শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদের কালচারাল লিডারশিপ প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত বেরোবিতে চাকরি হল শহীদ আবু সাঈদের বোনের সাহিত্যে নোবেল জিতলেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাবের হোসেন কীভাবে জামিনে মুক্তি পেলেন, প্রশ্ন রিজভীর এবি পার্টির নতুন আহ্বায়ক আব্দুল ওহাব (মিনার) দেশে বাবা-মায়ের সঙ্গে পূজার আনন্দ উপভোগ করা অন্যরকম ব্যাপার: মন্দিরা চক্রবর্তী টানা ছুটিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তীব্র যানজট গণতন্ত্র মানে মানুষের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা : তারেক রহমান ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’ মামলায় দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে যোগ দিয়েছে বলিভিয়া বিএনপির সভামঞ্চে সবাই যেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী!

১৭ই ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ মুক্ত দিবস

এম সাইফুল ইসলাম (কটিয়াদী) কিশোরগঞ্জ
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকালে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানের পক্ষে সেনাপ্রধান জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ নিয়াজী ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে মুক্তিবাহিনীর যৌথ কমান্ডের অধিনায়ক জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মসমর্পণ করে।বিজয় হয় মুক্তিকামী জনতার। বিজয়ের আনন্দে সারাদেশ যখন উত্তাল তখনো কিশোরগঞ্জের মাটিতে উড়ছিল পাকিস্তানি পতাকা। পরদিন ১৭ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় কিশোরগঞ্জ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের আনন্দে সারাদেশ উত্তাল। কিন্তু এদিন বিজয়ের আনন্দ ছিল না কিশোরগঞ্জবাসীর। সেদিনও তাদের মনে ছিল অজানা আতঙ্ক। শহরের নিয়ন্ত্রণ ছিল হানাদার বাহিনীর দোসর এ দেশীয় রাজাকার-আলবদর ও আল শামস বাহিনীর হাতে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১২ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ ছেড়ে গেলেও শহরে শক্ত ঘাঁটি তৈরি করে অবস্থান নেয় স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার-আলবদর বাহিনী। তাদের হাত থেকে কিশোরগঞ্জকে মুক্ত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক প্রস্তুতি নেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন কোম্পানি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কবীর উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে কিশোরগঞ্জ শহর চারদিক থেকে ঘিরে শক্ত অবস্থান নেয় মুক্তিবাহিনী। ওই দিন গভীর রাতে কবীর উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল করিমগঞ্জ থেকে কিশোরগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠে সতাল এলাকায় এসে অবস্থান নেন। অবস্থা বেগতিক দেখে রাজাকার বাহিনী অধ্যাপক জিয়া উদ্দিন আহমেদ (আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক)ও হেলাল উদ্দিনের মাষ্টারের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন বলে খবর পাঠান। রাজাকারদের সাথে আলোচনা চলে রাত বারোটা পর্যন্ত অতঃপর রাজাকাররা বিনা শর্তে আত্মসমর্পণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। রাজাকার কমান্ডার আব্দুর রহমান জামী (মুক্তিযুদ্ধকালীন কটিয়াদী থানার ওসি) মাইকে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণের ঘোষণাটি প্রচার করেন। ১৭ ডিসেম্বর সকালে একটি খোলা জিপে করে মুক্তিযোদ্ধা কবির উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সশস্ত্র দল সর্ব প্রথম কিশোরগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে।আরেকটি দল হান্নান মোল্লা, ছাব্বির আহমেদ মানিক, আনোয়ার কামালের নেতৃত্বে শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল দিয়ে কিশোরগঞ্জে প্রবেশ পথে কামালিয়ারচর ও খিলপাড়া এলাকায় আলবদরদের বাধার সম্মুখীন হন। বাধা অতিক্রম করে এ দলটিও কিশোরগঞ্জে প্রবেশ করে। পরে বিভিন্ন দিক থেকে গেরিলা মুক্তিসেনারা ভারতীয় মিত্র বাহিনীর ক্যাপ্টেন চৌহানের নেতৃত্বে কিশোরগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। শহরের পুরান থানা শহীদি মসজিদ সংলগ্ন ইসলামিয়া ছাত্রাবাস মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার-আলবদর বাহিনী। এর পরপরই বদলে যায় শহরের চিত্র। বিজয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠে চারপাশ। পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে কিশোরগঞ্জের আকাশে উড়ানো হয় স্বাধীন সার্বভৌম প্রিয় বাংলাদেশের রক্তিম পতাকা। মুক্তিযোদ্ধা, মিত্রবাহিনী আর জনতার উলাস ধ্বনি, আনন্দ উচ্ছ্বাস আর মুক্তির চিরন্তন স্বপ্ন বাস্তবায়নের ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় স্বাধীন কিশোরগঞ্জের মুক্ত আকাশ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com