পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতের সাথে আদায় করার বিধান; কিন্তু যারা জামাতে সালাতে অংশগ্রহণ করতে পারেননি, ব্যস্ততার কারণে কিংবা ভ্রমণজনিত কারণে জামাত শেষ হওয়ার পর মসজিদে এসেছেন একাকী সালাত আদায় করবেন। এসে দেখেন, মসজিদ তালাবদ্ধ। তখন বিপদে পড়ে যান। শহর এলাকার প্রায় মসজিদের চিত্রই এমন।
অধিকাংশ মসজিদ সালাতের পরেই বন্ধ হয়ে যায়। জামাতের পর যারা আসেন, তারা সালাত পড়তে পারেন না। তাই হয়তো কখনো সে ওয়াক্তের সালাত কাজা হয়ে যায়।
আবার শহরের মসজিদগুলোতে ফরজ সালাতের জামাতের পরেই মসজিদে বা বারান্দায় কিছু মানুষ একটু আরাম ও বিশ্রাম করতে চান। এই বিশ্রাম গ্রহণ করাটাও দোষের কিছু নয়। বিশেষত রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ইত্যাদি এলাকার মসজিদগুলোতে মুসাফিরদের জন্য একটু বসার স্থান করে দেয়া উচিত। যাতে করে একজন মুসল্লি আরামে ইস্তিঞ্জা-অজু সেরে সালাত পড়তে পারেন। নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষাও করতে পারেন।
অনেক মসজিদে সালাতের পর এসি বা ফ্যানের নিচে কয়েক মিনিট বসাও যায় না। দায়িত্বশীল মুয়াজ্জিন বা কেউ এসে বন্ধ করে দেন। এতে করে মুসাফিরদের কষ্ট হয়। ক্লান্ত শ্রান্ত মুসাফির পথিকও একজন মেহমান। তারও কিছু হক রয়েছে। দায়িত্বশীলদের প্রতি আহ্বান- সালাতের পর কিছু সময় মসজিদ বা বারান্দা খোলা রাখতে পারেন, পথচারী মুসাফিরদের সালাত আদায় ও বিশ্রামের জন্য। মসজিদ কমিটিরও এ বিষয়গুলো বোঝা উচিত, মসজিদে আগত সব মুসল্লি যাতে আরামে একটু সময় বসতে পারেন। সালাত ও জরুরি প্রয়োজন পূরণ করতে পারেন। প্রফুল্লচিত্তে ইবাদত করতে পারেন। এই ব্যবস্থাটুকু অন্তত রাখা দরকার।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, (পুণ্য রয়েছে তোমাদের জন্য,) যারা অর্থের প্রতি ভালোবাসা সত্ত্বেও আত্মীয়স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত মুসাফির, ভিক্ষুক ও দাসমুক্তির জন্য দান করে। (সূরা বাকারাহ : ১৭৭)
এ আয়াতে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে মুসাফিরদের জন্যও খরচ করতে বলা হয়েছে। আমরা যদি পথচারী মুসাফির ভাইদের জন্য অন্তত এ খেদমতটুকু করতে পারি অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা আমাদের দ্বিগুণ প্রতিদান দান করবেন। লেখক : খতিব, ভবানীপুর মাইজপাড়া হক্কানি জামে মসজিদ, গাজীপুর