আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২৯শে ডিসেম্বর থেকে ১০ই জানুয়ারি পর্যন্ত দেশব্যাপী সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। আগামী ৭ই জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সেনা মোতায়েনের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও মহানগরের বিভিন্ন ‘নোডাল পয়েন্ট’ ও সুবিধাজনক স্থানে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করবে। চিঠিটি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের কাছে পাঠিয়েছে ইসি। চিঠিতে বলা হয়েছে, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। চিঠিতে বলা হয়েছে, একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে থাকবেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ও বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার লক্ষ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েনে সশস্ত্র বাহিনীকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) ইসির উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে করার নিমিত্ত নির্বাচন কমিশন সম্ভব সব আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার জন্য সার্বিক প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ভোটগ্রহণের আগে, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরে শান্তিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার নিমিত্ত ইন এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ারের আওতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত (যাতায়াত সময়সহ) সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত থাকবে মর্মে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে আরও বলা হয়, এ লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের কয়েকদিন আগে থেকে নির্বাচনী এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভৌত অবকাঠামো এবং নির্বাচনী পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে প্রতি জেলায় সশস্ত্র বাহিনীর ছোট আকারের একটি করে অগ্রবর্তী টিম পাঠানো যেতে পারে।
আরও বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি ও অন্যান্য আইনের বিধান অনুসারে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ইনস্ট্রাকশন রিগার্ডিং এইড টু দ্য সিভিল পাওয়ার-এর ৭ম ও ১০ম অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত হবে। মোতায়েন করা সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচন কাজে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের পরামর্শে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বেসামরিক প্রশাসনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিম্নরূপ সহায়তা করবে।
যেভাবে কাজ করবে সেনাবাহিনী: ইসির চিঠিতে বলা হয়, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা/উপজেলা/মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট এবং সুবিধাজনক স্থানে নিয়োজিত থাকবে। রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে উপজেলা/থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। সশস্ত্র বাহিনীর টিমের সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে এলাকাভিত্তিক ডেপ্লোয়মেন্ট প্ল্যান চূড়ান্ত করা হবে। ভোটগ্রহণের দিন, তার আগে ও পরে কার্যক্রম গ্রহণ এবং মোতায়েনের সময়কালসহ বিস্তারিত পরিকল্পনা ইসিকে অবহিত করতে হবে। এছাড়া বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের অনুরোধক্রমে চাহিদামতো আইনানুগ কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত নির্দেশনা জারি করা হবে।