রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন

‘লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব’

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৪

জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে বিএনপির প্রতিশ্রুতি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকীতে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন চলমান আছে, নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখব। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব। ইনশাআল্লাহ।’ একই সাথে দলটির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘যতদ্রুত সম্ভব লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে, এদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ ও গণমাধ্যমের সহায়তায় আমরা দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব, ইনশাআল্লাহ।’ গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধা ও মোনাজাত শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তারা। ড. মঈন খান বলেন, ‘দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী পালন করছি আজ। আমাদেরকে উপলদ্ধি করতে হবে এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য। এদেশের গনতন্ত্র আজ মৃত। এটা শুধু আমাদের কথা নয়, বাংলাদেশের মানুষের কথা নয়। বিশ্বের মানবাধিকার, গণতন্ত্রকামী সকল দেশ ও প্রতিষ্ঠান বলেছে, বাংলাদেশ আজ এক দলীয় শাসনে পরিণত হয়েছে। এখানে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই, মানুষের কোনো মৌলিক অধিকার নেই, ভোটের অধিকার নেই।’
অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে এদেশের মানুষ উপার্জন করে ট্যাক্স দেয়। তবুও তাদের মাথার ওপরে ৩০ হাজার কোটি টাকার ঋণ থেকে যায়। আজকের সরকার তেভাগা আন্দোলনের নামে লুটপাট করে বাংলাদশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের যে আদর্শ সেটি নষ্ট করা হচ্ছে, তার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্র আজ নেই, সেটিকে মেরে ফেলা হয়েছে, আর সেই গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করার লড়াই চলছে।’ নির্বাচন নিয়ে টিআইবির প্রকাশ করা প্রতিবেদনকে সরকার বলছে যে ‘বিএনপির হয়ে কাজ করছে টিআইবি’- এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির নেতা মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান হেসে বলেন, ‘এত বছর ধরে বিএনপি যে বিষয় নিয়ে কথা বলেছে বিশ্বের কোনো প্রতিষ্ঠান, কোনো দেশ, কোনো সরকার বলেনি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। সবাই বিএনপির কথা রিপিট করেছে। তারা বলছে, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। আর টিআইবি যা বলছে সেটি জনগণের জনমতের প্রতিফলন।’
জন্মবার্ষিকীতে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা বিএনপির
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের তার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্থায়ী কমিটির দুই সদস্যসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। এরপর ফাতেহা পাঠ শেষে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় উপস্থিত নেতাকর্মীরা মোনাজাতে অংশ নেন। সকাল থেকেই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মাজার প্রাঙ্গনে উপস্থিত হতে থাকেন। তখন নেতাকর্মীরা মিছিল, স্লোগানে জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করেন। ‘আজকের এই দিনে, জিয়া তোমায় মনে পড়ে,’ ‘স্বাধীনতার অপর নাম, জিয়াউর রহমান’ উল্লেখ করে স্লোগান দেন তারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সহ-সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় নিভৃত পল্লী বাগবাড়ীর এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জিয়াউর রহমান। দূরদর্শী ও জনপ্রিয় রাষ্ট্রনায়ক, অসাধারণ দেশপ্রেমিক, অসম সাহসী ও সহজ-সরল ব্যক্তিত্বের প্রতীক হিসেবে জিয়াউর রহমান ইতিহাসে অবিস্মরণীয়। ১৯৮১ সালে কতিপয় বিপথগামী সামরিক কর্মকর্তার হাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে শাহাদতবরণ করেন দেশপ্রেমিক এই রাষ্ট্রনায়ক। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে তার মা-বাবা তখন আদর করে কমল নামে ডাকতেন। তার ছেলেবেলা কেটেছে কলকাতায়। তার বাবা মনসুর রহমান তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চপর্যায়ের একজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ছিলেন। কলকাতার হেয়ার স্কুলে জিয়াউর রহমান সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় পরিবারের সাথে শিশু জিয়া করাচি চলে যান। সেখানে কেটেছে তার স্কুল ও কলেজ-জীবন। করাচির স্কুল-কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি একজন ভালো হকি খেলোয়াড় ছিলেন। স্কুলে তিনি ইংরেজিতে ভালো বক্তব্য দিতে পারতেন। কৈশোরে নির্মেদ দেহের অধিকারী এক আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। করাচির ডি জে কলেজে পড়ার সময় ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান সামরিক অ্যাকাডেমিতে একজন অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন জিয়াউর রহমান। ১৯৫৫ সালে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে তিনি কমান্ডো ট্রেনিং লাভ করেন। ১৯৬৭ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকার অদূরে জয়দেবপুর সাব-ক্যান্টনমেন্টে ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বিতীয় ব্যাচে লিয়নে সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে যোগদান করেন তিনি। একই বছর উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য তিনি পশ্চিম জার্মানি যান। ১৯৭০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাকে চট্টগ্রামে বদলি করা হয়। তার ঘাঁটি ছিল ষোলশহর বাজারে। সেখান থেকেই তিনি দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com