প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এই নারায়ণগঞ্জ ইতিহাসের সাক্ষী। বঙ্গবন্ধু ৬ দফার জন্য নারায়ণগঞ্জে মিটিং করেছিলেন, তা হয়েছিল আদমজীতে। ওইদিন রাতেই তাকে আটক করা হয়। নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা কারাগারে। ১৯৬৮ সালে ১৮ জুন ঢাকা কারাগার থেকে ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা আগরতলা মামলা দেয়া হয়। কিন্তু বাঙালিরা সংগ্রাম শুরু করে। ৬ জুন হরতাল ডাকা হয়। এই নারায়ণগঞ্জ থেকে হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় সংগ্রামে যুক্ত হয়েছিল। বিভিন্ন আন্দোলনে, বিভিন্ন সভায় নারায়ণগঞ্জই অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে।’ গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের মাসদাইরে এ কে এম শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে এক নির্বাচনী জনসভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘২০০৮-এর নির্বাচনে বিএনপি ২০ দলীয়ভাবে ও আমরা মহাজোট হয়ে নির্বাচন করি। আমরা ২৩৩ সিটে জয়লাভ করেছিলাম। বিএনপি পায় শুধু ৩০টি সিট। বাকিগুলো জোটের মিত্ররা পেয়েছিল। এ নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায়। তারা নির্বাচন ঠেকাতে আগুনসন্ত্রাস শুরু করে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪-এর নির্বাচন যাতে না হয় সে লক্ষ্যে ২০১৩ থেকেই তারা অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়েছে। মানুষকে পুড়িয়ে ফেলেছে। মানুষকে হত্যা করেছ, সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। এই জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ খুন করাই হলো বিএনপির একমাত্র গুণ।’ তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের দারিদ্র্যের হার কমিয়েছি। শিক্ষার হার বাড়িয়েছি। বিএনপির আমলে শিক্ষার হার কমেছে আর দারিদ্র্যের হার বেড়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা যখন দেশের দায়িত্ব দেন তখন এক টাকাও রিজার্ভ ছিল না। মানুষের ধানের গোলাও ছিল না। পাকিস্তানি আর্মি সব পুড়িয়ে দেয়। শূন্য হাতে বঙ্গবন্ধু দেশের দায়িত্ব নিয়ে দেশকে স্বয়ংসম্পন্ন করেন। প্রতিটি ঘরে ঘরে তিনি রিলিফ পৌঁছে দিয়েছিলেন। তিনি মাত্র তিন বছর সাত মাস দেশ শাসনের সুযোগ পান। এসময় তিনি দেশকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা আমার মা-বাবা, ভাই ও চাচাকেসহ ১৮ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আমি ও আমার ছোট বোন শেখ রেহানা বিদেশ থাকায় প্রাণে বেঁচে যাই। কিন্তু এ বেঁচে থাকাটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।’
জনসভায় উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কায়সার, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের বর্তমান সংসদ ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের র্ব্তমান সংসদ সদস্য ও লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এ কে এম সেলিম ওসমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো: বাদলসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ