অবরোধের সমর্থনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে রাজধানীর উত্তরায় মিছিল ও পিকেটিং করেছে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল। গতকাল সোমবার সকাল ৭টায় মিছিলটি উত্তরায় ৪ নম্বর সেক্টর পার্কের উত্তর দিক থেকে শুরু হয়ে ঢাকা-গাজীপুর প্রধান সড়কে পৌঁছে শেষ হয়।
মিছিলে মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, উত্তরের আহ্বায়ক পেয়ারী মোস্তফা, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট রুনা, মহিলা দল নেত্রী জাকিয়া সুলতানা, পারভিন, নাজমা শিকদার, তামান্না, তহমিনাসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘একতরফা নির্বাচনের নামে দেশে চরম তামাশা চলছে। নির্বাচন কমিশন সরকারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী প্রার্থী বাছাই করে করে দিচ্ছে। কোন আসনে কে নির্বাচন করবে তাও ঠিক করে দিচ্ছে কমিশন। সেখানে যাকে রাখার দরকার তাকে রেখে বাকিদের মনোনয়ন বাতিল করছে। জাতির সাথে এমন প্রহসনের খেলা বন্ধ করুন। অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। তা না হলে জনগণ আপনাদের ছাড়বে না।’
রিজভী আরো বলেন, ‘সাজানো নির্বাচনের নামে দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে বর্তমান সরকার। দেশ ধ্বংস হয় হোক, সেদিকে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। আজকে দেশের উৎপাদনমুখী সকল সেক্টর ভয়বহ হুমকিতে পড়েছে। আমদানি-রফতানি প্রায় বন্ধ। লুটপাটের কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ এখন দিশেহারা। শাক-সবজি থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্য এখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। গরিব মানুষগুলো একবেলা পেট ভরে খেতে পারছে না। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে তারা। এ অভুক্ত জনগণের রোষানল থেকে আপনারা বাঁচতে পারবেন না।’
রিজভীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা বেআইনি সমাবেশ, গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর ফলে মামলাটির বিচার আনুষ্ঠানিক শুরু হলো। একই মামলায় রুহুল কবির রিজভী পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।
গতকাল সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত এই আদেশ দেন। আগামী ৪ জানুয়ারি এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয়েছে। বিচার শুরু হওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন বরকত উল্লাহ বুলু, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সাইফুল আলম নীরব, ইসহাক সরকারসহ প্রমুখ। আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আসামিদের পক্ষের অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেছি। আদালত তা নামঞ্জুর করে চার্জগঠনের আদেশ দিয়েছেন। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারি রাতে মোহাম্মদপুর থানার বেড়িবাঁধ এলাকায় যাত্রীবাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে ৬/৭ জন যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হন। পরে তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর ১৮ জানুয়ারি মামলাটি দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট একই থানার সাব-ইন্সপেক্টর কমল কৃষ্ণ সাহা মামলা তদন্ত করে ৪৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।