মাদারীপুরের কালকিনিতে গভীর রাতে নেদারল্যান্ড প্রবাসী লেখিকা ও শিক্ষাবিদ বদরুজা নাসরিন এর বসত ঘরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে প্রায় চার লক্ষাধীক টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি। গত বুধবার (৩১ জানুয়ারী) গভীররাতে এ অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে। ভূক্তভোগী পরিবার ও এলাকা সুত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকার লক্ষ্মীপুর পখিরা গ্রামের বদরুজা নাসরিন তার গ্রামের বাড়ীতে একটি বসত ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে কেবা-কাহারা তার ঘরে অগ্নি সংযোগ করে পালিয়ে যায়। পরে মুহুর্তের মধ্যে পুরো ঘরে আগুন ছড়িয়ে পরে। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে স্থানীয় এলাকাবাসী প্রায় দুই ঘন্টা ব্যাপী প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। কিন্তু তাৎক্ষনিক ওই ঘর ও ঘরের সমন্ত মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে করে প্রায় চার লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে। খবর পেয়ে সকালে কালকিনি থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভূক্তভোগী মুসলীমা জামান জানান, সম্প্রতি আমার ননদ নেদারল্যান্ড প্রবাসী লেখিকা ও শিক্ষাবিদ উৎং. বদরুজা নাসরিন এর বসত ঘরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। এই ঘর পোড়ানোর পরের দিন মাইটিভি-তে ভয়ানক সেই আগুন সন্ত্রাসের সংবাদ প্রচারিত হয়। এ বিষয়ে গত ৩১ জানুয়ারী কালকিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দেয়া হয়েছে। প্রবাসী লেখিকা ও শিক্ষাবিদ উৎং. বদরুজা নাসরিন মুঠোফোনে এই বলেন, এই আগুন সন্ত্রাসের ঠিক দেড় বছর আগে, আমার প্রয়াত একমাত্র ভাইয়ের মিলাদ মাহফিল উপলক্ষ্যে আমি দেশে এলে-২০২২ইং সালের ১৭ই আগষ্ট, রাত ১২.১২ মিনিটে আমার বাড়িতে বোমা হামলা হয়। এতে কালকিনি থানায় মামলা হয়। মামলা নং ১৪/২০২২ইং, সি আই ডি’র তদন্তাধীন আছে। আমার মনে হয় বিস্ফোরক মামলার সাথে জড়িত ব্যক্তিরাই এই কাজ করতে পারে। তিনি আরও বলেন, বিগত ত্রিশ বছর আগে এই এলাকার জনগণ অত্যন্ত দরিদ্র ছিলো। এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য ওই লক্ষ্মীপুর পখীরা এবং কালীগঞ্জ এলাকার দরিদ্র জনগনের পাশে থাকে, তাদের শিক্ষা-স্বাস্থ্য ও জীবনমানের উন্নয়নের জন্য আমার নিজের জীবন উৎসর্গ করেছি এবং আমার মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত ‘বেগম রহিমা খাতুন দাতব্য চিকিৎসালয়’ থেকে তারা বিনামূল্যে সেবা পেয়েছে। নামী দামী কোম্পানীর ঔষুধ পেয়েছেন। আমার মরহুম পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত ‘সরদার মো: বদিউজজ্জামান ফাউন্ডেশন’ থেকে সব ধরনের সামাজিক কর্মে সাহায্য সহযোগিতা পেয়ে এসেছে এই এলাকার জনগণ। কিন্তু কতিপয় দূর্বৃত্তের সীমাহীন অত্যাচারের কারণে ফাউন্ডেশনের কার্যকলাপ চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। ভুক্তভোগী মুসলিমা জামান বলেন যে গত সপ্তাহে নিরু সরদার রাস্তায় আমার বাড়িতে মেইন গেটের সামনে এসে আমাকে হুমকি প্রদান করেন যে, আগামী এক মাসের মধ্যে আপনি যদি আপনার এই বসত ঘর ভেঙে নিয়ে না যান তাহলে আমি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিব। তখন আক্তার সরদার বলে, কাকা আপনি যদি আগুন দিতে না পারেন তাহলে আমি নিজেই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিব। ঠিক তার এক সপ্তাহের মাথায় আমার বসত ঘরে আগুন লাগে এবং পুরো ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। প্রবাসী লেখিকা ও শিক্ষাবিদ উৎং. বদরুজা এই সম্পর্কে আরো বলেন, এলাকার কিছু ভুমিদস্যূরা বহু বছর আগে থেকেই আমাদের ক্রয়ক্রিত সম্পত্তি এক হাত, দুই হাত করে দখল করে নিচ্ছে। আমাদের যে বসত বাড়িটা পোড়নো হয়েছে, তার আশে আশে যারা বসবাস করে, তারা এমন ভাবে আমাদের ক্রয়ক্রিত জমিটা দখল করেছে যে, শুধু মাত্র ওই বসত ঘরটাই অবশিষ্ট ছিলো। ঘরটা পুড়িয়ে, ভূমিদস্যূরা পুরা জমিটাই হাতিয়ে নিতে চাচ্ছে। এ ব্যাপারে কালকিনি থানার ওসি সরকার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পুলিশ পরিদর্শন করেছে। ভূক্তভোগী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন । তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।