্রমূখ।
ড. রেজাউল করিম বলেন, আজকের অবরোধ বিনা ভোটের সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অবরোধ; আজকের অবরোধ আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেলারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও মহানগরী উত্তর আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে মুক্ত করার অবরোধ, আজকের অবরোধ গণমানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার অবরোধ, সর্বোপরি দুর্নীতিবাজ, খুনী ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে বিক্ষুদ্ধ জনতার সর্বাত্মক অবরোধ। এই কঠোর অবরোধের মাধ্যমেই ফ্যাসীবাদী, স্বৈরাচারি ও জুলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি সরকারকে শুভ বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে গণদাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ এবং আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহবান জানান। অন্যথায় তাদের পরিণতি শুভ হবে না।
তিনি বলেন, দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নৈশ্যভোটের সরকারকে ইতোমধ্যেই লালকার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। জোর করে তাদের পক্ষে আর ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই। তা উপলব্ধি করতে পেরেই গণবিচ্ছিন্ন সরকার জনগণের ওপর পুলিশ বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছে। কিন্তু পুলিশ দিয়ে জনতার যৌক্তিক আন্দোলন কোন ভাবেই দমন করা যাবে না বরং বীর জনতা সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করেই স্বৈরাচারি সরকারের পতন ঘটাবে ইনশাআল্লাহ।
মহানগরী উত্তর সেক্রেটারি বলেন, আওয়ালীগ সরকার নির্লজ্জ সরকার। তারা একজন বিচারপতিকে দলীয় আখ্যা দিয়ে সারাদেশেই এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে দানবীয় উম্মত্ততাই মেতে উঠেছিল। এখন তারাই আবার নিজেদের দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার দিবাস্বপ্নে বিভোর। কিন্তু জনগণ তাদের এই পরিকল্পনা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি সরকারকে জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি মেনে নেওয়ার আহবান জানান। অন্যথায় তাদেরকে গণরোষের মুখোমুখি হতে হবে।
শেওড়াপাড়া তালতলা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসীবাদী, জুলুমবাজ ও নৈশ্যভোটের সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে এসে সর্বাত্মকভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে সরকারের প্রতি গণঅনাস্থা জানিয়েছে। তাই এই সরকারের আর এক মহুর্তও ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। তিনি অবলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান। অন্যথায় জনগণ রাজপথেই সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করবে।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার মিরপুরের শেওড়াপাড়ার নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে এবং জামায়াত সহ বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে বাধাদান, উপর্যুপরি হামলা, গুলীবর্ষণ ও হত্যাকা-ের প্রতিবাদ ১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ৩ দিনের সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় অবরোধ কর্মসূচি পালনকালে এসব কথা বলেন। এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য আবু নকিব, আব্দুল আউয়াল আজম, এ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ ও এ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব প্রমূখ।
মহাখালী-তেজগাঁ রেলপথ অবরোধ: ৭২ ঘন্টার লাগাতর সড়ক, রেল ও নৌপথ অববোধের অংশ হিসাবে হাতিরঝিল-তেজগাঁও অ লের উদ্যোগে সকাল ৭.৪৫টা থেকে ৮.১০ পর্যন্ত তেজগাঁও-মহাখালী রেলপথ অবরোধ করেছে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকারের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত অবরোধ কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য আমিনুল ইসলাম, এডভোকেট জিল্লুর রহমান, আলাউদ্দিন, সাবেক ছাত্রনেতা কলিম উল্লাহ, মনির আহমেদ, ছাত্রনেতা নাজিমুদ্দিন প্রমূখ।
তুরাগে অবরোধ: অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসাবে তুরাগ থানায় সড়ক পথ অবরোধ কর্মসূচী পালিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি মহিবুল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন তুরাগ উত্তরের আমির মতিউর রহমান, তুরাগ দক্ষিণের আমির মাহবুবুল আলম, তুরাগ মধ্য নায়েবে আমীর কামরুল হাসান ও সেক্রেটারি মুহিব্বুলাহ প্রমূখ। উল্লেখ্য উত্তরা ১০ নাম্বার সেক্টরে অবরোধ কর্মসূচী পালিত হয়।
রাজধানীর মহাখালীতে অবরোধ: বৃহত্তর গুলশান থানার থানার উদ্যোগে রাজধানীর মহাখালীতে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন গুলশান পূর্ব থানা আমীর আবু জুনায়েদ, গুলশান পশ্চিম থানা আমীর মাহমুদুর রহমান ও বনানী থানা সেক্রেটারি আবু মাবরুর প্রমূখ।
মোহাম্মদপুর অঞ্চল: অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসাবে মোহাম্মদপুর অ লের মিছিল ও সড়ক অবরোধ করা হয়। মোহাম্মদপুর পশ্চিম থানা আমীর ডা. শফিউর রহমানের নেতৃত্বে কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদপুর পূর্ব থানা জনাব মশিউর রহমান, মোহাম্মদপুর পশ্চিম থানা সেক্রেটারি জনাব মাসুদুজ্জামান সহ অ লের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। এসময় উপস্থিত নেতা কর্মীরা বসিলা সড়কে মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
রূপনগর: অবরোধের সমর্থনে রূপনগর থানার উদ্যোগে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি মিরপুর ১২ নং এর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষ হয়। উপস্থিত ছিলেন সহকারী জোন পরিচালক মো: নাসির উদ্দীন, পল্লবী উত্তর থানা আমীর মাও: সাইফুল কাদের, যুব বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুল বান্না চপল, পল্লবী মধ্য থানা সেক্রেটারি যোবায়ের হোসাইন রাজন, পল্লবী উঃ থানা সেক্রেটারি মহিউদ্দীন, রূপনগর থানা সেক্রেটারি মোশাররফ হোসেন ভূইয়া, শিবির রূপনগর ও পল্লবী সভাপতি এবং ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দ।