সবকিছু ঠিক থাকলে ভারতীয় পার্লামেন্ট তথা লোকসভার আগামী নির্বাচনে বারানসি থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী হতে পারেন কুস্তিগির সাক্ষী মালিক। সম্প্রতি ভারতীয় কুস্তি সংস্থার নতুন কমিটিতে বিজেপি এমপি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় সিং সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার দিনই টেবিলে জুতা রেখে কুস্তি থেকে সন্ন্যাস নেয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। তারপরেই ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে সাক্ষীকে মোদির বিরুদ্ধে বারানসি থেকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয় এবং তিনি তাতে একপ্রকার রাজি হয়েছেন বলেই জানা গেছে।
চলতি মাসে রাজধানী দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বারানসি থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ইন্ডিয়া জোটের তরফ থেকে কাউকে প্রার্থী করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মোদির বিরুদ্ধে মহিলা কোনো মুখকে সামনে আনার কথাও মমতা ওইসময় বলেছিলেন। সেই প্রস্তাব মেনেই ওইসময় থেকেই ভাবনা চিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছিল ইন্ডিয়া জোটের অন্দরে।
সাক্ষীকে বেছে নেয়ার কারণ হিসেবে ইন্ডিয়া জোটের এক নেতা বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে মহিলা বিল পাশ করিয়ে নিয়ে দেশজুড়ে তার প্রচার করেন। মহিলাদের জন্য তিনি ও তার দল বিজেপি কতটা দরদি তা সবসময় তুলে ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু আসল চিত্রটা কী, তা দেশের মানুষের জানা দরকার। বিজেপির এমপি ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে মহিলা কুস্তিগিররা বারবার যৌন হেনস্তার অভিযোগে সোচ্চার হওয়ার পরও তার বিরুদ্ধে মোদি সরকার কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি। প্রতিবাদে কুস্তিগিররা পদ্মশ্রী থেকে শুরু করে খেলরতœ, অর্জুনের মতো মোদি সরকারের আমলে দেয়া সব পদক ফিরিয়ে দিচ্ছে। এর চেয়ে খারাপ দিন আর কী হতে পারে। সাক্ষী ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী হলে মানুষের সামনে এই সবকিছু আরো বেশি করে স্পষ্ট হয়ে যাবে।’
এদিকে, ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে আসন ভাগাভাগির কাজ সেরে ফেলার জন্য তৃণমূলের তরফে জোরালো দাবি করা হয়েছে। তাতে সমাজবাদী পার্টির পক্ষ থেকে উত্তরপ্রদেশে তৃণমূল কংগ্রেসকে একটি আসন তারা ছেড়ে দেবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে, কংগ্রেসের সাথে আসন ভাগাভাগি নিয়ে তৃণমূলের এখন পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত রফা হয়নি। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে দুটি আসন ছাড়া হতে পারে এই বার্তা ১৯ ডিসেম্বর ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের দিনই তৃণণূলের পক্ষ থেকে কংগ্রেসকে দিয়ে দেয়া হয়েছিল।
কংগ্রেস আরো বেশি আসন দাবি করলে তাদের আসাম ও মেঘালয়ে একটি করে আসন তৃণমূলকে ছাড়তে হবে– এমন শর্তও দেয়া হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। সেক্ষেত্রে কংগ্রেস কী করে সেদিকে নজর রাখছে তৃণমূল। অন্যদিকে কংগ্রেস সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সাথে তৃণমূলের আসন ভাগাভাগি নিয়ে খোদ সোনিয়া গান্ধী মমতার সাথে ফোনে কথা বলতে পারেন, এমন সম্ভাবনা প্রবল। সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন