বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
কয়রায় সড়কের কাজ ফেলে ঠিকাদার লাপাত্তা, জনদুর্ভোগ চরমে ধনবাড়ীতে বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ঢেঁকি মৌলভীবাজার জেলার ৫ উপজেলা ও ৫ পৌর শাখা বিএনপির আহবায়ক কমিটি অনুমোদন নড়াইলে তারুণ্যের উৎসবে বালক-বালিকাদের সাইক্লিং প্রতিযোগিতা লোহাগাড়া প্রেসক্লাবের উদ্যােগে পত্রিকার হকার ও অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কালকিনিতে জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুর্ধ্ব ১৭ এর ফাইনাল ম্যাচ নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াজেদকে ফুলেল শুভেচছা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান শ্রীমঙ্গলে কৃষি জমি থেকে মাটি কাটার অপরাধে লাখ টাকা জরিমানা শিক্ষকের দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং সাবেক এমপি’র তারাকান্দায় তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মশালা

দেশে গণতন্ত্র না থাকলে মানবাধিকার থাকে না 

শাহ্জাহান সাজু:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

মানবাধিকার দিবসের মানববন্ধন লোকারণ্য
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে মানববন্ধন করছে বিএনপি। কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণ। রোববার সকাল ১০টা ৫৫মিনিটে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির উদ্যোগে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। গতকাল সকাল পৌনে ১০টা থেকে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল, মৎস্যজীবী দলসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। এসময় নেতাকর্মীরা মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, জেলে নিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না, অবৈধ নির্বাচন মানি না মানবো না সহ বিভিন্ন স্লোগানে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তুলেন।
এদিকে বিএনপির মানববন্ধন কর্মসূচিকে ঘিরে প্রেস ক্লাব এবং এর আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জলকামান এবং এপিসিও রাখা হয়। পাশাপাশি সাদা পোশাকেও ছিলেন বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন তারা। মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত আছেন।
দেশে গণতন্ত্র-আইনের শাসন না থাকলে মানবাধিকার থাকে না : গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় ভিন্নমতের মানুষকে গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত রাজধানীর বিজয়নগর পানিরট্যাংকির সামনে সমাবেশ শেষে র‍্যালি বের করে পল্টন মোড়, প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট মোড়ের কদম ফোয়ারা, দৈনিক বাংলা, ফকিরাপুল, বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক ও নাইটিংগেল মোড়ে ঘুরে পানিরট্যাংকির মোড়ে এসে শেষ হয়।
র‍্যালি পূর্ব সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, দেশে গণতন্ত্র-আইনের শাসন না থাকলে মানবাধিকার থাকে না। দেশে মানবাধিকার নাই, তাই মানবাধিকার দিবসে আজকে আমাদেরকে রাস্তায় নামতে হয়েছে। ১৯৭১ সালে আমরা একটা স্বাধীন ভূখ- পেলেও স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য; রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক মুক্তি অর্জন করতে পারিনি। এ দেশের নির্বাচনে কারা সরকার গঠন করবে, কারা বিরোধী দল হবে, কারা এমপি হবে সেটা ঠিক করে দিচ্ছে পাশের দেশ। আওয়ামী লীগ ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশটাকে ধ্বংস করছে। সরকার দেশের নিজস্ব কাঁচামালের পাট, চিনি, চামড়া শিল্প ধ্বংস করেছে। এখন ভারতীয় ষড়যন্ত্রে রফতানি খাতের ‘সোনার ডিম পাড়া হাস’ গার্মেন্টসকেও ধ্বংসের দিকে নিচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজ হয়েছে গার্মেন্টস শিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসছে পারে। তিনি বলেন, পুলিশ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে হয়রানি করছে, মোটা অংকের টাকা নিচ্ছে। গতরাতে আমাদের নারায়ণগঞ্জের এক নেতাকে না পেয়ে তার ভাইকে গ্রেফতার করেছিলো। যাকে আটক করে সে একজন অসুস্থ মানুষ, আজকে তার অপারেশন। মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তারপর ছাড়ছে। এর আগে হাতিরঝিল থানায় আমাদের গণনেতা উজ্জলকে আটক করে, আমি ফোন দিলে ওসি বলে ভাই আপনারা মিছিল মিটিং করেন, ছবি তুলে, ভিডিও করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠান। আমাদেরও কিছু করে উপরে দেখাতে হয়। এভাবে প্রত্যেক থানায় গ্রেফতারের টার্গেট দেয়া হয়, মামলার টার্গেট দেয়া হয়। পুলিশ মৃত মানুষকে দৌড়াতে দেখে, মৃত মানুষকে মামলার আসামি করে। পুলিশ যে এভাবে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে, হয়রানি করছে সেটা পরিষ্কার। বিরোধী দল দমনে পুলিশ এখন রক্ষী বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠায় পুলিশ আওয়ামী সরকারের গোলামি করতে গিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। এভাবে চলতে থাকলে র‍্যাবের মতো পুলিশের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আসবে।
নুর বলেন, এই আন্দোলন শুধু বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদের আন্দোলন নয়, এটা গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। সকলকে এই আন্দোলনে শরীক হতে হবে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনকে প্রতিহত করতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিটি এলাকায় গণপ্রতিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁন বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণ রাজপথে নেমেছে। গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন, আজকে বিএনপি-জামায়াত নাশকতা করবে। কিন্তু কোথাও নাশকতা হয়নি। বরং সকালে জামায়াতের মানববন্ধনে লাঠিচার্জ ও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সর্বত্র সরকার জামায়াত জুজু সৃষ্টি করেছে। অথচ ১৯৯৬ সালে জামায়াতকে সাথে নিয়েই আওয়ামী লীগ আন্দোলন করেছিলো। এই গণবিরোধী সরকারের আমলে প্রতিটা নিত্যপণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে, দেশে দুর্ভিক্ষ লেগে গেছে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি দুই স্বৈরাচার মিলে নির্বাচনের নামে তামাশা করছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে এই দুই স্বৈরাচার, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার হরনকারী আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে বয়কট ঘোষণা করা হলো। পুলিশও চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। মৃত ব্যক্তিদের দৌড়ে পালাতে দেখছে। চট্টগ্রামের এক ওসি মাসে দেড় কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে বলে নিউজ হয়েছে। বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের নামে বাণিজ্য করছে। এভাবেই রাষ্ট্রের প্রতিটা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে সরকার। এই রাষ্ট্রের সংস্কারের জন্যই রাজপথে নেমেছি আমরা।
সমাবেশে স ালনা করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিল উজ্জামান, ফাতিমা তাসনিম, সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, মশিউর রহমান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খালিদ হাসান, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট শওকত, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা সম্পদ, গণঅধিকার পরিষদ মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল, উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান প্রমুখ।
মানবাধিকার দিবসে লেবার পার্টির মানববন্ধন: দেশের এখন মানবাধিকার বলতে কিছু বাকি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা: মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ বিগত ১৫ বছরের দুঃশাসনের মাধ্যমে দেশের মানবাধিকার, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারকে কবরে পাঠিয়েছে। বাংলাদেশের এখন মানবাধিকার বলতে কিছু অবশিষ্ট নেই। এখন ঘরে থাকলে খুন আর বাইরে গেলে গুম। সরকার আইনশৃংখলা বাহিনীকে ব্যবহার করে গুম-খুন, অপহরণ-গুপ্ত হত্যা, হামলা-মামলা, নির্যাতন-নিপীড়ন করছে। গতকাল রোববার দুপুরে পুরানা পল্টন সড়কে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মানবাধিকার, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ঢাকা মহানগর আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রহসনের একতরফা নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবি জানিয়ে ডাঃ ইরান বলেন, নির্বাচন কমিশন সংবিধানের দোহাই দিয়ে দেশকে রক্তাক্ত সঙ্ঘাত ও সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। চলমান সঙ্ঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। বিএনপি, জামায়াতসহ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে বাইরে রেখে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। কারণ জনগণ ভোটকেন্দ্রে যাবে না, নির্বাচনের নামে তামাশা জনগণ প্রতিহত করবে।
নগর সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান হিন্দুরত্ম রামকৃষ্ণ সাহা, অ্যাডভোকেট জহুরা খাতুন জুঁই, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম-মহাসচিব আবদুর রহমান খোকন, মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মহিলা সম্পাদিকা নাসিমা নাজনিন সরকার, কেন্দ্রীয় সদস্য শওকত হোসেন, নগর সদস্য মোঃ লিটন, রবিউল ইসলাম, ছাত্রমিশন সভাপতি সৈয়দ মোঃ মিলন ও যুগ্ম-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com