সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
সদরপুরে বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন সোনালী আঁশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হাজী দিদার পাশার পক্ষে আলোচনা সভা পঞ্চগড়ের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশুতোষ বর্মণের বদলীর দাবীতে মানববন্ধন নগরকান্দায় ভূত আতংকে অসুস্থ হয়েছে শিক্ষার্থীরা ডিমলায় ১০০ পরিবারের মাঝে ঢেউটিন ও অর্থ বিতরণ ভয় পাবার কোন কারণ নাই, আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন টুঙ্গিপাড়া জাতির পিতার সমাধিতে যুব লীগের চেয়ারম্যানের শ্রদ্ধা নিবেদন টিয়া পাখির মতো আপনাদের কাছে প্রিয় হয়ে থাকতে চাই-সাংবাদিক বাবু পলাশবাড়ী উপজেলা দলিল লেখক সমিতির ত্রি বার্ষিক নির্বাচন কুয়াকাটায় মধ্যরাত থেকে শুরু মাছ ধরার উপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা

স্বদেশে ফিরতে একজোট রোহিঙ্গারা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

নিজ দেশ মিয়ানমারে যেতে একজোট হয়ে সমাবেশ করেছে কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা। এবার রোহিঙ্গাদের নেতৃত্বে এগিয়ে এসেছে যুবকরা। সমাবেশ থেকে জাতিসঙ্ঘের সংস্থাসমূহকে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে রোহিঙ্গাদের সাথে আলাপ করে দ্রুত স্বদেশ ফেরত পাঠানোর দাবি জানানো হয়। না হলে একযোগে মিয়ানমারে ফিরে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। একই সাথে রাখাইনে চলমান সঙ্ঘাতে সেখানে থাকা রোহিঙ্গাদের ধৈর্য আহ্বান এবং কোনোভাবেই স্বদেশ ছেড়ে পালিয়ে না আসার অনুরোধ জানানো হয়। গত শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে জড়ো হয় রোহিঙ্গারা। সেখানে কনভেনশনের আয়োজন করা হয়। তখন সবার গায়ে সাদা শার্ট ও লুঙ্গি ছিল। আয়োজকদের মধ্যে এক রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিন শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে প্রতিবেদককে জানান, উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্প থেকে আসা রোহিঙ্গাদের হেড মাঝি, সাব-মাঝি, ধর্মীয় নেতা ও নারীরা এ সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। সেখানে একযোগে রোহিঙ্গারা ‘অনেক হয়েছে আর নয়, এবার স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরতে চায়’ বলে স্লোগান দেয়া শুরু করে।
ক্যাম্প ১৩-এর বাসিন্দা ছলিম উল্লাহ বলেন, ‘আমাদের দেশ আছে। মিয়ানমারের আরকান আমাদের দেশ। আমরা দেশে ফিরে যেতে চাই।’
ক্যাম্প ২৬-এর বাসিন্দা মোহাম্মদ হাবিব বলেন, ‘এক বছর-দুই বছর করে সাত বছর পার করছি পরদেশে। এখানে আর থাকতে চাই না, নিজেদের অধিকার নিয়ে স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই।’
রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরওএফডিএমএনআরসির সংগঠক ছৈয়দ উল্লাহ বলেন, ‘মিয়ানমারের আরাকানে আমাদের যারা আত্মীয়-স্বজন, মা-বাবা ও ভাই-বোন আছে। তাদের ওপর অনেক নির্যাতন হচ্ছে। তাদের প্রতি আহ্বান থাকবে, তারা যেন কোনোদিনও দেশ ছেড়ে চলে না আসে।’ সমাবেশ থেকে জাতিসঙ্ঘের সংস্থাসমূহকে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে রোহিঙ্গাদের সাথে আলাপ করে উদ্যোগ গ্রহণ না করলে একযোগে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। আরওএফডিএমএনআরসির প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ‘সমাবেশে মা-বাবা, ভাই-বোন যারা এসেছেন, তাদের অধিকার যদি যুবকরা কাঁধে নেয় তাহলে এক বছরের মধ্যে ইনশাআল্লাহ আমাদের দেশে আমরা ফিরে যেতে পারব।’ সমাবেশ শেষে মোনাজাতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় রোহিঙ্গারা। রাখাইনে চলমান সঙ্ঘাতের কারণে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য ওপারে সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে মিয়ানমারের অনেক রোহিঙ্গা। তবে তাদের এদেশে ঢোকার ব্যাপারে বিরোধিতা করছে উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গারা।
তারা বলছে, ‘নিজ দেশ ছেড়ে এবার ভুল করা যাবে না।’
ক্যাম্পে আয়োজিত কনভেনশনে রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, আরাকান আর্মি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করলে এখনই তারা ফিরে যাবেন মিয়ানমারে।
দেশটির অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনীর সাথে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির তুমুল সংঘর্ষ চলছে। ফলে বুচিডংসহ রাখাইনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে।
সালামত উল্লাহ, শফি উল্লাহসহ কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, রাখাইনে দু’পক্ষের হামলায় রোহিঙ্গারা প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছে। তাই তারা বাংলাদেশে চলে আসার জন্য নিয়মিত যোগাযোগ করছে এখানকার রোহিঙ্গাদের সাথে।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ভয়াবহ সঙ্ঘাতে আতঙ্কিত উখিয়া ও টেকনাফের স্থানীয় জনসাধারণ। তাদের দাবি, মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জান্তা সরকারের তুমুল সংঘর্ষের কারণে রাখাইনে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে পারে। এতে করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাধাগ্রস্ত হবে।
উখিয়া উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়ন পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, রাখাইনে চলমান সঙ্ঘাতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ থমকে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো: মিজানুর রহমান বলেন, মিয়ানমারের সাথে আলোচনা অনেক এগিয়ে গিয়েছিল। তার ছন্দপতন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘সঙ্ঘাত হয়তো দীর্ঘমেয়াদি হবে না। আশা করি, পরে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের একটি আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর জন্য প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে, যেন কোনোভাবেই নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ না হয়।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com