মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতিসঙ্ঘের ঘোষিত অবস্থানের একটুও পরিবর্তন আসেনি বলে জানিয়েছেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। গত সোমবার এক প্রশ্নের জবাবে স্টিফেন ডুজারিক এই কথা বলেন। একইসাথে নির্বাচনের পর জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার যা বলেছেন সেটিও অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানান তিনি।
মূলত, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাতিসঙ্ঘ প্রথমে ঘোষণা দেয়, ‘সহিংসতা এবং বিরোধী প্রার্থী ও সমর্থকদের দমন-পীড়নের ফলে ৭ জানুয়ারির ভোটের পরিবেশ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভোটকে ঘিরে যা ঘটেছে তার তদন্ত দাবি করে সংঘটনটি। এরপরেই গত সপ্তাহে পুনর্র্নিবাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি লিখেন জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যন্তনি গুতেরেজ। প্রশ্ন উঠে তাহলে কি নির্বাচন নিয়ে জাতিসঙ্ঘ তার আগের বক্তব্য এবং অবস্থান থেকে সরে গেল? উত্তরে স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘না। তিনি (জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব) প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন, যেমনটা বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধানরা পুনর্র্নিবাচিত হলে মহাসচিব (চিঠি) পাঠিয়ে থাকেন।’
তিনি আরো বলেন, এই ম থেকে আমরা অতীতে যা বলেছি এবং মানবাধিকার হাইকমিশনার যা বলেছেন, তা অপরিবর্তিত রয়েছে। একই সময়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন নিয়ে জানতে চাওয়া হলে ডুজারিক বলেন, শরণার্থীদের আমাদের সংহতি প্রয়োজন এবং আশ্রয়দানকারী সম্প্রদায়গুলোরও আমাদের সংহতি প্রয়োজন এবং এসব কিছুর জন্যই আমাদের তহবিল আরো বৃদ্ধি করা দরকার।
উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এ ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। পরাশক্তিসমূহ স্পটত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। নির্বাচনের পরপরই ভারত, রাশিয়া, চীন, পাকিস্তানসহ বেশকিছু দেশ টানা চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে এবং নির্বাচন নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচনের সমালোচনা করেছে এবং এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নির্বাচন-পরবর্তী বিবৃতিতে তিনটি বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। ৬টি আন্তর্জাতিক সংগঠন, এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (এএনএফআরইএল), ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন (সিআইভিআইসিইউএস), ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এফআইডিএইচ), এশিয়ান ডেমোক্রেসি নেটওয়ার্ক (এডিএন), ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রোজেক্ট (অস্ট্রেলিয়া) ও অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক (এডিপিএএন) এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করছে।