সাতক্ষীরায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সরিষার সমারোহ। যেদিকে চোখ যায় হলুদে ছেয়ে রয়েছে চারদিক। যেন বয়ে যাচ্ছে হলুদের ঢেউ। এসব সরিষার ক্ষেতের চারপাশে বসানো হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মৌবক্স। আশা করা হচ্ছে, সরিষা ফুল থেকে দেড় থেকে দুইশত টন মধু উৎপাদন হবে এবার।
সুন্দরবনের খলিশা, বুড়ান, কেওড়া, বাইন, কুল ও সরিষা ফুল থেকে বছরে ৬শ’ টনেরও বেশি মধু আহরণ সম্ভব বলে মনে করেন মৌচাষিরা। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে মধু থেকে সরকারের প্রচুর বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। সাতক্ষীরা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরা জেলায় এবার ১৯ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। মধু আহরণের জন্য এবার শতাধিক মৌচাষি সরিষা ক্ষেতে ১০ হাজারের বেশি মৌবক্স স্থাপন করেছেন। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষা ফুল থেকে প্রায় দেড়শতাধিক টন মধু আহরণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন মৌচাষিরা। আর মধু প্রক্রিয়াজাতকরণ মেশিন স্থাপন করায় যুবকদের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে।
মধু শ্রমিরা আনারুল ইসলাম জানান, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হয় সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ। চলে রাণীসহ মৌবক্স স্থাপনের কাজ। সংগ্রহ করা সরিষা মধুর স্বাদ ও ঘ্রাণ অতুলনীয়। প্রতি কেজি সরিষা মধুর দাম ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মধু শ্রমিরা আরও জানান, প্রতি মাসে সাড়ে ৮ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছি। এতে আমাদের পরিবার নিয়ে সুখে আছি।
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহকারী ও মৌচাষি মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ জানান, সরকারের সহযোগিতা পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে মধু বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে প্রচুর বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন হবে। সাতক্ষীরা জেলা মধু খামার মালিক সমিতির সভাপতি মো. মোশাররফ হোসেন জানান, সুন্দরবনের খলিশা, বুড়ান, কেওড়া, বাইন, কুল ও সরিষা ফুল থেকে বছরে ৬শ টনেরও বেশি মধু আহরণ করা সম্ভব।